করোনা দিনে মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে পুষ্টিকর খাবার

খাবার জীবাণুমুক্ত করতে ইউনিসেফ এর পরামর্শ
খাবার জীবাণুমুক্ত করতে ইউনিসেফ এর পরামর্শ

করোনাভাইরাস এর সংক্রমণের কারণে দীর্ঘ বিচ্ছিন্নতা মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, মহামারি মোকাবেলায় অনেকে হয়তো নিজেকে গৃহবন্দী রাখছেন, সামাজিক যোগাযোগ এড়িয়ে চলছেন। তবে যারা নিয়মিত কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকেন, কিংবা ঘন ঘন ভ্রমণ করেন তাদের জন্য লকডাউনটা খুব কঠিন সময়। বিশেষ করে শিশু এবং বয়স্কদের এক জায়গায় থাকতে থাকতে মানসিকভাবে অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে।
এনডিটিভি অনলাইনে ভারতীয় পুষ্টিবিদ নাম্মি আগরওয়াল এই পরিস্থিতিতে মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে পুষ্টিকর খাবারের কোন বিকল্প নেই বলে জানিয়েছেন।
ক্ষুব্ধ বা বিরক্তিবোধ থেকে পরিত্রাণ
যদি কেউ নিয়ম মাফিক খাবার গ্রহণ না করে, একই সাথে ক্ষুধার্ত এবং ক্ষুব্ধ বা বিরক্তিকর বোধ করে। তাহলে বুঝতে হবে সেই ব্যক্তির রক্তে শর্করার মাত্রা হ্রাস পেয়েছে। এ কারণে লকডাউনে বাসায় থেকে হঠাৎ হঠাৎ বিরক্তি অনুভূতি সৃষ্টি হচ্ছে এবং সে নিজেও বুঝতে পারছে না সে ক্ষুধার্ত। এই সময়ে রুটিন করে নিয়মিত বিরতিতে স্বাস্থ্যকর এবং পুষ্টিকর খাবার বেছে নিতে হবে।
মেজাজ ঠিক রাখতে
এই সময়ে হতাশা দূর করে মেজাজ ঠিক রাখতে ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড অনেক কার্যকরী। এমনকি মানুষের মস্তিষ্কের জৈবিক কার্যাবলি নিয়ন্ত্রণ করা এবং উদ্দীপনায় সাড়া দেওয়ার কাজে ওমেগা ৩ সু-কার্যকরী। এই ফ্যাটি অ্যাসিডগুলি সহজেই ফ্যাটি ফিশ (সালমন, টুনা এবং ম্যাকরেল), আখরোট, ফ্লাক্সিড এবং কুমড়োর বীজের মতো খাবার উৎসগুলিতে সহজেই পাওয়া যায়।
হ্যাপি হরমোন
অনেক সময় দেখা যায় হরমোনাল ব্যালেন্স ঠিক না রাখতে পারলে মন খারাপ হতে থাকে। পুষ্টিবিদরা বলছেন, সেরোটোনিন হলো একটি সুখী নিউরোট্রান্সমিটার যা কোন ব্যক্তির মস্তিস্কে লুকিয়ে থাকে। যা কারও মনের সুখ, সন্তুষ্টি এবং আশাবাদের মধ্যে মধ্যস্থতা করে। প্রকৃতপক্ষে, এটি কয়েকটি অ্যান্টি-ডিপ্রেশন ড্রাগেরও একটি অংশ। সেরোটোনিনের মাত্রা বাড়ায় এমন খাবার খেতে পারলে এই সময়টায় মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়। দই, বাদাম, কলা এবং ডিমের মধ্যে এই পুষ্টি উপাদান থাকে।
পেট ভালো রাখা জরুরি
এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ৯০ শতাংশ মানসিক স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলে পেটে ব্যাকটেরিয়া বসবাসের কারণে। সুতরাং, আপনার অন্ত্র বা পেট ভালো রাখার সাথে সাথে আপনার স্বাস্থ্য ভালো হবে। অন্ত্রে সেরোটোনিনের ফলে মানুষের মেজাজের ব্যাধি বা কিছু অন্যান্য গুরুতর অসুস্থতায় ডেকে আনতে পারে।
কোষ্ঠকাঠিন্য, ফুলে যাওয়া, অ্যাসিডিটি বা ডায়রিয়া থেকে পেট পরিষ্কার রাখার মাধ্যমে মনও অনেক সতেজ থাকবে। তাই ডায়েটে প্রচুর পরিমাণে ভাল ফাইবার ফল এবং শাকসবজি অন্তর্ভুক্ত করুন। দই, চিড়া, কলা এবং তরল খাবার সাথে রাখতে পারেন।
দৈনন্দিন খাবারকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা
এই সময় যেহেতু পরিবারের সবই এক সাথে অনেক সময় কাটানো হচ্ছে। তাই পুষ্টিকর খাবার নির্বাচন করে প্রিয়জনের সাথে খাবার ভাগ করে নেওয়া যেতে পারে।প্রতিদিনের খাবার কয়েকটি ভাগে ভাগ করে নিয়ে হরমোনাল ব্যালেন্স যাতে ঠিক থাকে এবং চাকরি হারানোর ভয়, অনিশ্চিত লেখাপড়ার চিন্তা, অর্থনীতির ধাক্কা এই ধরণের উদ্বেগ এবং ভয় থেকে কাটিয়ে উঠতে সঠিক খাবার বাছাই এবং খাওয়ার কোন বিকল্প নেই।
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে চিকিৎসকের সরাসরি পরামর্শ পেতে দেখুন: মনের খবর ব্লগ
করোনায় মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক টেলিসেবা পেতে দেখুন: সার্বক্ষণিক যোগাযোগ
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
করোনায় সচেতনতা বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও বার্তা দেখুন: সুস্থ থাকুন সর্তক থাকুন

Previous articleআইসোলেশন এবং নানাবিধ মানসিক সমস্যা
Next articleকোভিড-১৯ মহামারী এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে দুশ্চিন্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here