স্বামীর সঙ্গে সম্পর্কের ভিতটা ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে আসছে? মনে হচ্ছে কিছুতেই আর আগের মতো টানটা উপলব্ধি করতে পারছেন না? দীর্ঘ সম্পর্কে থাকতে থাকতে এমন মনে হওয়াটা মোটেই অস্বাভাবিক নয়। কাজের চাপ, অফিস যাতায়াতের ক্লান্তি, প্রত্যাশা পূরণ না হওয়ার মতো নানা কারণে সম্পর্কে খিঁচ দেখা দিতে পারে। তবে এ সব বাধাই কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। আপনারা দু’জনেই যে কাজটা করতে ভালোবাসেন, সেটা একসঙ্গে করতে শুরু করুন। দেখবেন মাঝে তৈরি হওয়া দূরত্বটা ধীরে ধীরে মুছে যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞেরা বলেন, আর্ট বা শিল্পের মধ্যে একটা আশ্চর্য থেরাপিউটিক ক্ষমতা রয়েছে। রং-তুলি দিয়ে ইচ্ছেমতো টান, খাতার পাতায় ড্রয়িং করার মতো কাজগুলো করলে একদিকে যেমন মনের উপর থেকে চাপ কাটবে, তেমনি দু’জনে পরস্পরের কাছাকাছি আসতে পারবেন। দেখে নিন কীভাবে আর্ট থেরাপি আপনাদের সম্পর্ক আরও মজবুত আর ভালোবাসায় পরিপূর্ণ করে তুলতে পারে।
আর্ট থেরাপি জিনিসটা কী?
জানি, এ প্রশ্নটাই আপনাদের মাথায় ঘুরছে। পেশাদার আর্ট থেরাপিস্টের উপস্থিতিতে আর্ট থেরাপি করালে তা আপনাদের সম্পর্কে নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে, এমনকী ব্যক্তিগত আশাআকাঙ্ক্ষা পূরণ করতেও সাহায্য করতে পারে। তবে সবসময় থেরাপিস্টের সাহায্য নিতেই হবে, তা নয়। নিজেদের মতো করেও আর্ট থেরাপি করতে পারেন আপনারা, তাতেই বাঁচবে সম্পর্কের বাঁধন।
কীভাবে কাজ করে আর্ট থেরাপি?
এর উত্তর নির্ভর করছে আপনি কী ধরনের আর্ট থেরাপি করাচ্ছেন, তার উপর। যেমন ধরুন, ডেভিড জ়িমারমান নামে এক মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে এক দম্পতি আর্ট থেরাপি করিয়েছিলেন। সেই ওয়ার্কশপে একজন অপরজনকে বলে দিচ্ছিলেন কী আঁকতে হবে। শুনতে সহজ মনে হলেও আসলে ব্যাপারটা ততটা সহজ নয়। কারণ আপনাকে নির্দিষ্ট করে বলে দিতে হবে আপনি স্বামীর কাছ থেকে ঠিক কী আঁকা চাইছেন। স্বামীর সঙ্গে আপনি কীভাবে কথা বলছেন সেটা যেমন মাথায় রাখতে হবে, তেমনি সঠিকভাবে ব্যাপারটা ওঁকে বোঝাতেও হবে। অর্থাৎ এ ক্ষেত্রে কমিউনিকেশন স্কিলটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। তবে একবার অভ্যেস হয়ে গেলে পরস্পরকে বোঝা এবং সেইমতো কথা বলাটাও রপ্ত হয়ে যাবে আপনাদের।
বাড়িতেও করা যায় আর্ট থেরাপি
কোনও বিশেষজ্ঞের সাহায্য না নিয়ে একদম নিজেদের মতো করেও শুরু করতে পারেন আর্ট থেরাপি। সপ্তাহান্তের ছুটিতে কয়েক ঘণ্টা ফাঁকা সময় হাতে রাখুন দু’জনে, অথবা কাজে লাগাতে পারেন লকডাউনের দিনগুলি। ক্যানভাসে বা ড্রয়িং খাতায় দু’জনে মিলে একটাই ছবি আঁকতে শুরু করুন। যে যার নিজের কল্পনা, রেখা, রং উপুড় করে দিন ছবিতে। এমনকী খাতা-ক্যানভাসে আটকে থাকতে না চাইলে মেঝেতে আলপনা দিতেও পারেন। দরকারে দু’জনে মিলে শনি-রোববারের ছুটিতে পাড়ার পেন্টিং ক্লাসে ভর্তিও হয়ে যেতে পারেন। দেখবেন, ড্রয়িং খাতার আঁকিবুকির মধ্যে দিয়েই কেমন ধীরে ধীরে আবার পূর্ণ হয়ে উঠছে আপনাদের সম্পর্কের পাত্রটা!