নেশা হলো এক ধরনের মস্তিষ্কবিকৃতি। আসলে নেশাগ্রস্তদের ব্রেনের গঠন এবং কর্মকাঠামোয় এমন কিছু ক্ষতিকর পরিবর্তন আসে যা অন্যদের মধ্যে নেই। এছাড়া মানুষের কোনও কাজ বা স্বভাবের মধ্যে পরিবর্তন আনার জন্য প্রেরণার প্রয়োজন হয়।
প্রচলিত অন্য যে কোনও চিকিৎসাব্যবস্থার চেয়ে মাদকাসক্তি থেকে নিরাময়ে মেডিটেশনই এখন বেশি কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে নানা গবেষণায়। এ গবেষণাগুলোর একটা মেটা এনালিসিস করেছেন মহাঋষি ইউনিভার্সিটি অব ম্যানেজমেন্টের চার্লস আলেক্সান্ডার ও তার সহযোগীরা। তারা দেখেছেন, সবগুলো ফলাফলেই আসক্তি থেকে রোগীরা অন্য যে কোনও প্রক্রিয়ার চেয়ে মেডিটেশনে বেশি কার্যকরভাবে নিরাময় হয়েছেন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই। তাদের পুনরায় মাদকাসক্ত হওয়ার হারও অনেক কম।
ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটন ইন সিয়াটলের বিজ্ঞানী বাওয়েন জেলখানার মাদকাসক্ত বন্দিদের ওপর বিপাসনা মেডিটেশনের প্রভাব বিষয়ে এক গবেষণা চালান। এতে দেখা যায়, জেলে থাকার সময় যারা মেডিটেশন কোর্সে অংশ নিয়েছেন জেল থেকে বেরিয়ে তাদের মাদকাসক্তির পরিমাণ কমেছে। এ সব মাদকের মধ্যে এলকোহল যেমন আছে তেমনি আছে কোকেন, মারিজুয়ানা ইত্যাদিও। মেডিটেশনকারী গ্রুপের মধ্যে মাদকের প্রভাবজনিত মানসিক সমস্যাও কম। সামাজিক পরিবেশের সঙ্গে তারা আরও ভালোভাবে খাপ খাওয়াতে পারছে।
বিটেল এবং অন্যান্যের গবেষণায় দেখা গেছে, এইচআইভি ঝুঁকিপূর্ণ আচরণে লিপ্ত মাদকাসক্তদের মেডিটেশন ড্রাগের নেশা এবং পরিণামে এইচআইভি থেকে রক্ষা করেছে।
আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে, মেডিটেশন এলকোহল এবং ধূমপানের প্রবণতা কমাতে সাহায্য করে। ক্যালিফোর্নিয়া স্কুল অব প্রফেশনাল সাইকোলজি, বার্কলের গবেষক ক্যারোল বলেন, মেডিটেশন জীবনে একটি উদ্দেশ্যপূর্ণতা তৈরি করে যা মাদকাসক্তি থেকে মুক্তির প্রধান কারণ।
Previous Articleসন্তান একগুঁয়ে হলে কী করবেন?
Next Article বইমেলায় সাইকিয়াট্রিস্টদের যত বই