সুখী ও সহানুভূতিশীল সম্পর্কের নেপথ্যে থাকা কিছু কথা

0
147
সুখী ও সহানুভূতিশীল সম্পর্কের নেপথ্যে থাকা কিছু কথা

সুখী ও সুন্দর জীবন আমরা সবাইই চাই। আর এই সুখী সুন্দর জীবনের নেপথ্যে রয়েছে সহানুভূতিশীল ও  অর্থপূর্ণ সম্পর্ক। সম্পর্ককে অর্থপূর্ণ এবং সহানুভূতিশীল করে তুলতে কিছু প্রয়াস অবশ্যই করা প্রয়োজন। বিভিন্ন গবেষণায় এ সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত তুলে ধরা হয়েছে যেগুলো অনুসরণ করলে সুখী ও সুন্দর সম্পর্ক গড়ে তোলা সম্ভব।

আমরা সবাই আমাদের সম্পর্কগুলো নিয়ে সুখী হতে চাই, মানসিক প্রশান্তিতে থাকতে চাই। আর মানসিক প্রশান্তি পেতে গেলে সম্পর্ককে হতে হয়  অর্থপূর্ণ এবং একে অপরের প্রতি থাকতে হয় সহানুভূতিশীল। যখন একজন মানুষ সবাইকে নিয়ে সুখে থাকতে পারে তখন তার শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যও ভালো থাকে। যেমন, পরিবারের সবাই একে অপরের সাথে কেমন সম্পর্কে আবদ্ধ সেটির উপর নির্ভর করে একটি পরিবার ঠিক কেমনভাবে তার কাজ গুলো পরিচালনা করবে। যে পরিবারের সবার মাঝে বিবাদময় এবং ক্রোধপূর্ণ সম্পর্ক থাকে সে পরিবারে কখনো সুখ শান্তি বিরাজ করেনা এবং তাদের মাঝে মনস্তাত্ত্বিক দূরত্বও অনেক বেশি থাকে। আর যে সব পরিবারের সদস্যদের মাঝে সহানুভূতিশীল, দায়িত্ব পরায়ণ এবং ভালোবাসা পূর্ণ সম্পর্ক থাকে  সে পরিবারের সদস্যরা সব দিক থেকে উন্নতি লাভ করে। তাদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য উভয়ই ভালো থাকে। পিতা মাতার মধ্যাকার সম্পর্ক সরাসরি সন্তানের মানসিক অবস্থার উপর প্রভাব ফেলে। আবার সন্তানের সাথে পিতা মাতার সম্পর্কও পিতা-মাতা এবং সন্তান সবার আচার আচরণ এবং মনস্তত্ত্বের উপর প্রভাব ফেলে। এভাবে সব ধরণের সম্পর্কই কিছু বিশেষ ক্রাইটেরিয়া অনুসরণ করে যেগুলোর সফল বহিঃপ্রকাশ সম্পর্ককে অর্থপূর্ণ করে এবং যেগুলো পালনে ব্যর্থ  হলে সম্পর্ক তিক্ত এবং অসন্তোষে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে।

সম্প্রতি একটি গবেষণায় দেখা গেছে কি কি বিষয় খেয়াল রাখলে সম্পর্কে মানসিক সন্তুষ্টি এবং প্রশান্তি বজায় থাকে। এক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্যতা এবং প্রতিশ্রুতি দুটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই বিশেষ বৈশিষ্ট্য দুটি সম্পর্কে মনোযোগ, আত্ন সচেতনতা, সম্পর্কের লক্ষ্য নির্ধারণ, সম্পর্কের গুরুত্ব, অধ্যবসায় ও ধৈর্য ইত্যাদি বজায় রাখতে ভূমিকা রাখে। অর্থাৎ বলা যায়, সম্পর্কের মাঝে যদি গ্রহণযোগ্যতা এবং প্রতিশ্রুতিশীল মানসিকতা থাকে তাহলে দুজন মানুষের মাঝে মনস্তাত্ত্বিক সহজবোধ্যতা বজায় থাকে। তারা কে অপরের ভালো মন্দ সব কিছু সহজ ভাবে মেনে নিতে পারে। অতীত বা ভবিষ্যতের জন্য দুশ্চিন্তা না করে বর্তমান নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে পারে।  একে অপরের ভুল ভ্রান্তি সহজ ক্ষমাশীল দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে বিচারের মানসিক শক্তি অর্জন করতে পারে। ছোটখাটো সমস্যাগুলিকে গুরুত্ব না দিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে পারে। জীবনকে উপভোগ করে বাঁচার মত বাঁচতে পারে এবং জীবনের লক্ষ্য পূরণে একসাথে কাজ করে।

সাধারণত যাদের মাঝে মানসিক সংকীর্ণতা থাকেনা তারা উপরের এই বৈশিষ্ট্যগুলো সহজেই আয়ত্ত করতে পারে। আর যারা এর বিপরীত মানসিকতার অধিকারী হয় তাদের মাঝে সহজেই নেতিবাচক গুণাবলী অধিক মাত্রায় দেখা যায় এবং তাদের সম্পর্কের মাঝেও এর সরাসরি প্রভাব লক্ষ্য করা যায়।

তাছাড়াও সম্পর্কের মাঝে একে অপরের প্রতি সন্তুষ্ট থাকা অত্যন্ত প্রয়োজন। দৈনন্দিন বিভিন্ন ঘটনাবলী, উত্থান পতন, সুখ দুঃখ সব কিছুর পরেও যারা তাদের বর্তমান নিয়ে একে অপরের সাথে সন্তুষ্টির মানসিকতা প্রদর্শন করতে পারে তাদের সম্পর্কই প্রকৃতপক্ষে অর্থপূর্ণ হয়। এছাড়াও মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণের শক্তি ও সামর্থ্য এবং একে অপরকে সমালোচনার ঊর্ধ্বে উঠে সমর্থন করার মত গুণাবলী একটি সম্পর্কের মজবুত বুনিয়াদ তৈরি করে দেয়।

উপরের বিষয়গুলো খেয়াল রাখলে মোটামুটি ভাবে বলা যায় সম্পর্কের মাঝে মানসিক প্রশান্তি এবং সম্পূর্ণতার অনুভূতি বজায় থাকবে। সুখে থাকা এবং প্রশান্তিতে রাখা সম্ভব হবে এবং সম্পর্কগুলো জীবনের শক্তি হয়ে উঠবে ।

সূত্র: https://www.psychologytoday.com/intl/blog/meet-catch-and-keep/202012/the-understudied-trait-makes-happier-relationships

করোনায় স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি

করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে

 

Previous articleমনের খবরে ২ টি পদে জরুরীভিত্তিতে কর্মী নিয়োগ করা হবে
Next articleঅনেক মানসিক রোগের ডাক্তারও দেখিয়েছি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here