সমস্যা: আমি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছি। অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে। আমার পড়াশোনায় মনোযোগ নাই। আমি সবসময় হতাশায় ভুগি। কারো সাথে মিশতে ইচ্ছে হয় না। আমি মোটা তাই হয়ত সবার সাথে কথা বলতে অস্বস্তি বোধ করি। আমার ফাস্ট ইয়ারের রেজাল্ট খারাপ হওয়ার কারণে আমি আরো হতাশায় ভুগছি। আমার একটা যৌন সমস্যা আছে। সপ্তাহে ৪-৫ বার মাস্টারবেশন করতে হয়। এই বদ অভ্যাস থেকে বের হতে চাচ্ছি। আজ দুই বছর আমি এটা করছি। আর পড়ার টেবিলে বসলেও মনোযোগ দিতে পারি না। রাতে ঘুম হয় না। আমি এসব থেকে মুক্তি পেতে চাই। আমাকে পরামর্শ দিলে খুবই উপকার হবে।
আপনি সমস্যার কথা লিখতে গিয়ে লিখেছেন, ‘আমার পড়াশোনায় মনোযোগ নাই। আমি সবসময় হতাশায় ভুগি। কারো সাথে মিশতে ইচ্ছে হয় না’। আবার লিখেছেন, ‘পড়ার টেবিলে বসলেও মনোযোগ দিতে পারি না। রাতে ঘুম হয় না’। এখানে উল্লেখ করা প্রত্যেকটি উপসর্গই বিষন্নতা বা ডিপ্রেশনের সাথে সংশ্লিষ্ট। অর্থাৎ বলা যায় আপনি বিষন্নতায় ভুগছেন। যখন কোনো সমস্যা সেই মানুষটির কাজে সমস্যা করে, তখন তার অবশ্যই চিকিৎসা নেওয়া উচিত। যা আপানর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
সমস্যাগুলোর দুটো কারণ থাকতে পারে, যেমন মোটা হয়ে যাওয়া, ভালো না লাগা, মনোযোগ না থাকা এসব কিন্তু শারীরিক কোনো কোনো সমস্যার কারণেও হতে পারে। অর্থাৎ শারীরিক কারণেও মনের সমস্যা হয়, যা আপনার ক্ষেত্রেও হয়ে থাকতে পারে। এর প্রধান কারণ হতে পারে থাইরয়েড বা অন্য কোনো হরমোন। এছাড়া কোনো ওষুধ আগে থেকে খান কিনা সেটা জানাও প্রয়োজন ছিলো।
আর দ্বিতীয় যে বিষয়টি আপনি উল্লেখ করেছেন, সেটাকে বলেছেন যৌনসমস্যা হিসেবে। এটা আসলে যৌনসমস্যা নয় বরং এটি এক ধরনের যৌন আচরণ।
মাস্টারবেশন এমনিতে অর্থাৎ বৈজ্ঞানিক ভাবে ক্ষতিকর নয়। সেটা যতবার বা যতদিন ধরেই চলতে থাকুক। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায়, এ বিষয়ে চিন্তা করতে করতে বা এ নিয়ে অপরাধ বোধ কাজ করার জন্যও বিষন্নতা শুরু হতে পারে। সেই বিষন্নতা আপনার উপরের সব ধরনের সমস্যা করতে পারে। একই সাথে মোটা হওয়াতে সহায়তা করতে পারে।
আমি আপনাকে বলবো অবশ্যই একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য। শরীরের সমস্যা বা যৌনাচরণের সমস্যা বা অন্য যেকোনো সমস্যার কারণেই হোক না কেন আপনার বিষন্নতার কারণ জানা প্রয়োজন। তারপর দ্রুত চিকিৎসা শুরু করতে হবে।
আবারো ধন্যবাদ মনের খবরের সাথে থাকার জন্য।