যে অভ্যাসে পুরুষত্বের ক্ষতি, পরিবর্তনের উপায়

যে অভ্যাসে পুরুষত্বের ক্ষতি ও পরিবর্তনের উপায়

পুরুষত্বের সমস্যা হলে অনেকেই মনে করেন তার বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হয়েছে। এ ধরণের মনোভাব মোটেই সঠিক নয়। তবে কিছু বদ অভ্যাস পুরুষের যৌন ধার কমায়। নিজে সুস্থ থাকতে ও লিঙ্গকে সুস্থ রাখতে ছাড়তে হবে বদ অভ্যাসগুলো।

কারণ বদ অভ্যাসগুলো মানুষকে শারীরিক ও মানসিকভাবে ক্ষতি করে। শারীরিক ও মানসিক কোনো সমস্যা আছে কিনা তা জানতে ও চিকিৎসা নিতে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন।

কিছু কিছু বদ অভ্যাসের কারণে পুরুষের জননেন্দ্রিয়ের কর্মক্ষমতার ক্ষতি হতে পারে। এসব বদ অভ্যাস প্রতিনিয়ত করতে থাকলে পৌরষত্বের ধার কমতেই থাকবে। যেসব বদ অভ্যাস পৌরষত্বের ধার কমায় সেগুলো থেকে কিছু বদ অভ্যাস উল্লেখ করা হলো:

ধূমপান

ধূমপান একটি বদ অভ্যাস। ধূমপান করলে অনেক সময়  পুরুষত্বের সমস্যা হতে পারে। তাই ধূমপান ত্যাগ করা ভালো।

অপর্যাপ্ত ঘুম

সুস্থ থাকতে হলে প্রতিদিন পর্যাপ্ত ঘুমের বিকল্প নেই। শরীরের ঘুমের চাহিদা পূরণ না হলে টেস্টোস্টেরনয়ের মাত্রা কমে যায়। ফলে অবসাদ হয়। যা থেকে পেশি ও হাড়ের ঘনত্বও কমে যেতে পারে। দুটি প্রভাবই পুরুষাঙ্গের জন্য ক্ষতিকর।

অলস সময় কাটানো

বসে বসে অলস সময় না কাঠিয়ে কাজের মধ্যে থাকতে হবে। কারণ যারা নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম করেন তাদের যৌন স্বাস্থ্য ভালো থাকে। কিন্তু যারা বসে বসে অলস সময় কাটান অর্থ্যাৎ পরিশ্রম করেন না তাদের যৌন অক্ষমতা দেখা দিতে পারে।

দাঁতের অপরিচ্ছন্নতা

দাঁত পরিষ্কার রাখা খুবই জরুরি। কারণ মুখের ব্যাকটেরিয়া সারা শরীরে প্রবাহিত হয়। যা পুরুষাঙ্গের ধমনির ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। তাই মুখের অপরিচ্ছন্নতার কারণে পুরুষত্বের ধার কমতে পারে।

ট্রান্স ফ্যাট

শরীর প্রচুর ট্রান্স ফ্যাট গ্রহণ করলে শুক্রাণুর মান খারাপ হতে থাকে। তাই শুক্রাণুর সুস্বাস্থ্য ধরে রাখতে স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে এবং ট্রান্স ফ্যাট খাওয়ার পরিমাণ কমাতে হবে।

কীভাবে আপনার অভ্যাস পরিবর্তন করবেন?

ছোট ছোট বালুকণা, বিন্দু বিন্দু জল যেমন মহাদেশ আর অতল সাগর গড়ে তোলে, তেমনি আমাদের ছোট ছোট দৈনন্দিন অভ্যাসও ইতিবাচকভাবে জীবনকে বদলে দিতে পারে । প্রতিনিয়ত ছোট ছোট অভ্যাস কীভাবে মানুষের জীবনকে বদলে দিতে পারে? তা নিয়েই আজকের আলোচনা।

রোজ সকালে পাঁচ মিনিট ব্যায়াম হয়তো সারাদিনের হিসাবে খুব বেশি কিছু নয়। এর ফলে যে পরিবর্তন আসে, তা তেমন লক্ষণীয়ও নয়। কিন্তু এই একই ব্যায়াম যদি কেউ বছরের পর বছর করতে থাকেন, তবে তাঁর শরীর ও মন ইতিবাচকভাবে বদলে যাবে, এটাই আশা করা যায়।

খারাপ অভ্যাসের ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা এমনই। ধূমপায়ীদের ক্ষেত্রে একটি সিগারেট হয়তো শরীরে তেমন কোনো নেতিবাচক পরিবর্তনই আনে না। কিন্তু একজন ধূমপায়ী যখন তাঁর এই বদ-অভ্যাসটি দিনের পর দিন, বছরের পর বছর চালিয়ে যান, তখন তাঁর শরীরে তৈরি হয় আলসার, হৃদ্‌রোগসহ নানা জটিল দীর্ঘমেয়াদি অসুখ।

অভ্যাস গড়ার আগে দরকার নিজের পরিচয় বদল। কেউ যদি নিয়মিত বই পড়তে চান, তবে তাঁর পরিচয় হবে একজন পাঠক। আবার কেউ যদি ধূমপান ছাড়তে চান, তবে অধূমপায়ী পরিচয়টি নিজের মধ্যে গেঁথে ফেলতে হবে। আমি ধূমপান ছাড়ার চেষ্টা করছি—এই চিন্তা করার চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর নিজেকে এটা বিশ্বাস করানো যে আমি একজন অধূমপায়ী।

অভ্যাস তৈরির জন্য বোঝা দরকার অভ্যাসের চক্রটি কীভাবে কাজ করে?

প্রথমে আমরা মস্তিষ্কে একটি সংকেত পাই। সেই সংকেত পেলে আমাদের কোনো একটি কাজ করার আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়। তারপর আমরা কাজটি করি। কাজটি করার পর আমাদের ভালো লাগা বা  ভালো অনুভূতি সৃষ্টি হয়। এই ভালো অনুভূতির জন্য আমরা সেই কাজটি আবার করি। এভাবেই একটি অভ্যাস দাঁড়িয়ে যায়।

অভ্যাস তৈরির জন্য নিয়মিত ভিত্তিতে এই অভ্যাসের চক্রটি চালিয়ে যাওয়া দরকার। ভালো অভ্যাস তৈরির ক্ষেত্রে চারটি নিয়ম মানতে হবে। অভ্যাসটিকে স্পষ্ট করুন, এটিকে আকর্ষণীয় করুন, অভ্যাসটি যেন হয় সহজ এবং এটি যেন আপনাকে তৃপ্তি দেয়।

আবার বদ অভ্যাস ত্যাগের ক্ষেত্রে মানতে হবে এর উল্টো নিয়ম:

খারাপ অভ্যাসের সংকেতকে ত্যাগ করুন, এটিকে অনাকর্ষণীয় করুন, অভ্যাসটিকে কঠিন করে ফেল এবং অভ্যাসটি যেন আপনাকে তৃপ্তি না দেয়।

উদাহরণটা বিষয়টাকে আরও পরিষ্কার করবে। কেউ যদি ভোরে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস করতে চান, তবে তাকে এটি ঠিক করতে হবে যে তিনি কখন ঘুম থেকে উঠতে চান। আগামীকাল ভোরে ঘুম থেকে উঠব—এমনটা বললে স্পষ্টতা থাকে না। তার চেয়ে এটা বলা ভালো, আমি আগামীকাল ভোর পাঁচটায় ঘুম থেকে উঠব।

আবার কেউ যদি বই পড়ার অভ্যাসটিকে আকর্ষণীয় করতে চান, তবে তিনি পাঠচক্রে যোগ দিতে পারেন। এর ফলে পড়ার অভ্যাসটি হতে পারে আরও মজাদার।

হুট করে কোনো অভ্যাস তৈরি করার চেয়ে বেশি কার্যকর হলো নিজের সাধ্যের মধ্যে সেটি শুরু করা। এক্ষেত্রে ২ মিনিটের পদ্ধতি অবলম্বণ করা যেতে পারে। ২ মিনিট পদ্ধতি অনুযায়ী, কঠিন অভ্যাসের ক্ষেত্রে নিয়মিত চালিয়ে যাওয়া খুব জরুরি। তাই অভ্যাসের যে অংশটুকু দুই মিনিটের মধ্যে করা সম্ভব, সেটুকু করে ফেলতে হবে শুরুতে।

লক্ষ্য বা পরিকল্পনা ঠিক করে আমি কোন দিকে যাব। কিন্তু জীবনে নিয়মিত পরিবর্তন নিশ্চিত করে সত্যিকারের উন্নতি। তাই লক্ষ্য নির্ধারণের পাশাপাশি দরকার সেটিকে বাস্তবায়ন করা বা অভ্যাসটিকে উপভোগ করা।

Previous articleসম্পর্কে অন্তরঙ্গতা বাড়াবে কিছু সহজ কৌশল
Next articleমনোরোগ বিশেষজ্ঞ এবং গণমাধ্যম: পরস্পরের প্রতি মনোভাব এবং প্রভাব বিষয়ে জরিপ চলছে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here