সর্বশেষ মানসিক স্বাস্থ্য জরিপে দেখা গেছে বাংলাদেশের প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে মানসিক রোগের হার ১৬.৮% এবং শিশু কিশোরদের মধ্যে এ হার ১৩.৬%। অর্থাৎ বাংলাদেশের প্রায় দুই কোটি মানুষ কোনো না কোনো মানসিক রোগে আক্রান্ত।
এ তো গেলো রোগে আক্রান্তের পরিসংখ্যান। রোগ ছাড়াও ছোটখাটো মানসিক সমস্যায় জর্জরিত অসংখ্য মানুষের জীবন। করোনা মহামারীকালে মানসিক রোগ এবং মানসিক সমস্যায় আক্রান্তের সংখ্যা নিঃসন্দেহে বেড়ে গেছে বহুগুণে।
করোনা মহামারীর প্রভাবে মানসিক স্বাস্থ্য সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ইতোমধ্যে বিভিন্ন দেশে করোনা প্রভাবে ব্যপকভাবে দেখা দিয়েছে মানসিক স্বাস্থ্য সেবার চাহিদা। দেশে দেশে মানসিক স্বাস্থ্য সেবার পরিধি বাড়ানোর প্রতি জোর দিতে বলছেন বিশেষজ্ঞরা। এমন পরিস্থিতির মধ্যে গত ১০ অক্টোবর পালিত হল বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস। এবছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ছিল “সবার জন্য মানসিক স্বাস্থ্য: অধিক বিনিয়োগ-অবাধ সুযোগ।” কিন্তু বাংলাদেশের মত জনবহুল দেশে সবার মানসিক স্বাস্থ্য নিশ্চিত করা কতটা সম্ভব তা নিয়েও রয়েছে নানা আলোচনা।
কেননা, ১৬ কোটি মানুষের দেশে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সংখ্যা মাত্র ২৬০ জন। সাইকোলজিস্টের সংখ্যাও তিনশ’র মত। রয়েছে সাইকোসোশ্যাল ওয়ার্কার, সাইকিয়াট্রি নার্স, অকুপেশনাল থেরাপিস্ট সহ সংশ্লিষ্ট জনবলের বিপুল ঘাটতি।
এত ঘাটতি সত্ত্বেও ১৬ কোটি মানুষের মানসিক স্বাস্থ্য নিশ্চিতে মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞদের ভূমিকা কি হতে পারে সে বিষয়ে মনের খবর টিভিতে প্রচারিত মানসিক স্বাস্থ্য দিবসের একটি ভার্চুয়াল আলোচনায় অংশ নিয়ে দেশের অন্যতম মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. ঝুনু শামসুন্নাহার ব্যক্ত করেন তার মতামত।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগবিদ্যা বিভাগের এই অধ্যাপক আপদকালীন উপায় হিসেবে ছোট ছোট প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ জনবল তৈরির প্রতি গুরুত্বারোপ করেন। এজন্য তিনি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কর্মরত চিকিৎসকদেরকে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রশিক্ষণের আওতায় আনার কথা বলেন তিনি।
দেশের বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজ এবং পর্যায়ক্রমে দেশের সকল সদর হাসপাতাল গুলিতে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, সাইকোলজিস্ট, সাইকোসোশ্যাল ওয়ার্কার পদে জনবল নিয়োগের জন্য বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সাইকিয়াট্রিস্টস (বিএপি) এর পক্ষ থেকে সরকারের কাছে দাবী জোরালো করার বিষয়ে তাগিদ দেন তিনি।
কমিউনিটি ক্লিনিক পর্যায়ে শিশুদের টিকাদানের সময় মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা চিহ্নিকরণে কিছু প্রশ্নপত্র রাখার উদাহরণ টেনে এধরনের উদ্যোগ আরও বাড়াতে বলেন তিনি।
সর্বোপরি জনবল সীমিত থাকায় মানসিক রোগ বিশষজ্ঞদেরকে ব্যক্তি পর্যায়ে সচেতনতার বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান অধ্যাপক ডা. ঝুনু শামসুন্নাহার।
স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে