আমি কে, কী করতে পারি এবং কী পারিনা এই তিন বিষয়ের স্বচ্ছ ধারণাই হলো আত্মবিশ্বাস। জীবনে চলার পথের সব কাজের মতোই খেলাধুলাতেও এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান।
আজকাল সব খেলাধুলায় প্রযুক্তির ব্যবহার অনেক বেড়ে গেছে। ব্যক্তিগত দক্ষতা উন্নয়ন এবং ভুল ত্রুটি সংশোধনের কাজে তার প্রভাবও তাই অনেক। খেলোয়াড়দের দক্ষতার মান তাই দিন দিন খুব কাছাকাছি চলে আসছে। তবে যে বিষয়টা একজন খেলোয়াড়কে অন্যদের চেয়ে এগিয়ে রাখছে তা হলো নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস। সমান মানের দুজন খেলোয়াড়ের মাঝে পার্থক্য গড়ে দিতে পারে নিজের সামর্থের প্রতি দ্বিধাহীন এবং স্বচ্ছ ধারণা।
আজকের বাংলাদেশ ক্রিকেট দল এক বছর আগে কিন্তু এতো আত্মবিশ্বাসে ভরপুর দল ছিলো না। পেছনে ফিরে তাকালে লক্ষ্য করা যাবে, ২০১৪ সালে শ্রীলঙ্কা সিরিজের পর থেকে তাদের যতটুকু আত্মবিশ্বাস ছিলো তাতে এক ধরনের চিড় ধরতে শুরু করে। পরবর্তী বেশ কয়েকটি সিরিজে আমরা তার প্রতিফলনও দেখতে পাই। বেশ কয়েকটা ক্লোজ ম্যাচ হেরে যাওয়াতেই যেন খেলোয়াড়দের মনোবল ভেঙে যায়।
শ্রীলঙ্কান কোচ তাই দায়িত্ব নিয়েই বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের আত্মবিশ্বাস উন্নয়নের কাজে লেগে গেলেন। প্রতিটা ক্রিকেটারকে আলাদা করে চিনে তাদের ব্যক্তিত্বও বোঝার চেষ্টা করলেন তিনি। প্রতিভার কোনো কমতি না থাকলেও কেন তারা ভালো পারফর্ম করতে পারছে না সেটাই তিনি বের করতে চেষ্টা করেন।
খেলোয়াড়দের মনোবল ফিরিয়ে আনতে বিখ্যাত ক্রীড়া মনোবিদ ফিল জোন্সকেও নিয়ে আসেন তার কাজে সহায়তা করতে। এর ফলাফল কিন্তু ঠিক আজ আমরা দেখতে পাচ্ছি। গত পাকিস্তান সিরিজ এবং সর্বশেষ বিশ্বকাপে টাইগারদের আত্মবিশ্বাসে ভরপুর টগবগে একটা দল মনে হয়েছে।
খেলাধুলায় দক্ষতা বাড়ানোর পাশাপাশি খেলোয়াড়দের মানসিক অবস্থা নিয়েও তাই কাজ করা অত্যন্ত জরুরি । একজন প্রতিভাবান কোচ তাঁর খেলোয়াড়দের দক্ষতা নিয়ে কম কাজ করেন। তিনি বরং চেষ্টা করেন সেই একই দক্ষতায় সেই খেলোয়াড় যেন তাঁর সবচেয়ে ভালোটা দিতে পারেন।
ডা. সাইদুল আশরাফ কুশল
এমডি রেসিডেন্ট (সাইকিয়াট্রি)
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা
প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব। মনের খবরের সম্পাদকীয় নীতি বা মতের সঙ্গে লেখকের মতামতের অমিল থাকতেই পারে। তাই মনের খবরে প্রকাশিত কলামের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় নেবে না কর্তৃপক্ষ।