স্কুলগুলোতে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার দাবি অভিভাবকদের

১০ জন বাবা মায়ের মধ্যে ৮ জন মনে করেন তাদের সন্তানদের মানসিক স্বাস্থ্য সেবা সম্পর্কিত শিক্ষা দেয়া উচিৎ, এসব তথ্য নিয়ে একটি জরিপ করা হয়েছিল। জরিপ অনুসারে শতকরা ৭৯ ভাগ বাবা মা মনে করেন তাদের সন্তানদের মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক শিক্ষা দেয়া উচিৎ। যেখানে শতকরা ৪৫ ভাগ বাবা মা বিশ্বাস করেন যে স্কুল কর্তৃপক্ষ তাদের সন্তানদের মানসিক স্বাস্থ্যের দেখাশুনা করতে ব্যর্থ হচ্ছেন।
ইউগোভ জরিপে ১০০০ জন সন্তানের মা বাবা সহ ৫০০০০ জন লন্ডনের স্কুলগুলোতে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক ক্লাস বাধ্যতামুলক করার দাবি নিয়ে একটি পিটিশন স্বাক্ষর করেছেন। দুই তৃতীয়াংশের বেশি অর্থাৎ শতকরা ৬৭ ভাগ বাবা মা বলেন তারা শিশুদের উর্ধ্বমুখী মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে চিন্তিত।
জরিপটি করা হয়েছিল শ মাইন্ড ফাউন্ডেশন এর মেন্টাল হেলথ চ্যারিটির পক্ষ থেকে। এই ফাউন্ডেশন এর ফাউন্ডার এডাম শ বলেন তিনি উনার পুর্ব অভিজ্ঞতা থেকে “ক্রিপ্লিং” নামে একটি ক্যাম্পেইন করতে চাচ্ছেনযেখানে বেড়ে উঠা শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কিত অভিজ্ঞতা গুলোর প্রতিফলন করা হবে। ১ থেকে ৫ বছরের শিশুদের অভিজ্ঞতা নিয়ে কাজ করা হবে। তিনি নিজে আত্নহত্যার পথ বেছে নিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, “আমি যে অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলাম সে ব্যাপারে কারোর সাথে কথা বলা বা জানানোর ব্যাপারে আমি ছিলাম খুবই চুপচাপ এবং ভীতু। যেহেতু আমি জানতাম না আমার কি হচ্ছে তাই আমি কাউকে কিছু জানাইনি”। তিনি আরো বলেন, “আমার জীবনটা সম্পুর্ণ ভিন্ন হতে পারত যদি প্রাইমারি স্কুলে আমাকে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা সম্পর্কিত কোন শিক্ষা দেয়া হত। আমি কারোর কাছে সাহায্য চাইতে পারতাম এবং এতটা ভয় পেতাম না। আর কোন শিশু কে এই যন্ত্রণা এবং ভয় সহ্য করতে হবে না। আমরা মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক পড়াশুনা বাধ্যতামূলক করি এটি খুবই দরকারি”।
শ মাইন্ড ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে আরেকটি পিটিশন করা হয় যার বিষয়বস্তু ছিল মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কিত শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা। এই পিটিশনটি ৫৩০০০ জন মানুষকে স্বাক্ষর করার কারণ দেখিয়েছে। যদি এই স্বাক্ষরের সংখ্যা ১০০০০০ তে যায় তবে এই বিষয়টি নিয়ে পার্লামেন্টে আলোচনা করা হবে।
ইয়াং মাইন্ডস এর একটি পিটিশনে দেখা গেছে যে প্রত্যেক শ্রেনীর কমপক্ষে ৩ জন মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছে। এবং তারা পরীক্ষা নিরীক্ষা করা উচিৎ এমন গুরতর সমস্যায় ভুগছে। ইয়াং মাইন্ডস এর প্রধান নির্বাহী সারাহ ব্রেন্নান বলেন, “বর্তমানে শিশু, কিশোর-কিশোরী, যুবক যুবতীরা অনেক চাপে থাকে, পরীক্ষার চাপ থেকে শুরু করে সাইবারে অপদস্ত হওয়ার চাপ, আর সব ধরণের প্রমাণ এইদিকে ইশারা করছে যে পরিস্থিতি দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে। শিশুদের উচিৎ তাদের মধ্যে একটি প্রতিরোধ তৈরী করার জন্য মানসিক সমস্যা নিয়ে ছোটবেলা থেকে শিক্ষা পাওয়া। শিক্ষা ব্যবস্থায় শিশুদের মানসিক এবং শারীরিক সুস্থতাই হওয়া উচিৎ প্রধান চাওয়া”।
শিশু, কিশোর-কিশোরী, যুবক-যুবতীদের মানসিক সমস্যা খুবই গুরত্বপুর্ণ বিষয় যার প্রতি সরকারের দৃষ্টি জ্ঞাপন করা উচিৎ। এই বছর প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে প্রাইমারি ও সেকন্ডারি স্কুলের সকল শিক্ষকদের মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার প্রাথমিক চিকিৎসা বিষয়ক প্রশিক্ষণ নিতে বলেছেন যেন তারা তাদের শিক্ষার্থীদের সাহায্য করতে পারেন।
তথ্যসূত্র-
(https://inews.co.uk/essentials/news/education/parents-believe-schools-teach-lessons-mental-health/)
রুবাইয়াত মুরসালিন, আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মনেরখবর.কম

Previous articleআমি আমার কাজের মাঝেই ভালো থাকি : মামুনুর রশীদ
Next articleবিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উপলক্ষ্যে সিলেটে বৈজ্ঞানিক সেমিনার ও র‍্যালি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here