মানসিক সমস্যা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে যার একটা বড় শিকার তরুণ সমাজ। হতাশা, এককিত্ব, আত্মহত্যার প্রবণতাসহ অনেক সমস্যায় জর্জরিত এই তরুণরা। এসব বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে লন্ডনের বিখ্যাত কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া কয়েকজন শিক্ষার্থীর সাথে। এরকম একজন হলেন Chelsea, বয়স ২১, সিটি ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন। তিনি বলেন, “আমি খুব গর্বিত যে আমার মাঝে সেই মানসিক শক্তি বিদ্যমান যার মাধ্যমে আমি নিজেকে স্থির রাখতে পারি। নিজেকে দূরে রেখেছি মাদকের আসক্তি হতে। আমি ঠিকমতো ঘুমাই এবং আমার সব কাজ সততার সাথে করি। আমি মনে করি সকলের উচিৎ তার নিজের কাছে স্বচ্ছ থাকা। আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে মানসিক কাউন্সেলিং এর সুযোগ আছে। এরকম সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে কাউন্সেলিং এর সুযোগ থাকা উচিৎ। যাতে করে ছাত্ররা তাদের সমস্যার কথা খোলাখুলি আলোচনা করতে পারে।” এরপর কথা হয়েছে একসময় মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত কয়েকজনের সাথে। এরকম একজন হলেন Sabrina, বয়স ২০, সেন্ট্রাল সেইন্ট মার্টিন স্কুল অব আর্টস এন্ড ডিজাইন। তার ভাষ্যমতে, “আমার অতীত জীবন আমার মানসিক স্বাস্থ্যে অনেক নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। আমি এসেছি এশিয়ার একটি একক পরিবার থেকে যেখানে এখনও মানসিক স্বাস্থ্যের ব্যাপারে অজ্ঞতা ও কুসংস্কার বিদ্যমান। আর্থিক ক্ষেত্রে আমি উন্নত। কিন্তু এটা আমার মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য যথাযথ ছিল না। স্বাহ্য পরীক্ষা করিয়ে দেখেছি আমার ভেতর ক্যান্সারের ঝুঁকি রয়েছে এবং আমি সবসময় সেই ভয়েই থাকতাম। একপর্যায়ে Chronic Fatigue Syndrm এ অনেকদিন ভুগেছি। আমি নতুন বন্ধু বানাতে পারতাম না এবং ঠিকমতো ক্লাস করতে পারতাম না। একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মানসিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সাহায্য নেই। তারা আমার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে যে, এই সমস্যায় আক্রান্ত আমি একাই এমনটা না। আমি বিশ্রাম নিতে থাকি ও অষূধ নেই। একপর্যায়ে সুস্থ্য হয়ে উঠি।” বিশ্ববিদ্যালয়ের মানসিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সহায়তায় সুস্থ হয়ে ওঠা এরকম আরো কয়েক জনের সাথে কথা হয়েছে।
Charls Rion, বয়স ১৯, ইউনিভার্সিটি অব কেন্ট। তার মতে, “মানসিকভাবে অসুস্থ অবস্থায় আমি যোগাযোগ করি বিশ্ববিদ্যালয়ের মানসিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। আমার মাকে এ ব্যাপারে জানালে তিনি বন্ধুর মতো আমার পাশে এসে দাঁড়ান। তিনি সবসময় আমাকে সঙ্গ দিতেন এবং আমার সকল কাজে সমর্থন দিতেন। তাঁর সাহায্যে আমি একসময় সুস্থ হয়ে উঠি।” বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থার কারণে অনেকে মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে। কথা হয়েছে ইউনিভার্সিটি অব ওয়্যারউইকে পড়া বাইশ বছর বয়সী Sophia’র সাথে। তিনি বলেন, “আমার অর্ধেক কোর্স ছিল সমাজবিজ্ঞানের ও অর্ধেক ছিল আইনের।সমাজবিজ্ঞান ছিল বেশ ভালো ও মজাদার কিন্তু আইন বিষয়টি আমার কাছে খুব বিরক্তিকর ছিল। আইনের পড়াশোনা একারণে আমাকে হতাশার দিকে নিয়ে যায়। এর শিক্ষকদের লেকচার আমার অবস্থা আরো খারাপ করে দেয়। আমার ভালো বন্ধু ছিল না ও বাবা মার সাথে ভালো সম্পর্ক ছিল না। একপর্যায়ে সাহায্য নেই বিশেষজ্ঞের। তাদের নির্দেশনা ও কাউন্সেলিং আমাকে সুপথে নিয়ে আসে। আমার মত
সমস্যাগ্রস্তদের উচিৎ জরুরি ভিত্তিতে ডাক্তারের সাহায্য নেয়া ও ভালো বন্ধু তৈরি করা। আসলে হতাশাই হলো মানসিক শক্তি ধ্বংসের কারণ।”
তথ্যসূত্র-
http://www.independent.co.uk/life-style/we-asked-university-students-how-they-deal-with-mental-health-issues-a7075646.html
আব্দুল্লাহ আল মামুন, আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মনেরখবর.কম