একজন মানুষ জীবনে নানা ধরণের যৌন নির্যাতনের শিকার হতে পারে- সব চেয়ে বেশি যেগুলো ঘটে, সেগুলো হতে পারে আবেগীয়, শারীরিক, যৌন অথবা মানসিকভাবে। জবরদস্তি, ভীতি প্রদর্শন অথবা অবাঞ্ছিত যৌন কার্যকলাপে বাধ্য হওয়ার কারণে যৌন নির্যাতন কিন্তু নানাভাবে ব্যক্তির জীবনে দীর্ঘমেয়াদী ছাপ ফেলতে পারে। যৌন নির্যাতনের শিকার ব্যক্তি যৌন নির্যাতন অথবা লাঞ্ছনার বিরুদ্ধে বলতে গেলে প্রায়ই দ্বিতীয়বার নির্যাতিত হওয়ার মতো বিপর্যস্ততা অনুভব করেন। এই প্রক্রিয়াটি যে শুধু মানসিকভাবে ব্যক্তিকে বিপর্যস্ত করে, তা-ই নয়, বরং এটি আরো বেশি কষ্টকর, যেহেতু অধিকাংশক্ষেত্রে অপরাধী নির্যাতিতের পরিচিত থাকে। এমনকি নির্যাতনকারী ব্যক্তিটি হতে পারে খুব কাছের কোনো পারিবারিক সদস্য, হতে পারে স্বামী/স্ত্রী, হতে পারে ছেলেবন্ধু কিংবা মেয়েবন্ধুও। এতে সেই নির্যাতন নিয়ে আরো কষ্ট, অবিশ্বাস এবং জটিলতার মাত্রা আরো বাড়ে।
যৌন নির্যাতন বা লাঞ্ছনার শিকার ব্যক্তিদের অনেকে তাদের জীবনে নির্যাতনের দীর্ঘমেয়াদী প্রভাবের সম্মুখীন হতে পারেন। এই প্রভাবটি হতে পারে পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার (পিটিএসডি), অতিরিক্ত উদ্বেগ, প্যানিক অ্যাটাক কিংবা ঘরের বাহির অথবা সেই স্থানগুলো এড়িয়ে চলা, যেগুলো তাকে নির্যাতনকারী ব্যক্তিটির কথা মনে করিয়ে দিতে পারে।
যৌন নির্যাতনের প্রবল প্রভাবকে অতিক্রম করা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বেশ সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। যৌন নির্যাতনের শিকার ব্যক্তি প্রচণ্ড বিষণ্ণতা, দুঃখিত, একাকীত্ব এবং হতাশায় ভুগতে পারেন। অনেকে এই মানসিক অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য, দ্রুত আরোগ্য লাভের জন্য মনোরোগের চিকিৎসা নিয়ে থাকেন। এ চিকিৎসায় মূলত থাকে সাইকোথেরাপি, যা ব্যক্তিকে যৌন নির্যাতন অথবা লাঞ্ছনাকে বুঝতে এবং আরোগ্যলাভ করতে সাহায্য করে। কিছু ক্ষেত্রে মনোরোগ চিকিৎসা ব্যক্তির উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করে।
এটা উপলব্ধি করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, যদি কেউ যৌন নির্যাতনের শিকার হয়, তবে এটা কোনোভাবেই তার দোষ নয়, যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়াতে (বিশেষ করে শৈশবে নির্যাতনের শিকার হলে) সে কোনোভাবেই দায়ী নয়।
যৌন নির্যাতন ঘটে নির্যাতনকারীর ব্যক্তিত্বের সংকট, দৃষ্টিভঙ্গি অথবা অন্যের অধিকারকে সম্মান না করার কারণে। নির্যাতনকারী ব্যক্তিটি অপরাধী, নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিটি নন।
তথ্যসূত্র: সাইকসেন্ট্রাল.কম থেকে ভাষান্তর করেছেন সুপ্তি হাওলাদার
লিংক: https://psychcentral.com/sexual-abuse/