বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ মেডিকেল স্টুডেন্টস সোসাইটি (বিএমএসএস) , United Nations Youth Advisory Group (UNYAG) ও বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব সাইকিয়াট্রিস্টস (বিএপি)’র সম্মিল্লিত উদ্যাগে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউটে ৯ অক্টোবর এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। মানসিক স্বাস্থ্য দিবসে ২০২৫ এর প্রতিপাদ্য হলো – দুর্যোগ এবং জরুরি পরিস্থিতিতে মানসিক স্বাস্থ্য। এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সম্মেলনে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিক নিয়ে আলোচনা হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. মাহবুবুর রহমান, বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব সাইকিয়াট্রিস্টস (বিএপি)’র সদস্যা সচিব অধ্যাপক ডা. মো. নিজাম উদ্দিন, ডা. জুবায়ের মিয়া, ডা. মো. তৈয়ুবুর রহমান রয়েল, ডা. মো. রাহেনুল ইসলাম সহ United Nations Youth Advisory Group (UNYAG) ও বাংলাদেশ মেডিকেল স্টুডেন্টস সোসাইটি (বিএমএসএস) – এর অন্যান্য সদ্যারা।
মানসিক স্বাস্থ্য সেবাকে গুরুত্ব দেয়ার কথা উল্লেখ করে ডা. জুবায়ের মিয়া বলেন, No health without mental health- এটা সবজায়গায় প্রয়োগ করা দরকার। মানসিক স্বাস্থ্যর স্টিগমার কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, বর্তমানে শিক্ষিত মানুষের মাঝে এই স্টিগমা বেশি দেখা যায় যা দূর করা প্রয়োজন।
বাংলাদেশ মেডিকেল স্টুডেন্টস সোসাইটি (বিএমএসএস) এর কার্যক্রমের প্রশংসার করে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, আমরা যদি এই কার্যক্রমগুলোকে আরো জোরদার করতে পারি তাহলে মানসিক স্বাস্থ্যকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব।
মন আমাদের চালিকাশক্তি উল্লেখ করে বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব সাইকিয়াট্রিস্টস (বিএপি)’র সদস্যা সচিব অধ্যাপক ডা. মো. নিজাম উদ্দিন বলেন, বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস পালনের মূল উদ্দ্যশ্য হলো স্টিগমা দূর করা, সেই ধারাবাহিকতায় আমাদের আগাতে হবে। তিনি জানান, বর্তমান মেডিকেল শিক্ষার্থীদের কারিকুলামে মানসিক স্বাস্থ্য কে সংযুক্ত করা হয়েছে । বর্তমানের তরুণরাই আগামী দিনের সব কিছুকে পরিবর্তন করতে পারবে যদি তারা তাদের দৃষ্টি ভঙ্গী বদলায়, এমন আশা ব্যক্ত করে তিনি তাঁর বক্তব্য শেষ করেন।
অনুষ্ঠান শেষে বাংলাদেশ মেডিকেল স্টুডেন্টস সোসাইটি (বিএমএসএস) এর সুপারভাইসিং কাউন্সিলর ও United Nations Youth Advisory Group (UNYAG) মেম্বার ডা. ইফতেখার আহমেদ সাকিব বলেন, তরুন প্রজন্মের প্রতিনিধি ও মেডিকেল শিক্ষার্থীদের সাথে যারা মনোরোগ বিশেষজ্ঞ আছেন তাদের একটা মিল বন্ধন করে দেয়াই ছিলো এই আয়োজনের লক্ষ্য , বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবসে তরুনদের মতামতগুলোকে গুরুত্ব দেয়া ও দিন শেষে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ যারা আছেন তাদের সাথে মেডিকেল শিক্ষার্থীদের সাথে তরুন প্রজন্মের কানেকশনটা করিয়ে দেয়া। যেনো আমরা সবাইকে নিয়েই সুস্থ সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে পারি যেখানে সুস্থ দেহ ও সুস্থ মনই হবে আমাদের প্রতিপাদ্য। তিনি আরও জানান , এইবারের মানসিক স্বাস্থ্য দিবস এর প্রতিপাদ্য থেকে একটি কথা উঠে এসেছে যে, ঢাকার বাহিরে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে আমরা কিভাবে দুর্যোগের সময় মানসিক স্বাস্থ্য দিবো । এই বিষয়ে রেকমেন্ডেশন্স নিয়ে আমরা সরকারের সাথে ও জাতিসংঘের সাথে এই বিষয় নিয়ে বসবো। বাংলাদেশের তরুন প্রজন্মের জন্য একটি স্বাস্থ্য নীতি গড়ার পদক্ষেপ আমরা নিচ্ছি।
তরুনদেরকে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে গুরুত্বারোপ করে বাংলাদেশ মেডিকেল স্টুডেন্টস সোসাইটি (বিএমএসএস) – এর পাব্লিক রিলেশনস এন্ড কমিউনিকেশন এর ভাইস প্রেসিডেন্ট নিশাদ তাসনিম বলেন, বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব সাইকিয়াট্রিস্টস (বিএপি)’র মতো পেশাদার যারা আছে তাদের সহায়তায় আমরা যাতে তরুনদেরকে সেইভাবে প্রশিক্ষিত করতে পারি এটাই আমাদের চেষ্টা। বিশেষজ্ঞরাও মনে করেন আমাদের মতো তরুনদেরকে প্রশিক্ষনের মাধ্যমে এই বিষয়টাকে চ্যানেল করা যায় , যেমন একজন ট্রেইনার তৈরী করলাম সেখান থেকে আরো কিছুজন প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত হলো । এইভাবে প্রতিটি মেডিকেল কলেজে সাইকোলোজিকাল ফার্স্ট এইড বিষয়টাকে প্রতিষ্ঠিত করাই এখন লক্ষ্য। আপাতত এটি পাইলট প্রোগ্রাম হিসেবে শুরু করা যায় যেটা বিএমএসএস প্রপোজ করেছে। আর প্রতিটি মেডিকেল কলেজে এটি শুরু করার চেষ্টা চলছে।
এই ধরনের আয়োজন তরুণ চিকিৎসক ও চিকিৎসা শিক্ষার্থীদের মধ্যে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করে এবং দুর্যোগের সময় মানসিক সহায়তা কিভাবে প্রদান করা যায়, তা নিয়ে প্রস্তুতি গড়ে তোলে।
আরও পড়ুন-