‘লকডাউন’য়ের এই সময়ে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ধরে রাখতে খাবার জীবাণুমুক্ত রাখার বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছে ইউনিসেফ।
স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস নিয়ে আলোচনা মোটেই কম হয় না। বিশেষজ্ঞরা বলেন, ‘খাবারই হোক ওষুধ আর ওষুধ হোক খাবার।’ আর বর্তমান সময়ে ‘কোভিড-১৯’য়ের ভয়াবহতা সবাই যখন গৃহবন্দি, তখন খাবারই আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে জোরদার করার অন্যতম প্রধান উপায়।
‘লকডাউন’য়ের এই সময়ে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ধরে রাখতে কিছু মূল্যবান পরামর্শ দিয়েছে ইউনিসেফ, মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হল জীবাণুমুক্ত খাবার গ্রহণ এবং প্যাকেটজাত খাবার জীবাণুমুক্ত রাখতে করণীয়।
খাবার কেনা: খাবার কিংবা তার মোড়ক থেকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ হতে পারে এমন কোনো প্রমাণ এখন পর্যন্ত নেই। তার মানে এই নয় যে তা সম্ভব নয়। বিভিন্ন জড়বস্তুর ওপর করোনাভাইরাসের সক্রিয় থাকার সময়কাল সম্পর্কে আমরা জানতে পেরেছি, যা স্পর্শ করলে সংক্রমিত হওয়া সম্ভব।
নিজে বাজার করুন আর হোম ডেলিভারি নিন, বাজারের ব্যাগ, খাবারের মোড়ক কিংবা কাঁচা তরকারির ওপরেও করোনাভাইরাস পড়ে থাকতে পারে এবং সেগুলো স্পর্শ করার মাধ্যমে ও হাত পরিষ্কার করা না হলে আক্রান্ত হতে পারেন প্রাণঘাতি ‘কোভিড-১৯’য়ে।
আবার বাজার করতে গিয়ে দোকানি ও অন্যান্য ক্রেতাদের কাছ থেকে নিরাপদ দূরত্ব রাখা অনেকটাই অসম্ভব, বিশেষ করে আমাদের দেশে। অর্থাৎ বাজারের দোকানি, অন্যান্য ক্রেতা, এমনকি বাসায় ‘ডেলিভারি’ দিতে আসা মানুষটিও আপনার সংক্রমণের কারণ হতেই পারে।
এই সকল ক্ষেত্রে নিরাপদ থাকার একমাত্র উপায় হলো সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা রক্ষা করা। বাইরে থেকে আসা যেকোনো জিনিস স্পর্শ করার পরই হাত পরিষ্কার করতে হবে সাবান পানি দিয়ে।
পণ্য জীবাণুমুক্ত করতে: প্রথমেই খাবারের মোড়ক যার পরিবর্তিতে কোনো প্রয়োজন নেই তা ময়লার ঝুঁড়িতে ফেলে দিতে হবে। ঢাকনাওয়ালা ময়লার ঝুঁড়ি ব্যবহার করতে হবে। খাবারের কৌটা খোলার আগেই তার বাইরের অংশে জীবাণুনাশক প্রয়োগ করে মুছে নিতে হবে। কাঁচা তরকারি ধুতে হবে বহমান পানিতে, পাত্রে জমানো পানিতে নয়। সম্ভব হলে সেখানেও সাবান ব্যবহার করতে পারেন। ধোয়া হয়ে গেলে তৎক্ষণাত সাবান দিয়ে হাতের কনুই পর্যন্ত ধুয়ে নিতে হবে এবং বাড়তি সাবধানতার জন্য হাত মুছে নিয়ে ‘হ্যান্ড রাব’ কিংবা ‘স্যানিটাইজার’ ব্যবহার করতে হবে।
খাবার জীবাণুমুক্ত বিষয়ক অন্যান্য সতর্কতা
– রান্না ও খাবার পরিবেশনের আগে সবসময় সাবান দিয়ে ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধুতে হবে।
– মাছ, মাংস কাটার জন্য আলাদা ‘চপিং বোর্ড’ ব্যবহার করতে হবে।
– নষ্ট হয়ে যায় এমন খাবার ফ্রিজে কিংবা হিমায়িত করে রাখতে হবে যতটা সম্ভব। মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ ও সময়ের দিকে নজর রাখতে হবে।
– ময়লা জমানো যাবে না। প্রতিদিনের বর্জ্য সেদিনই যথাস্থানে ফেলতে হবে। ময়লা ফেলাতেও পরিচ্ছন্নতা প্রয়োজন। একটি ব্যাগে সকল বর্জ্য বেঁধে ফেলা উচিত। ময়লার ব্যাগে কোনো ধারালো বস্তু ফেলবেন না, আলাদা ব্যাগে ফেলতে হবে।
– প্রতিবার খাবার পরিবেশন ও খাওয়ার আগে থালা-বাসন, চামচ পরিষ্কার করে নিতে হবে। সেই সঙ্গে নিজেও হাত নুন্যতম ২০ সেকেন্ড সাবান দিয়ে ধুতে হবে। নিজে করার পাশাপাশি পরিবারের ছোটদের একই অভ্যাস করানো আবশ্যক।
মনে রাখবেন খাবার জীবাণুমুক্ত এই সময়ে সুস্থতার অন্যতম শর্ত। খাবার জীবাণুমুক্ত না হলে করোনায় আক্রান্তের সম্ভবনা কিছুটা হলে বেড়ে যায়।
মানিসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে চিকিৎসকের সরাসরি পরামর্শ পেতে দেখুন: মনের খবর ব্লগ
করোনায় মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক টেলিসেবা পেতে দেখুন: সার্বক্ষণিক যোগাযোগ
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
করোনায় সচেতনতা বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও বার্তা দেখুন: সুস্থ থাকন সর্তক থাকুন