হতাশাগ্রস্ততা একটি মারাত্বক মানসিক সমস্যা। তবে এই সমস্যার শিকার যে শিশু-কিশোররাও হতে পারে তা অনেকেই বুঝতে পারেন না। ছোটবেলার হতাশা বড় হয়েও মানসিক রোগের কারণ হতে পারে।
‘ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড স্ট্যাটিসটিকাল ম্যানুয়াল অফ মেন্টাল ডিজওর্ডারস (ডিএসএম-ফাইভ)’য়ের তথ্য মতে, হতাশাগ্রস্ততার মারাত্বক প্রভাবে ১০ থেকে ১৯ বছর বয়সি শিশু-কিশোরদেরও ভুগতে হয়। মানসিক স্বাস্থ্য-বিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনের আলোকে জানানো হল বিস্তারিত।
শিশু-কিশোরদের হতাশাগ্রস্ততা নিয়ে গবেষণার মাত্রা অপ্রতুল দাবি করেন বিশেষজ্ঞরা। তার মানে এই নয় যে হতাশাগ্রস্ত শিশু-কিশোরের সংখ্যা কম।
শিক্ষাজীবনের বিভিন্ন চড়াই-উৎরাই, আর্থ-সামাজিক জটিলতা, বাবা-মায়ের সঙ্গে সম্পর্কজনীত সমস্যা, শারীরিক, মানসিক কিংবা যৌন নিপিড়ন ইত্যাদিসহ অসংখ্য পারিবারিক সমস্যার কারণে হতাশায় নিমজ্জিত হয় শিশু-কিশোররা। এতে তারা বর্তমানে ক্ষতির শিকার তো হচ্ছেই, সঙ্গে তাদের ভবিষ্যতেও ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার ক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে।
হতাশার মাত্রা মারাত্বক পর্যায়ে পৌঁছালে আশঙ্কা আছে আত্মহত্যার পথ বেছে নেওয়ার। আর পরীক্ষা ও ফলাফলের সময় সেই আশঙ্কা সত্যি হওয়া খবরও আমরা শুনতে পাই। তাই আপনার সন্তানের মাঝে হতাশাগ্রস্ততার উপসর্গ দেখলে তাকে হেলাফেলা করবেন না। মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।
উপসর্গ
ডিএসএম-ফাইভ’য়ের তথ্যানুযায়ী হতাশাগ্রস্থতার উপসর্গ হল লম্বা সময় মন খারাপ, মেজাজ খিটখিটে থাকা, একসময় যে কাজ পছন্দ করত এখন তাতে আগ্রহ হারানো, আকস্মিক ওজন কমে যাওয়া যেমন একমাসেই শরীরের মোট ওজনের ৫ শতাংশ কমে যাওয়া, অতিরিক্ত ঘুমানো কিংবা একেবারেই ঘুমাতে না পারা, মানসিক অস্থিরতা, বিনাকারণে নিজের অজান্তেই শারীরিক নড়াচড়া, অবসাদ, অপরাধবোধ, নিজেকে মূল্যহীন মনে করা, সিদ্ধান্তহীনতা, মনোযোগের অভাব, মাঝেমধ্যে অনিশ্চিত শারীরিক সমস্যা, ব্যথা, অভিযোগ, স্কুল-কলেজ কামাই, পড়াশোনায় দখল হারানো, মাদকদ্রব্য সেবন, মৃত্যু কিংবা আত্মহত্যা নিয়ে চিন্তা করা ইত্যাদি।
এদের মধ্যে পাঁচ বা তারও বেশি উপসর্গ যদি সন্তানের মাঝে দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে লক্ষ্য করেন তবে বুঝে নিতে হবে আপনার সন্তান হতাশাগ্রস্ত এবং দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
এই উপসর্গগুলোর মিশ্রণ একজন মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা ধ্বংস করে দিতে পারে নিমেষেই। আপনার সন্তানের ভেতরে কী চলছে তা ভাষায় প্রকাশ করতে না পারাই স্বাভাবিক। আর একারণেই বাবা-মা ও অন্যান্য অভিভাবকদের জানতে হবে উপসর্গগুলো কী এবং কীভাবে তা শনাক্ত করা যায়।
শিশু-কিশোররা তাদের মনের কথা প্রকাশ করে ধীরে। আর তারা সেই ব্যক্তির কাছেই নিজের মনের কথা বলে যাকে সে মনে করে তার কথার মূল্য দেয়।তাই পরিবারের শিশু-কিশোরদের সঙ্গে আলাপ করতে হবে, তাদের বন্ধুসুলভ অভিভাবকের স্থানে বসতে হবে বাবা-মা ও অভিভাবকদের। আর তাদের কথাকে হালকা ভেবে উড়িয়ে দেওয়া যাবে না।
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে চিকিৎসকের সরাসরি পরামর্শ পেতে দেখুন: মনের খবর ব্লগ
করোনায় মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক টেলিসেবা পেতে দেখুন: সার্বক্ষণিক যোগাযোগ
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
করোনায় সচেতনতা বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও বার্তা দেখুন: সুস্থ থাকুন সর্তক থাকুন