শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রভাব

0
97
শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রভাব

ফেসবুক,টুইটার,ইনস্টাগ্রাম এসব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সব বয়সের মানুষের মাঝেই এখন বেশ জনপ্রিয়। অন্যান্য বয়সের সাথে পাল্লা দিয়ে শিশুদের মাঝেও এখন এসবের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। স্ন্যাপ চ্যাট ফিল্টার, ইনস্টাগ্রাম ফলোয়ার, টুইট,ফেসবুকিং এসব এখন কম বয়সীদের জীবনের খুবই স্বাভাবিক এবং নিত্যনৈমিত্তিক শব্দ। গবেষণায় দেখা গেছে এখন প্রায় ৭৫ শতাংশ শিশুদের মোবাইল ফোন রয়েছে এবং যাদের অধিকাংশই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সাথে যুক্ত। অভিভাবকদের তাই সচেতন থাকতে হবে শিশুদের  সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এই স্বতঃস্ফূর্ত ব্যবহার যেন অপব্যবহারে পরিণত হয়ে তাদের ক্ষতি না করে, মানসিক বিপর্যয়ের কারণ হয়ে না দাঁড়ায়।

বয়সের সাথে সাথে শিশুদের আচার-আচরণ,মন-মানসিকতার পরিবর্তন সাধিত হয়। অনেক সময় দেখা যায় খুব হাসিখুশি শিশুটাও বেশ গম্ভীর আর চুপচাপ হয়ে গেছে,বা কোন কারণ ছাড়াই উত্তেজিত হয়ে পড়ছে। শিশুদের মানসিকতার এই পরিবর্তন তাদের বয়সের কারনে যেমন হতে পারে, তেমনি তাদের দৈনন্দিন কাজকর্মের নেতিবাচক প্রভাবের ফলে তাদের মানসিক অবস্থার পরিবর্তনের কারণেও হতে পারে। যদিও এটা স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের দ্বারা প্রমাণিত নয়,তবে কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সাথে সম্পৃক্ততা এবং বিষণ্ণতার সাথে পারস্পরিক সম্পর্ক রয়েছে, বিশেষ করে শিশু-কিশোর এবং তরুণ সমাজের ছেলে-মেয়েদের মাঝে।

অনেক সময় দেখা যায়, শিশুরা হঠাত করেই রেগে যাচ্ছে, তাদের সহনশীলতা কমে জাচ্ছে এবং তারা একাকী থাকতে বেশি স্বাচ্ছন্দ বোধ করছে। বাধ্যবাধকতা থাকা সত্ত্বেও গভীর রাত পর্যন্ত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সময় কাটাচ্ছে। অনেক সময় তাদেরকে এসব বিষয়ে নজরদারির আওতায় আনা হলেও দেখাচ্ছে যে তারা নকল নাম ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করছে এবং অভিভাবকদের ধোঁকা দিচ্ছে। এছাড়াও দেখা যায় তাদের মাঝে নিদ্রাহীনতা দেখা দিচ্ছে। তারা তাদের পরিবার বা বন্ধুদের সাথে খেলাধুলা বা ঘোরাফেরা না করে অদিকাংশ সময় একা থাকছে এবং নিজেকে ভার্চুয়াল জগতে ব্যস্ত রাখছে।

যদি আপনার শিশুর মাঝে এসব অভ্যাসগত মানসিক পরিবর্তন দেখা দেয়, তাহলে অবশ্যই আপনার শিশু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের নেতিবাচক প্রভাবের শিকার। এর ফলে দেখা যায় আপনার শিশু হয়তো দিনের বেলায় অধিক পরিমাণ ঘুমাচ্ছে এবং রাতে নির্ঘুম থাকছে, অথবা তার মাঝে অত্যধিক মাত্রায় বিষণ্ণতা দেখা দিচ্ছে, মনোযোগের অভাবে পড়াশোনায় খারাপ ফলাফল করছে। এভাবে তার শারীরিক এবং মানসিক অবস্থা দিন দিন আরও খারাপ হয়। তার স্বাভাবিক বেড়ে ওঠা বাধাগ্রস্ত হয়। অনেকেই মানসিক প্রফুল্লতা হারিয়ে নিজেকে নিজের মাঝে গুটিয়ে নেয়। অনেক ক্ষেত্রে  এই সমস্যা আত্মহত্যা প্রবণতাকেও বৃদ্ধি করে।

যদি আপনার শিশুর মাঝে এসব মানসিক পরিবর্তন লক্ষ করেন, তবে এখনই সময়, আপনার শিশুর প্রতি আরও মনযোগী হন এবং শিশুকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কুফল সম্পর্কেবোঝানোর চেষ্টা করুন। তাকে আরও বেশি সময় দিন এবং পরিবার ও বন্ধুদের সাথে অধিক সময় কাটাতে উৎসাহিত করুন। প্রয়োজন হলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে

Previous articleকোভিড-১৯: একাকীত্ব মানুষকে উচ্চতর মানসিক ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে কী?
Next articleদাম্পত্য সম্পর্কের গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ যৌনতা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here