সঙ্গনিরোধ আর সমাজচ্যুত শব্দ দুটো মোটেই সমার্থক নয়। রোগের প্রাদুর্ভাব ঠেকানোর জন্যে সবাইকে ঘরে থাকতে বলা হচ্ছে আর আক্রান্ত কারো সংস্পর্শে আসলে তাকে সঙ্গনিরোধ (Quarantine) করতে বলা হচ্ছে। তাই বলে এই না যে কেউ আক্রান্ত হলে, কারো মধ্যে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ দেখা দিলে বা আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে (তা পেশাগত কারণেই হোক বা পারিবারিক অথবা সামাজিক কারণেই হোক) এলে তাকে সমাজচ্যুত করতে হবে, তার সাথে সর্বাত্মক নেতিবাচক আচরণ করতে হবে, তার দিকে তীর্যক দৃষ্টিতে তাকাতে হবে, অতি উৎসাহ বা অতি তাচ্ছিল্যতা প্রদর্শন করতে হবে কিংবা বাড়ি ছাড়ার নোটিশ দিতে হবে।
আমি বা আপনি যে কাল আক্রান্ত হবো না বা আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে আসবো না অথবা ইতিমধ্যে আসি নাই তার তো কোনো নিশ্চয়তা নেই। এ প্রক্ষাপটে মৌসুম পরিবর্তনের ফলে আক্রান্ত সাধারণ রোগীরাও আজ বিভ্রান্ত ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। আমাদের এসব কটুক্তি, নেতিবাচক দৃষ্টি ও অনেক ক্ষেত্রে অতি উৎসাহের কারণেই বেশির ভাগ মানুষ এখন অনেকটা সামাজিক লজ্জায় ও ভয়ে তাদের যাতায়তের ইতিহাস ও রোগের উপসর্গ লুকানো এমনকি আক্রান্ত হয়েও নির্ধারিত চিকিৎসালয়ে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা না নেয়ার চেষ্টায় ব্যস্ত যা নিকট ভবিষ্যতের জন্যে অতি ভয়ংকর।
কাজেই নিজেকে ও দেশের মানুষকে কোভিড ১৯ এর প্রাদুর্ভাব থেকে রক্ষা করার জন্যে যেমন আমাদের সচেতন থাকতে হবে ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে তেমনই কেউ আক্রান্ত হয়ে গেলে আমাদের কথাবার্তায়, আচরণে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেের স্টাটাসে সে যাতে মনোবল হারিয়ে না ফেলে তার দায়িত্বও আমাদেরই নিতে হবে। তারা সবাই যে আমাদেরই একজন আর সবার স্বার্থেই যে সঙ্গনিরোধ ব্যবস্থা তাও আমাদেরকেই বুঝিয়ে দিতে হবে।
Home করোনায় মনের সুরক্ষা বিশেষজ্ঞের মতামত সামাজিক লজ্জা আর ভয়েই অনেকে রোগ লুকাচ্ছে: অধ্যাপক ডা. সুষ্মিতা রায়