পৃথিবীতে চলছে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব। মারা যাচ্ছে প্রতিনিয়ত হাজার হাজার মানুষ। মৃত্যুর মিছিল যেন থামছেই না। বিভিন্ন দেশে চলছে লকডাউন, কারফিউ সহ নানা ব্যবস্থা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান ড.টেডস অ্যাডহানম গেব্রেইয়েসুস জানিয়েছেন, করনোর থাবায় সবচেয়ে খারাপ পরস্থিতি আসা এখনো বাকি। পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে জানিয়েছেন তিনি। যখন বেশ কিছু দেশে ইতিমধ্যে লকডাউন ও বিভিন্ন বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা শিথিল হতে শুরু করেছে। ঠিক তখনই সাবধান করলেন তিনি।
টেডরোস ১৯১৮-র স্প্যানিশ ফ্লু এর প্রসঙ্গ টেনে এনে বলেছেন করোনা ভাইরাস এর চেয়েও সাংঘাতিক। তিনি জেনিভার সংবাদ মাধ্যমেকে বলেছেন, করনো ভাইরাস খুবই সাংঘাতিক। ১৯১৮-র ফ্লুতে ১০ কোটি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। তিনি আরও বলেছেন, এখন আমাদের প্রযুক্তি উন্নত। আমরা এই বিপর্যয়কে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারি। আমাদের সেই ক্ষমতা এখন আছে। কিন্তু এখনো পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। তিনি সাবধান করে বলেছেন, আমাদের আরও ভয়াবহ পরিস্থিতি দেখা বাকি আছে। তাই এটা আমাদের আটকাতে হবে। এখনও অনেকে বুঝতে পারছেন না কতটা সাংঘাতিক এই ভাইরাস।
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবেলায় দেশে দেশে সামাজিক দূরত্বের নিয়ম কানুন মেনে চলার উপর জোর দেয়ায়,কোন কোন দেশের কতৃপক্ষ এ বিষয়ে বিধিনিষেধ শিথিল করার পরিকল্পনা করছে। কিন্ত যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয়ের একদা গবেষক বলেছেন, সামাজিক এই দূরত্ব আরও দুই বছর মেনে চলতে হবে। তারা সর্তক করে বলেছেন, করোনার সংক্রমনের হুমকি ২০২৪ সাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।
হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয়ের টি এইচ চ্যান স্কুল অব পাবলিক হেলথের পাঁচ গবেষক গবেষণাটি করেছেন। বিজ্ঞান বিষয়ক সাময়িকী সায়েন্সে এ গত মঙ্গলবার গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে। সংক্রমনের যেসব তথ্য যুক্তরাষ্ট্রের কাছে রয়েছে, সেগুলোর উপর ভিত্তি করে নতুন এক মডেল দাড় করিয়েছেন বিজ্ঞানিরা। ঋতুচক্রের পরিবর্তন ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ভিন্নতার পরিপ্রেক্ষিতে বিজ্ঞানীরা৷ নতুন করোনাভাইরাস সংক্রমনের গতি প্রকৃতি ধারনা করার চেষ্টা করছেন। এতে তারা দেখছেন বছরের কোন এক সময়ই করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়াতে পারে।
নতুন এই গবেষণায় বিজ্ঞানিরা সর্তক করে বলেছেন, ২০২৪ সালের শেষ দিকে আবার মহামারী আকারে ছড়াতে পারে করোনার সংক্রমন। আর বর্তমান বৈশ্বিক মহামারী পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ আনতে ২০২২ সাল পর্যন্ত সামাজিক দূরত্বের নিয়ম কানুন মেনে চলতে হবে কি না। তবে তারা বলেছেন, নতুন করোনাভাইরাস প্রতিষেধক বা চিকিৎসা পদ্ধতি উদ্ভাবনের আগ পর্যন্ত সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে হবে।
গবেষণা নিবন্ধে আরও বলা হয়েছে, নতুন করোনাভাইরাসের সংক্রমনের পরিপ্রক্ষিতে মানুষের মধ্যে যদি স্থায়ীভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে উঠে। তাহলেও এটি বিলুপ্ত হতে সময় লাগবে পাঁচ বছর বা তার কিছু বেশি দিন। আর এ সবকিছুই শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উপর চাপ বাড়াবে। যার পরিনতি হয়তো হবে ভয়াবহ। সুতরাং বোঝা যাচ্ছে মহামারীর এই ভয়াবহ থাবা থেকে বাঁচতে হলে দেশ,জাতি, বিশ্বকে একসাথে সচেতন হয়ে মোকাবিলা করতে হবে।
সংকলন: সৈয়দা মুমতাহিনাহ্ সোনিয়া
Home করোনায় মনের সুরক্ষা বিশ্ব পরিস্থিতি লকডাউন তুলে নিলে সংক্রমণ আবার ভয়াবহ রূপ নিতে পারে: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা