মাদকাসক্তদের র্দীঘমেয়াদী চিকিৎসা ও পূর্নবাসনের ক্ষেত্রে স্বজনদের সদিচ্ছার অভাবই বড় বাধা বলে মনে করেন মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞরা।
তাঁরা বলেন, মাদকাসক্তদের নিরাময় একটি র্দীঘমেয়াদী প্রক্রিয়া। কিন্তু একবার চিকিৎসা নিয়ে ফিরে যাবার পর বেশিরভাগ রোগীরা আর যোগাযোগ রাখেন না এবং তাদের আত্মীয় স্বজনরা এ ক্ষেত্রে সহযোগীতাপূর্ণ আচরণ করেন না।
গতকাল (২২ জুলাই) বগুড়া শহরের পর্যটন মোটেল এর কনফারেন্স হলে “মনের খবর” আয়োজিত ‘আসক্তি পূর্নবাসন: সংকট ও সম্ভাবনা’ র্শীষক আলোচনা সভায় তাঁরা এ মত প্রকাশ করেন।
সভায় বগুড়া শহরের ১১ টি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র থেকে চিকিৎসা নেওয়া শতাধিক রোগী অংশগ্রহণ করেন। তাঁরা তাদের বাস্তব জীবন থেকে আসক্ত জীবনের নানা অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।
আলোচনা সভায় অতিথি হিসবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান ও মনের খবর সম্পাদক অধ্যাপক ডা. সালাহ্উদ্দিন কাউসার বিপ্লব একই বিভাগের অধ্যাপক ও চাইল্ড এ্যান্ড অ্যাডোলেসন্টে সাইকিয়াট্রিস্ট ডা. নাহিদ মাহজাবিন মোর্শেদ, কনসালটেন্ট ডা. আতিকুর রহমান, রংপুর মেডিকেল কলেজ এর মনোরোগবিদ্যা বিভাগের সাবেক প্রধান অধ্যাপক ডা. জ্যোর্তিময় রায়, বগুড়া মেডিকেল কলেজ এর মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মারুফুল হক, ডা. শাহরিয়ার ফারুক অনিক, সিরাজগঞ্জ মেডিকেল কলেজ এর মনোরোগবিদ্যা বিভাগের সহকারি অধ্যাপক ডা. ওয়ালিউল হাসনাত সজীব ও ইনসেপ্টা ফার্মাসিটিক্যসলস লিমিটেড এর সিনিয়র ব্র্যান্ড ম্যানেজার সাবা রেজা।
সারাদেশ এবং বগুড়ার মাদক পরিস্থিতি নিয়ে সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডা. শাহরিয়ার ফারুক অনিক। তিনি জানান দেশে এখন মাদকাসক্তদের সংখ্যা প্রায় ৭০ লাখ এবং এর বিপরীতে সরকারি পূর্নবাসন কেন্দ্রের সংখ্যা ১২৫ টি। মাদকাসক্তদের জন্য জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে ৫০ টি বেড এবং পাবনা মানসিক হাসপাতালে ২৫ টি বেড রয়েছে। এবং দেশে মাত্র ২৩০ জন মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ রয়েছেন।
বগুড়ার ক্ষেত্রে এই পরিসংখ্যান তুলে ধরতে গিয়ে ডা. অনিক জানান, বগুড়াতে মাদকাসক্তদের সংখ্যা প্রায় ৭০ হাজার। আর এখানে মাত্র ৭ জন এডিকশন প্রফেনালিস্ট রয়েছেন। এখানে পূর্নবাসন কেন্দ্রের সংখ্যা ১৫ টি যার ধারণক্ষমতা ১৬০। তিনি সারাদেশে মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ , এডিকশন প্রফেসনালিস্ট এবং মাদকাসক্তদের চিকিৎসায় দক্ষ নার্সের সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের তাগিদ দেন।
তাঁর প্রবন্ধ উপস্থাপনের পর সভায় অংশগ্রহণকারীরা তাদের মাদকে আসক্ত হওয়ার গল্প, সেখান থেকে ফেরার গল্প এবং সুস্থ জীবনে ফেরার পর তাদের অভিজ্ঞতার গল্প বলেন এবং নানা প্রশ্ন করেন। অতিথিরা তাদের প্রশ্নের জবাব দেন। এসময় বেশ প্রাণবন্ত পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
অনুষ্ঠানে মনের খবর এর পক্ষ থেকে বগুড়ার ১১ টি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র শুভেচ্ছা স্মারক প্রদান হয়। এবং অংশগ্রহণকারীদের নিয়ে র্যাফেল ড্র অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানটি বৈজ্ঞানিক সহযোগী হিসেবে ছিল ইনসেপ্টা ফার্মাসিটিক্যালস লিমিটেড।
** বিস্তারিত আসছে……