আজ ৮ মার্চ বিশ্ব নারী দিবস । নারী–পুরুষ সকলের জন্য বৈষম্যহীন বিশ্ব গড়ার প্রত্যয় নিয়ে পালিত হচ্ছে বিশ্ব নারী দিবস । এ বছর জাতিসংঘ ঘোষিত নারী দিবসের প্রতিপাদ্য হলো ‘সময় এখন নারীর : উন্নয়নে তারা বদলে যাচ্ছে গ্রাম শহরের কর্মজীবন ধারা’।
‘কর্মজীবন ধারা’ বদলে ফেলতে চাওয়া এক নারীর সাথে কথা হলো নারী দিবসের সকালে । তিনি চা দোকানী রিনা বেগম (ছদ্মনাম)। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির এক প্রান্তে তিনি চায়ের দোকান করেন। স্বামী-স্ত্রী মিলে দোকানটি পরিচালনা করেন।
আজ যে নারী দিবস, সেটি জানেন কিনা জিজ্ঞেস করলে জবাব দিলেন, এসব তো শিক্ষিত লোকের ব্যাপার। তার প্রতিদিনিই প্রায় একরকম । ভোরে ঘুম থেকে উঠে রান্না করে ছেলে-মেয়েকে স্কুলে পাঠিয়ে আসেন দোকানে। রাত পর্যন্ত স্বামীর সাথে চা বানান। কথায় কথায় জানালেন তার জীবনের কঠিন সংগ্রামের নানা গল্প।
নিম্নবিত্ত নারীদের চায়ের দোকান করতে প্রায়ই দেখা যায় আজকাল । কিন্তু বরিশাল থেকে নদীভাঙ্গনে প্রায় সর্বস্বান্ত হয়ে সপরিবারে ঢাকায় আসা রিনা বেগম জীবনসংগ্রামে ঘুরে দাঁড়াতে চেয়েছেন বারবার। চায়ের দোকান করছেন প্রায় পনের বছর। গত বছর ভাগ্য বদলানোর আশায় তিনি চলে গিয়েছিলেন সৌদি আরবে। চায়ের দোকান আর সন্তানদের একাই দেখে রাখছিলেন তার স্বামী। বিদেশ গিয়ে ভাগ্য তো বদলালোই না, উল্টা টাকা-পয়সা নষ্ট হলো, শারীরিক-মানসিক কষ্ট হলো। তিনি প্রতারণার খপ্পরে পরেছিলেন। শেষ পর্যন্ত বছর পার হওয়ার আগেই তিনি ফিরে এসেছেন দেশে। আর্থিক লাভ না হোক, সুস্থ শরীরে তিনি দেশে স্বামী-সন্তানদের কাছে ফিরতে পেরেছেন, এটাই তার বড় আনন্দ।
বিদেশে গিয়ে প্রতারণার শিকার হয়ে আর্থিক-মানসিক-শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও মনোবল হারাননি রিনা বেগম। দেশে ফিরে তিনি চায়ের দোকান করে ধরে রেখেছেন নিজের ও পরিবারের হাসিমুখ।
রিনা বেগম জানালেন, বিদেশ গিয়ে ভুল করেছিলেন । মনে যদি শান্তি না আসে, বেশি টাকা কামিয়েই কী লাভ! দেশে আবারও চায়ের দোকান করেই তিনি ভালো আছেন। স্বামী-সন্তানদের নিয়ে আনন্দে দিন কাটাচ্ছেন। রিনা বেগমের ভাষায়, ‘মনে শান্তি না থাকলে ট্যাকা দিয়া করমু কী?’
প্রতিবেদক, মনেরখবর.কম
লক্ষ্য করুন- মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক খবর বা প্রেস রিলিজও আমাদের পাঠাতে পারেন। বৈজ্ঞানিক সেমিনার, বিশেষ ওয়ার্কশপ, সাংগঠনিক কার্যক্রমসহ মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক যে কোনো খবর পাঠাতে news@www.monerkhabor.com এই ইমেইলটি ব্যবহার করতে পারেন আপনারা।