ডা. হোসনে আরা
সহযোগী অধ্যাপক, মনোরোগবিদ্যা বিভাগ
শহীদ মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ উত্তরা, ঢাকা
মাথাব্যথা হয়নি এরকম মানুষ হয়ত খঁুজেও পাওয়া যাবেনা, ছোট বড় সবাই জীবনে কখনো না কখনো মাথা ব্যথায় ভুগে থাকে, সত্যিকার অর্থে আমাদের শরীর ও মনের সব কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করে মস্তিষ্ক, আর মস্তিষ্কের বিভিন্ন রোগের কারণেই মাথাব্যথা হয়ে থাকে, তাই মাথাব্যথা হলে আমরা সবাই কমবেশি ভাবনায় পড়ে যাই। চিকিৎসা বিজ্ঞানে ১৫০—২০০ মাথাব্যথার কথা বলা আছে, প্রতিটি মাথাব্যথার সুনির্দিষ্ট কারণ রয়েছে, সামান্য কারণে যেমন মাথাব্যথা হতে পারে তেমনই বড় রকমের অসুখের জন্যও মাথাব্যথা হতে পারে।
মোটা দাগে মাথা ব্যথাকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। তার মধ্যে একটি হলো প্রাইমারি হেডেক (যার উৎপত্তিস্থল মস্তিষ্ক ও মাথার হাড়ের আবরনের চারপাশের রক্তনালি, স্নায়ু ও তাদের আবরন, মাথার চামড়ার নিচের মাংসপেশি) যেমন:
— মাইগ্রেন
— দুশ্চিন্তার কারণে মাথাব্যথা ক্লাসটার হেডেক ইত্যাদি
আর আরেকটি হলো সেকেন্ডারি হেডেক। এর মধ্যে রয়েছে:
— সাইনোসাইটিস
— মাসটয়ডাইটিস
— মস্তিষ্কের বাইরের পর্দার প্রদাহ
— মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ
— মস্তিষ্কের বাইরে রক্তক্ষরণ
— মস্তিষ্কের টিউমার
— চোখের প্রেশার
— খিঁচুনি পরবর্তী মাথাব্যথা
মাথাব্যথার অনেক কারণ রয়েছে, তার মধ্যে প্রচলিত কিছু কারণ হলো:
১. মাইগ্রেন: মাথাব্যথার মধ্যে অভিজাত মাথাব্যথা হল মাইগ্রেন, এটার নাম প্রায় সবার জানা। মেয়েরা এতে বেশি ভুগে থাকে। এই মাথা ব্যথায় সাধারণত মাথার বিশেষ একপাশে তীব্র ব্যথা হয় যা কয়েক ঘন্টা থেকে কয়েকদিন পর্যন্ত তীব্র মাথাব্যথা থাকতে পারে। মাথাব্যথার পাশাপাশি বমি বা বমি বমি ভাব, চোখে বিভিন্ন আলো দেখা এসব থাকতে পারে, আলো এবং শারিরীক পরিশ্রমে এই মাথাব্যথা বাড়তে পারে।
২. দুশ্চিন্তাজনিত মাথাব্যথা বা টেনশন টাইপ হেডেক: মাথাব্যথার প্রচলিত কারণগুলোর মধ্যে এটাই সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায়। আমাদের সবারই কমবেশি এই মাথাব্যথার সাথে পরিচয় আছে। এই মাথাব্যথা খুব বেশি তীব্র না হলেও পুরো মাথা জুড়ে সারাক্ষণই থাকে। মাথার চারদিকে একটি আঁটসাঁট ব্যান্ড পরে থাকার মত অনুভূতি হয়। অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা, কাজের চাপ, বিশ্রামের অভাব, পানি শূন্যতায় এই মাথাব্যথা বাড়তে পারে।
৩. ক্লাস্টার হেডেক: এই ধরনের মাথাব্যথা চোখের চারপাশ থেকে শুরু হতে পারে, হঠাৎ করে শুরু হয়ে বেশ তীব্র হয়, মাথার বিশেষ একপাশ থেকে শুরু হয়ে চোখের পেছনের দিকে যায়, দিনে রাতে একটি নিদিষ্ট সময় পরপর হয়, নির্দিষ্ট সময় নিয়ে থাকে, তাই একে ক্লাস্টার হেডেক বলে। এই মাথাব্যথায় চোখ লাল হয়, চোখ দিয়ে পানি পড়ে, চোখ ফুলে যেতে পারে, চোখের দৃষ্টি শক্তি সামান্য ব্যাহত হয়।
৪. সাইনাসের কারণে মাথাব্যথা: আমাদের নাকের দুপাশের হাড় ও কপালের হাড়ের ভেতর ছোট ছোট কিছু ফাঁকা জায়গা থাকে, এগুলোকে সাইনাস বলে। এই ফাঁকা জায়গাগুলোতে বাতাস থাকে যাতে আমাদের মস্তিষ্কের ভারের সমতা বজায় রাখে, এইসব সাইনাসের আবরণে প্রদাহ হলে বাতাস ও সর্দি জমে, এর ফলে সাইনাসগুলোর জায়গায় তীব্র ব্যথা হয়, এটাই সাইনো সাইটিস নামে পরিচিত। এখানে মাথাব্যথার পাশাপাশি নাক বন্ধ, সর্দি, হাঁচি—কাশি থাকে।
কখন ডাক্তারের কাছে যাবেন?
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডঐঙ) হিসাব মতে, বিশ্বের প্রায় অর্ধেক বয়স্ক লোক বছরে একবার মাথাব্যথা অনুভব করে। এর মধ্যে শতকরা নব্বই ভাগই জটিলতা বিহীন, তাই এ নিয়ে মাথাব্যথার কারণ নেই, কিন্তু কিছু কিছু মাথাব্যথা আবার মারাত্মক এবং জীবনের জন্য ঝঁুকিপূর্ণ। অনেক সময় আমরা এটিকে গুরুত্ব দেই না, মাথাব্যথার সাথে যদি জ্বর, বমি, দৃষ্টি শক্তি ঝাপসা, ডিপ্লোপিয়া (একটি জিনিস দুটো করে দেখা), বয়স ৫৫ এর উপরে হলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
- এপোয়েন্টমেন্ট নিতে যোগাযোগ করুন-Prof. Dr. Shalahuddin Qusar Biplob
- চেম্বার – MK4C -মনের খবর ফর কেয়ার
মগবাজার রেইল গেইট।
নাভানা বারেক কারমেলা, লিফটের ৩,
(ইনসাফ কারাকাহ হাসপাতালের বিপরীতে)।
চেম্বার সিরিয়াল – ০১৮৫৮৭২৭০৩০
আরও পড়ুন-