বর্তমান যুগের ছেলেমেয়েদের চাইলেই আর আগের মতো শাসন করা যায় না, দিন বদলেছে।
যুগের সঙ্গে সঙ্গে বদলেছে শাসনের ধরণ। সন্তানকে সুশিক্ষা দিতে কোনো রকম বকা, আঘাত বা উচ্চস্বরে না ধমকিয়ে শিক্ষা দেওয়ার উপায় সম্পর্কে জানানো হল জীবনবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে।
সন্তান ঘরের পরিবেশ এলোমেলো রাখলে মাথায় বাজ পড়ার মতো অবস্থা হয়। এমন সময় রাগারাগি না করে সন্তানকে নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য কয়েকটি কৌশল অনুসরণ করা উচিত।
পরিস্থিতি থেকে বিচ্ছিন্ন রাখা: সন্তানের কর্মকাণ্ডে অনেক সময় নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখা কঠিন হয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে চিৎকার না করে নিজেকে শান্ত রাখুন এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে দিন। মনে রাখবেন, আপনি মুখে চুপচাপ থাকলেও আপনার কাজ কর্মে যেন আপনার অনুভূতি প্রকাশ পায়।
এটা বোঝা উচিত যে, চিৎকার করে কেবল ক্ষণিকের জন্য পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যায়। তাই সার্বিকভাবে সমাধান চাইলে মাথা ঠাণ্ডা করে কথা বলুন।
সন্তানকে বাছাই করার সুযোগ দিন: আপনার সন্তান যদি সকালের নাস্তায় বিস্কুট খেতে চায় তাহলে তাকে মজাদার বিকল্প হিসেবে রুটি ও বাটার, আলু পরটা ইত্যাদির মধ্য থেকে বাছাই করার সুযোগ দিন। তাছাড়া , সন্তানকে এটাও বোঝাতে পারেন যে তাদের সকালে স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে এবং দিনের অন্য যে কোনো সময় তারা বিস্কুট খেতে পারবে।
নিয়ম তৈরি করা: ঘরের ভেতর সুনির্দিষ্ট নিয়ম চালু করা যেতে পারে। আর সেটা লিখে দেয়ালে সাঁটিয়ে দিলে আরও ভালো হয়। যেমন- রাতে ১০টার পর টিভি দেখা যাবে না। আর এই ধরনের নিয়ম সঠিকভাবে মানার জন্য ‘ধন্যবাদ’ দিয়ে আদর করলে সন্তানের ওপর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
বার বার একই কথা না বলা: ‘এটা করবে না’, ‘এখন হোমওয়ার্ক কর’- এই ধরনের কথা বারবার বললে সন্তানের কাছে তেমন একটা দাম থাকবে না। বরং কথা না শুনলে ২৪ ঘণ্টার জন্য টিভি দেখা বন্ধ বা গ্যাজেট ব্যবহার করা যাবে না এই ধরনের বিষয় করলে সন্তান একসময় কথা শুনলে আর না শুনলে কী হতে পারে সেটার বিষয়ে ধারণা পাবে। ফলে ধীরে হলেও তার মধ্যে পরিবর্তন আসবে।
চিৎকার করছেন কেনো সেটা আগে ভাবুন: সন্তান কথা না শুনলে নিজে কেনো চিল্লাচ্ছেন সেটা আগে ভাবুন। যদি মনে হয় রাগ থেকে চিৎকার করে বকছেন সন্তানকে তাহলে চুপ করে গিয়ে নিজে আগে শান্ত হন। কারণ বেশিরভাগ সময় চিৎকার বা উচ্চস্বরে কথা বললে সন্তান কথা শুনতে চায় না।
এছাড়া রাগের মাথায় অভিভাবকরা অনেক সময় বিভিন্ন শাস্তির কথা বলে বসে। পরে পরিস্থিতি শান্ত হলে সেগুলো আর পালন করা হয় না। ফলে সন্তান সেগুলোকে আমলে নেয় না। তাই রাগের মাথায় কিছু না করে, বরং ঠাণ্ডা মাথায় সন্তানকে শাসন করুন।