সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহার দিনকে দিন বেড়েই চলেছে শিশুদের মধ্যে। এর কুফল নিয়ে বিশেষভাবে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন সর্বস্তরের চিকিৎসক, মনোবিদ ও শিশুকল্যাণ বিশেষজ্ঞরা। তার চাইতেও খারাপ খবর হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ার প্রভাব। সেটাও অনেকটা বাবা মায়ের কাছ থেকেই পাওয়া।
এছাড়া নতুন এক গবেষণায় বলা হচ্ছে- যেসব পিতা-মাতা বিষণ্ণতায় ভোগেন, তাদের সন্তানদের ওপর এর ব্যাপক প্রভাব পড়ে। বিশেষ করে মায়েদের তুলনায় বাবার হতাশা বা বিষণ্নতার প্রভাব বেশি পড়ে।
কিশোরদের বিষণ্নতা বা হতাশা কাটানোর চিকিৎসায় তাদের পিতার ভূমিকা বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন যুক্তরাজ্যের কয়েকজন গবেষক।
ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন বা ইউসিএল যুক্তরাজ্য ও আয়ারল্যান্ডের প্রায় ১৪ হাজার পরিবারকে নিয়ে এ গবেষণা চালিয়েছে।
গবেষণায় বলা হচ্ছে, কিশোর বয়সের হতাশা বা বিষণ্ণতা কাটানোর জন্য অভিভাবকদের একটা বড় ভূমিকা রয়েছে।
কোনো সন্তানের বাবার মধ্যে বিষণ্ণতার লক্ষণ থাকলে তা নিয়ে তাদের চিকিৎসকের সঙ্গে আলোচনা করার পরামর্শ দিয়েছেন গবেষকেরা।
‘যেহেতু মায়েরাই সন্তানের সঙ্গে বেশি সময় কাটান তাই মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক চিকিৎসায় মায়েদের দোষারোপ করার একটা প্রবণতা রয়েছে।
কিন্তু গবেষণার ফলাফল অনুযায়ী, ‘এক্ষেত্রে বাবাদের ভূমিকা আরো বেশি সামনে আনা প্রয়োজন’।
‘ আপনি যদি কোনো সন্তানের পিতা হন, আর যদি আপনার মধ্যে কোনো বিষণ্নতা থাকে যার চিকিৎসা আপনি কখনো নেননি-তাহলে সেটার প্রভাব আপনার সন্তানের ওপর পরতে পারে’।
পুরুষরা বিষণ্ণতায় ভুগলে তাদের চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত-বলছেন গবেষকেরা।
আয়ারল্যান্ডের ছয় হাজার পরিবার এবং যুক্তরাজ্যের আট হাজার পরিবারের ওপর এ গবেষণা কার্যক্রমটি চালানো হয়, মূলত কিছু প্রশ্নপত্রের মাধ্যমে। এতে সাত, নয় এবং তের থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশু ও তাদের অভিভাবকেরা বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেয়। যেখানে নিজেদের অনুভূতির বিষয়ে প্রশ্নের উত্তর দেয় তারা।
শিশু ও অভিভাবকদের মানসিক উপসর্গ ও অনুভূতির বিষয়ে জেনে সে অনুযায়ী বিষণ্ণতার ধরন ঠিক করে গবেষক দল।
ওই গবেষণার ফলাফলে গবেষকেরা দেখতে পান, পিতার বিষণ্ণতার সাথে শিশুর বিষণ্ণতা বা হতাশার উপসর্গ ও ধরনের মধ্যে মিল আছে।
গবেষকরা বলছেন, যারা মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভোগেন তাদের বেশিরভাগের হতাশা বা বিষণ্নতা শুরু হয় ১৩ বছর বয়স থেকে এবং মায়ের মধ্যেও যদি বিষণ্নতা থাকে তাহলে শিশুর ঝুঁকি আরো বেশি থাকে। সে কারণে পিতার সুস্থতা অনেক বেশি জরুরি-আর এটা গবেষণায় প্রাপ্ত নতুন ফলাফল।