শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারলে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা জরিমানা ও ছয় মাসের কারাদণ্ডের বিধান রেখে শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র আইন, ২০২০ এর খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়।
বৈঠক শেষে সচিবালয়ে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়রুল ইসলাম বলেন, দেশে যৌথ পরিবার কমে একক পরিবারের সংখ্যা বাড়ছে। পাশাপাশি কর্মক্ষেত্রে বাড়ছে নারীর অংশগ্রহণ। তাই পরিবারের শিশুসন্তানদের দেখভালের জন্য শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রের চাহিদা ক্রমে বাড়ছে। এ অবস্থায় শিশুদের মানসম্মত নিরাপদ স্থানে দিবাকালীন পরিচর্যা ও অবস্থানের জন্য শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র আইন, ২০২০-এর খসড়া প্রণয়নের উদ্যোগ নেয় মহিলা ও শিশু মন্ত্রণালয়। শিশুদের পরিচর্যায় বিশ্বস্ত সহায়ক সেবা কেন্দ্রের অভাব সৃষ্টি হওয়ায় এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র আইন, ২০২০-এ সাতটি অধ্যায়ে ৪৯টি ধারা রয়েছে। আইন অনুযায়ী চার ধরনের শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা যাবে। এগুলো হলো সরকারের ভর্তুকি দিয়ে পরিচালিত কেন্দ্র, সরকার অথবা সরকারি দপ্তর, অধিদপ্তর, পরিদপ্তর অথবা সংবিধিবদ্ধ সংস্থা ও স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার মাধ্যমে বিনা মূল্যে পরিচালিত কেন্দ্র, ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে পরিচালিত কেন্দ্র এবং ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা বেসরকারি সংস্থা কর্তৃক অলাভজনক উদ্দেশ্যে পরিচালিত দিবাযত্ন কেন্দ্র।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এ আইনের বিধির মাধ্যমে এসব কেন্দ্রের সেবার গুণগতমান, পুষ্টি, স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা, চিকিৎসা, সুরক্ষা, বিনোদন, শিক্ষা, পরিবেশগত ব্যবস্থাপনার মান নিশ্চিত করা হয়েছে। বলা হয়েছে, প্রতিটি শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রে শিশুদের মায়ের দুধ খাওয়ানোর সুবিধা নিশ্চিতের কথা। এছাড়া প্রতিটি কেন্দ্রে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামোর সুবিধা নিশ্চিতের কথাও বলা হয়েছে।
শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র স্থাপন করতে সংশ্লিষ্ট নিবন্ধন পরিদপ্তরের কাছ থেকে বাধ্যতামূলক রেজিস্ট্রেশন নিতে হবে। রেজিস্ট্রেশন ফি কত হবে তা বিধিমালায় উল্লেখ থাকবে। এছাড়া রেজিস্ট্রেশন ছাড়া দিবাযত্ন কেন্দ্র স্থাপনে ৫০ হাজার এবং দিবাযত্ন কেন্দ্রে শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারলে ১০ লাখ টাকা জরিমানা ও ছয় মাসের কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
এদিকে মন্ত্রিসভার বৈঠকে গতকাল দেশে আরো দুটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়। এর মধ্যে লক্ষ্মীপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়টি হবে লক্ষ্মীপুরে। আর বগুড়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হবে বগুড়ায়। বর্তমানে দেশে ৪৬টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম চলছে। এছাড়া কিছুদিন আগে আরো চারটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য আইনের খসড়ায় অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা।