রেমডিসিভির করোনা মহামারীর সমাধান নয়

রেমডিসিভির করোনা মহামারীর সমাধান নয়
রেমডিসিভির করোনা মহামারীর সমাধান নয়

রেমডিসিভির মেডিসিনটি নিয়ে অনেক আলোচনা হচ্ছে আজকাল। আনেক পেপার, টিভি চ্যানেল এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই মেডিসিনটি নিয়ে আনেক প্রতিবেদন প্রচার করছে।

রেমডিসিভির কিন্তু করোনা রোগের কোন প্রমাণিত মেডিসিন নয়। এটি একটি ট্রায়াল ড্রাগ। এর অর্থ হলো এখনো এর কার্যকারিতা এবং পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নিয়ে পরীক্ষা চলছে। পৃথিবীর অনেক দেশে এই মেডিসিনটিকে পরীক্ষামূলক ভাবে ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে। ।US-FDA হাসপাতালে ভর্তি কোভিড রোগীদের এই মেডিসিন ব্যবহারের জন্য স্বীকৃতি দিয়েছে।
আমেরিকার National Institute of Allergy and Infectious Diseases(NIAID) বলেছে যে কোভিডে আক্রান্ত নিউমোনিয়ার ১০৬৩ জন রোগীর মধ্যে রেমডিসিভির মেডিসিন পাওয়া রোগীরা তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়েছে। দেখা গেছে যাদের এই ঔষধ দিয়ে চিকিৎসা করা হয়েছে তারা ১১ তম দিনে আর যাদের ঔষধ দেওয়া হয়নি তারা ১৫ তম দিনে হাসপাতাল থেকে ছুটি পেয়েছে। যেহেতু এই মেডিসিনটিতে তাড়াতাড়ি সুস্থ হচ্ছে তাই আমেরিকার গবেষকরা বলেছেন এটি ভাইরাসের বিরুদ্ধে কার্যকরী।

রেমডিসিভির এর মানব দেহের বাইরে SARS-COV2 এর বিরুদ্ধে এর কার্যকারিতা প্রমানিত। কিন্তু মানব দেহের ভিতরে এর কার্যকারিতা এখনো পরীক্ষা চলছে। আমরা আশা করছি পরীক্ষায় ভালো ফল আসুক। কিন্তু রেমডিসিভির এর উপর ভরসা করে আমরা করোনা যুদ্ধে জয়ী হতে চাইলে মারাত্মক ভুল হবে। এই মেডিসিনগুলো রোগীকে তাড়াতাড়ি ভালো করবে, কিছু পরিমাণ মৃত্যুও কমাবে, কিন্ত রোগীদের জটিলতা যেমন ARDS প্রতিরোধে এই ধরনের এন্টি ভাইরাল মেডিসিনের কোন ভূমিকা নেই।

ARDS ছাড়াও Respiratory failure, sepsis এবং রক্ত জমাট বেধেও আনেক করোনা রোগীর মৃত্যু হয়ে থাকে। এই মৃত্যু কারণগুলো প্রতিরোধে রেমডিসিভির সহ অন্যান্য এন্টি ভাইরাল মেডিসিনের ভূমিকা সব সময়ই স্বল্প। অপরদিকে যাদের পূর্ব থেকেই লিভার, কিডনি জটিলতা আছে তারা কিন্তু এই ধরনের মেডিসিনগুলো ব্যাবহার করতে পারবে না। আর এই সব লিভার, কিডনি ফেইলর রোগীদেরই কিন্ত মৃত্যুঝুঁকি অনেক বেশি।
তাই এই মহামারীর লাগাম টেনে ধরতে এইসব দামী এন্ট্রি ভাইরাল মেডিসিনের কর্তৃত্ব খুবই অপ্রতুল। আমাদের একটি বিষয় খুব ভালো করে বুঝতে হবে তা হলো মহামারী নিয়ন্ত্রণ করতে রোগীর সংখ্যা কমানোর কোন বিকল্প নেই।কোন মেডিসিনই আমদের করোনা রোগীর সংখ্যা কমিয়ে দিবে না। আমাদের বারবারই প্রিভেনশন এর দিকেই যেতে হবে।

আমাদের দেশে করোনা রোগীর সংখ্যা Exponentially বাড়ছে। যা কিনা মহামারীর সর্বোচ্চ পর্যায়। এই পর্যায়ে একদিকে রোগীর সংখ্যা বাড়ে, অপরদিকে রোগীর থেকে সংক্রমণও বাড়ে। তাই বারবারই সবাই কে বলতে হবে ঘরে থাকতে, মাস্ক ব্যাবহার করতে। বারবারই বলতে হবে গণজমায়েত না করতে। বারবারই বলতে হবে দোকান, শপিং মলে না যেতে। জনসাধারণ যতোই অধৈর্য হোক না কেন তাদের বোঝাতে হবে। তাদের এই পরিস্থিতির গুরুত্ব অনুধাবন করাতে হবে। সংক্রমণ বন্ধ করতে সমাজের সবারই এগিয়ে আসতে হবে।

আমরা যদি ভেবে থাকি কোন একটি মেডিসিন আবিষ্কারের এই মহামারির থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে সেটা অবশ্যই ভুল ভাবনা। এখনো সময় আছে সচেতন হওয়ার, এখনো সময় আছে পরিবারের সবাইকে নিয়ে ভালো থাকার। আর তা না হলে করোনা মহামারী দিন দিন আরো ভয়াবহ রুপ নিবে এটা নিশ্চিত।

মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে চিকিৎসকের সরাসরি পরামর্শ পেতে দেখুন: মনের খবর ব্লগ
করোনায় মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক টেলিসেবা পেতে দেখুন: সার্বক্ষণিক যোগাযোগ
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
করোনায় সচেতনতা বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও বার্তা দেখুন: সুস্থ থাকুন সর্তক থাকুন

Previous articleহৃদরোগীদের ক্ষেত্রে করোনাভাইরাস কতটা ঝুঁকির?
Next articleকরোনায় যুক্তরাষ্ট্রে বেড়েছে মানসিক রোগের ওষুধ বিক্রি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here