সম্পর্কে সম অধিকার সম্পন্ন মানসিকতা অত্যন্ত প্রয়োজন

0
245
সম্পর্কে দু’জন মানুষের মধ্যে সম অধিকার সম্পন্ন মানসিকতা বজায় থাকা অত্যন্ত প্রয়োজন
অনেক্ষেত্রেই দেখা যায় সম্পর্কের মাঝে নারীর তুলনায় পুরুষের সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রবণতা অধিক থাকে। যখন দু’জনের মধ্যে কোন মত বিরোধ দেখা দেয় তখন একজন নারীকেই তার মতামত প্রত্যাহার করে নিতে হয় এবং পুরুষের মতামতই প্রাধান্য পায়। সম্পর্কের মাঝে এই অসামাঞ্জস্যতা সম্পর্কে জড়িয়ে থাকা উভয় মানুষের জন্যই ক্ষতিকারক এবং অবশ্যই অন্যায়।

ঘরে বা বাইরে সমাজে সব ক্ষেত্রেই দেখা যায় পুরুষ এবং নারীর জন্য ভিন্ন  ভিন্ন জীবন দর্শন বিরাজ করে। অনেক কাজের ক্ষেত্রেই দেখা যায় পুরুষ ভাবছে এটা নারীদের কাজ অতয়েব সে এটি করবেনা আবার নারী ভাবছে এটা তার কাজ নয় অতয়েব এটা তার পুরুষ সঙ্গীকেই করতে হবে। যেমন ধরুন, দৈনন্দিন জীবনে এমন একটি ধারণা প্রচলিত আছে যে, থালা বাসন পরিষ্কার করাটা নারীদের কাজ এবং অধিকাংশ পুরুষই এটি করতে অস্বীকার করেন এটা ভেবে যে এগুলো নারীদের কাজ!

মূলত এই নারী পুরুষ মতভেদের পেছনে যে কারণটি কাজ করে সেটি হল ক্ষমতার বণ্টন এবং অবশ্যই মানসিকতা এবং সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি। তবে, এসব ক্ষেত্রে কেউ যদি স্বেচ্ছায় অন্যের ক্ষমতা প্রদর্শনের কাছে হার মানে বা নিজে থেকে দাশত্য স্বীকার করে নেয় সেক্ষেত্রে সমস্যা দূর করা বেশ কঠিন। এবং যখন এই সমস্যা তার সহ্যের সীমা অতিক্রম করে তখন বিশেশজ্ঞের পরামর্শ অত্যাবশ্যক হয়ে পড়ে।

সন্তান লালন পালন থেকে শুরু করে দাম্পত্য জীবনের অনেক ক্ষেত্রেই নারী এবং পুরুষ উভয়কেই নিজের অবস্থান এবং কার্যকারিতা বুঝে বিভিন্ন ভূমিকা পালন করতে হয়। এসব ক্ষেত্রে নিজের ক্ষমতা প্রদর্শনের সীমা বুঝে ওঠা খুব জরুরী। একই সাথে ক্ষমতা প্রদর্শনের ক্ষেত্রে দুজনার মধ্যে সমভাব থাকাটাও গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত দেখা যায় পারিবারিক সকল সিদ্ধান্ত বিশেষ করে পরিবার পরিকল্পনা, জীবিকা ও অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত এবং সন্তানদের ভবিষ্যৎ সংক্রান্ত প্রায় সকল সিদ্ধান্তই একজন পুরুষ নিয়ে থাকেন। শারীরিক বল, মানসিক জোর কিংবা বুদ্ধিমত্তা, সকল দিক থেকে পুরুষকেই এগিয়ে রাখা হয়। একজন পুরুষ যদি কোন কারণে তার সঙ্গীর সাথে প্রতারণা করে,তাহলেও অদ্ভুতভাবে আমাদের সমাজ ঐ নারীকেই  দায়ী করে!

এই অবস্থায় একজন নারীর উচিৎ সকল প্রকার অধিকারের অনধিকার চর্চার বিপক্ষে সরব হওয়া, প্রতিবাদ করা। শারীরিক এবং মানসিক কোন দিক দিয়েই যে সে তার সঙ্গীর থেকে পিছিয়ে নেই সেটি তাকে বুঝিয়ে দিতে হবে। এ বিষয়ে নিজের চিন্তাভাবনা সঙ্গীর কাছে খোলামেলা রূপে প্রকাশ করতে হবে। এই অনমনীয় মানসিকতা তাকে অবশ্যই তার সঙ্গীর ভুল ভাঙ্গাতে সহায়তা করবে এবং সে অবশ্যই তার সঙ্গীর কাছে গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করতে পারবে।

একটি সম্পর্ককে গড়ে তুলতে দুটো মানুষেরই অবদান থাকে। কোন সম্পর্কই যত্ন ছাড়া টিকিয়ে রাখা সম্ভব হয়না।  সম্পর্ককে অর্থবহ করতে হলে তাই দুজন মানুষের মাঝে মনস্তাত্ত্বিক বোঝাপড়া যেমন, একে অপরের প্রতি দয়া, ক্ষমাশীল দৃষ্টিভঙ্গি, ধৈর্য, আগ্রহ, সহমর্মিতা থাকতেই হয়। আর যে বিষয়টি এই সকল গুণাবলীকে নিশ্চয়তা প্রদান করে সেটি হল দুজনার মাঝে সম অধিকার সম্পন্ন মনোভাব। সম অধিকার সম্পন্ন মনোভাবই দুজন সঙ্গীর মাঝে ভালবাসা বাড়ায় এবং সম্পর্ককে অর্থপূর্ণ করে।

করোনায় স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে

Previous article মহামারীতে সৃষ্টি হওয়া অস্তিত্ব শঙ্কা এবং আমাদের মানসিক দুর্বলতা
Next articleশিশুর বিষণ্ণতা দূর করতে করণীয়

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here