প্রিয়জনের প্রতি আগ্রহ হারালে করণীয়

0
31
সম্পর্কের মাঝে আবেগের গুরুত্ব

প্রেমের সম্পর্ক হোক কিংবা বিবাহিত জীবন- প্রাখমিক অবস্থায় একে অপরের প্রতি ভালোবাসার কমতি থাকে না। সারাটা দিন যেন শুধু তার সঙ্গেই কাটিয়ে দেওয়া যায়। প্রিয়জনকে হঠাৎ কিছু উপাহার দিয়ে চমকে দেওয়া, আবেগঘন আলাপচারিতা, বেড়াতে যাওয়া। কোনটা ছেড়ে কোনটা করবেন ভেবেই যেন কুল পাওয়া যায় না।
তবে কয়েক বছর না পেরোতেই আবেগ চাপা পড়ে ব্যস্ততা আর বাস্তবতার নিচে। বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা শেষ মুহূর্তে ভেস্তে যায়, দিন শেষে এতই ক্লান্ত যে প্রেমালাপও বিস্বাদ মনে হয়।
এমন চলতে থাকলে একসময় একে অপরের প্রতি আকর্ষণ কমে যেতে পারে। তবে এটা বিরল কোনো ঘটনা নয়।
আকর্ষণ কমে যাওয়া মানেই যে ভালোবাসা কমে গেছে তেমন নয়। এই হারানো আকর্ষণ ফিরিয়ে আনতে করণীয় বিষয়গুলো জানানো হল সম্পর্কবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন অবলম্বনে।
প্রশ্ন করুন: আকর্ষণ কেনো হারালো?: সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করার আগে সমস্যার কারণ খুঁজে বের করার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
ভারতীয় মনোবিজ্ঞানী সোয়েতা সিং বলেন, “কী কারণে এবং কখন থেকে আকর্ষণে ভাটা পড়েছে তা জানা জরুরি। ব্যাপারটা ধীরে ধীরে হয়েছে না কি হঠাৎ কোনো বিশেষ কারণে? কীভাবে সমস্যার অস্তিত্ব টের পেলেন? নিজেকে প্রশ্ন করার বিষয়টি সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বুঝতে পারবেন সম্পর্কে কী ধরনের পরিবর্তন আনতে পারলে সমস্যা সমাধান হবে।”
অপরকে দোষারোপ করা ছাড়তে হবে: সঙ্গীর সঙ্গে আলোচনা কিংবা তার ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে দেওয়ার আগে সমস্যার কেন্দ্রবিন্দু আপনি নিজেই হতে পারেন- ব্যাপারটি ভেবে দেখতে হবে। হয়ত সঙ্গীর প্রতি আপনি আগ্রহ হারাচ্ছেন কারণ সে আগের মতো সাজগোজ করে নিজেকে আকর্ষণীয় হিসেবে উপস্থাপন করা চেষ্টা কমিয়ে দিয়েছে। এমনও তো হতে পারে যে সে এমনটা করছে তার কারণ আপনি নিজেই আগের মতো ব্যাপারগুলো পাত্তা দিচ্ছিলেন না? কিংবা আগের মতো প্রসংশা করছেন না? সমস্যা দুদিক থেকেই চিন্তা করা সম্পর্কের জন্য স্বাস্থ্যকর।
নিজেদের একান্ত সময়কে গুরুত্ব দিন: সারাদিন যত ঝামেলাই পোহাতে হোক না কেনো নিজেদের মধ্যে একান্ত কিছু সময় পার করার গুরুত্ব কখনই অবহেলা করা যাবে না। শত ব্যস্ততার মাঝেও একটি ছুটির দিন সঙ্গীকে নিয়ে বেড়াতে যাওয়া পরিকল্পনা করতে হবে। বিশেষ সেই দিনটিকে বিশেষত্ব দিতে আপনাকেও সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে, সাজতে হবে, অন্য চিন্তা বাদ দিয়ে শুধু দায়সারা-ভাবে নয়, ভালোবাসা নিয়ে উপস্থিত থাকতে হবে।
দুজন মিলে নতুন কিছু: সংবেদনশীল এই সময় মোকাবেলা করার সম্ভবত সবচাইতে কার্যকর উপায় হবে দুজন মিলে নতুন কোনো কর্মকাণ্ডে জড়ানো। বেড়াতে পছন্দ করলে দুজন মিলে বেড়াতে যান বা দুজনেরই আগ্রহ আছে এমন কোনো শখের পেছনে সময় দিন। কাজ যাই হোক, মূল উদ্দেশ্য হল দুজন একসঙ্গে আরও বেশি সময় কাটানো।
আপনাকে মনে করার সুযোগ দিন: লম্বা সম্পর্কের একটি আত্মঘাতি দিক হল- সময়ে সঙ্গীর গতবাঁধা জীবনের একটি অংশ হয়ে গেছেন আপনিও। যা অন্যান্য সবকিছুর মতো আপনার প্রতিও একঘেয়েমি নিয়ে আসতে পারে। অর্থাৎ দুজন মিলে কাটানো সময় বেশি হওয়ার কারণেও এই একঘেয়েমি দেখা দিতে পারে। এমন ক্ষেত্রে একে অপরের মধ্যে সাময়িক দূরত্ব উপকারী হবে। একা কোথাও বেড়াতে যেতে পারেন। কিংবা ছুটির দিনে প্রিয়জনকে রেখে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায় বেরোতে পারেন। এতে আপনার সঙ্গী আপনার অভাব অনুভব করার সুযোগ পাবে।
তৃতীয় কারও সাহায্য: সম্পর্কে মাঝে আসা সমস্যার নানান রূপ হয়, সমাধানও হয় ভিন্ন। তাই নিজেদের মধ্যে আলোচনা ফলপ্রসু না হলে তৃতীয় কারও সাহায্য নিতে হতে পারে। আর তাতে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে পরিবার কিংবা বন্ধুমহল। সাংসারিক সমস্যা বিষয়ক বিশেষজ্ঞের সাহায্যও নিতে পারেন। সমাধানের সব ধরনের উপায়কেই কাজে লাগিয়ে দেখতে হবে।
সূত্র: বিডি নিউজ ২৪ ডটকম

Previous articleসন্তান জন্মের পর পুরুষরাও মানসিক সমস্যায় ভোগেন
Next articleমানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতায় দীপিকা পাড়ুকোন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here