আশাবাদী মনোভাব মানুষকে বাঁচার অনুপ্রেরণা যোগায়। অনেক কঠিন পরিস্থিতিতেও মনের জোর বজায় রাখে। বিপদে ধৈর্য প্রদান করে।
সম্প্রতি গবেষকগণ এই দাবি করেছেন যে একজন আশাবাদী মনোভাব সম্পন্ন মানুষ একজন নৈরাশ্যবাদী মানুষের তুলনায় বেশি দিন বাঁচে এবং সু স্বাস্থ্যের অধিকারী হয়।
সাধারণত আমরা সবাই সেসব মানুষের সঙ্গ পছন্দ করি যারা আমাদের মনের জোর বাড়ায়, যে কোন বিপদে আমাদের পাশে থাকে এবং আমাদের মাঝে ইতিবাচক মানসিকতা গড়ে তুলতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। তাই বলাই যায়, যারা আত্মবিশ্বাসী এবং আশাবাদী মনোভাব পোষণ করেন তারা সকলের প্রিয় হন। সম্প্রতি গবেষণায় উঠে এসেছে, এরকম মনোভাব সম্পন্ন মানুষ শুধু সকলের প্রিয়ই হয়না বরং তারা অন্যান্যদের তুলনায় অনেক বেশী দিন বাঁচে।
আশাবাদী মানুষের দীর্ঘায়ুর প্রধান কারণ তাদের সুস্বাস্থ্য। আমরা জানি আমাদের সুস্বাস্থ্য এবং মনের সাথে সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। মন ভাল থাকলে শরীর স্বাস্থ্যও ভাল থাকে আর মন খারাপ থাকলে স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে। তাছাড়া চিকিৎসা শাস্ত্র এবং মনস্তত্ত্বের মাঝেও এক গভীর সম্পর্ক বিদ্যমান। ব্যক্তির মানসিক চাপ তার জন্য অনেক বড় রোগের কারণ হয়ে উঠতে পারে। যারা মানসিক চাপে ভোগেন তাদের মাঝে আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি দেখা যায় এবং তারা ধীরে ধীরে নৈরাশ্যবাদের অতল গহ্বরে তলিয়ে যায়।
এছাড়াও তারা সাহস এবং আত্মবিশ্বাসের সাথে কোন কাজই করতে পারেনা। সব সময়ই পিছিয়ে থাকে। তাদের এই নেতিবাচক মানসিকতার প্রভাব তাদের দৈনন্দিন কাজকর্মের উপর যেমন পড়ে তেমনি তাদের স্বাস্থ্যের উপরেও পড়ে। তারা বিভিন্ন রোগ, শোক, জরা, ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে অত্যন্ত শোচনীয় জীবন যাপন করে। তাই তাদের স্বল্পায়ুর ক্ষেত্রে এই নৈরাশ্যবাদী মনোভাব অনেক বড় এবং প্রধান কারণ হয়ে দেখা দেয়।
আশাবাদী মনোভাব সম্পন্ন মানুষ যে দীর্ঘায়ুর অধিকারী হন সেটি বিভিন্ন গবেষণায়ও উঠে এসেছে। গবেষকগণ দেখেছেন যে, আশাবাদী মানুষজন নৈরাশ্যবাদী মানুষের তুলনায় হৃদ রোগ, স্ট্রোক, কন্ঠনালীর প্রদাহ এবং অন্যান্য প্রাণঘাতী রোগের ঝুঁকিতে কম থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে, আশাবাদী মানুষজন নৈরাশ্যবাদী মানুষের তুলনায় প্রায় ১৫% বেশী দীর্ঘ জীবনকাল উপভোগ করে।
বিভিন্ন তথ্য উপাত্তে দেখা গেছে, আশাবাদী মানুষ সাধারণত অধিক মাত্রায় স্বাস্থ্যকর কাজকর্মের সাথে যুক্ত থাকে। যেমন, তারা বিভিন্ন শারীরিক পরিশ্রমের কার্যক্রমের সাথে যুক্ত থাকে, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করে, এবং নেশা করা থেকে বিরত থাকে। এছাড়াও দেখা গেছে, যারা অধিক মাত্রায় নৈরাশ্যবাদী মনোভাব পোষণ করেন তাদের মাঝে স্ট্রেস হরমোনের অত্যধিক নিঃসরণের কারণে তারা বিভিন্ন শারীরিক পিড়া যেমন ডায়াবেটিসের মত রোগে আক্রান্ত হন।
সুতরাং বলা যায় আশাবাদী মনোভাব যে মানুষের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়তা করে এটি বৈজ্ঞানিক ভাবেই প্রমাণিত। তাই আমাদেরকে আশাবাদী হতে হবে। বিপদে ধৈর্যহারা হলে চলবেনা। সব সময় আশাবাদী এবং ইতিবাচক মনোভাব বজায় রেখে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হয়ে সুস্থভাবে দীর্ঘ দিন বেঁচে থাকতে চেষ্টা করতে হবে ।
করোনায় স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে