তরুণদের মধ্যে মাদকাসক্ত হওয়ার প্রবণতা বেশি বলে গবেষণায় উঠে এসেছে। অনেক গাঁজা সেবনকারীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গাঁজা কোন শুরুর দিকে খাওয়ার মতো মাদক না। অতিরিক্ত আফিম ব্যবহারের সমস্যার মতোই গাঁজা সেবনও বর্তমানে খুব জটিল ধরনের মাদক সমস্যা।
কিশোরদের জন্য চিন্তার কারণ হচ্ছে, তারা যত ছোট বয়সে গাঁজা সেবন শুরু করবে পরবর্তী বয়সে তাদের মধ্যে অন্যান্য মাদক গ্রহনের প্রবণতা বৃদ্ধি পাবে।
ফ্রান্সে বাবা-মা তাদের সন্তানদের খুব ছোট বয়সেই মদ খাওয়ার অনুমতি দেয়। এই জন্য সেখানে শিশুদের মধ্যে পরিণত বয়সে অধিক মাদকাসক্ত হয়ে গড়ে উঠার প্রবণতা বেশি। তার মানে এই নয় যে, ছোট বয়সে ধূমপান করছে সে পরবর্তীতে অবশ্যই মাদকাসক্ত হবে। কিন্তু গবেষণায় জানা যায় যারা গাঁজার প্রতি আসক্ত, তাদের পরবর্তীতে হিরোইনের প্রতি আসক্ত হবার প্রবণতা বেশি থাকে।
আমেরিকায় গাঁজা বৈধ করা হয়েছে চিকিৎসা ক্ষেত্রে কাজে লাগানোর জন্য। কিন্তু গবেষণায় দেখা যায়, গাঁজার এই বৈধতাই তরুণদের মধ্যে গাঁজার প্রতি আসক্ত হবার প্রবণতা বাড়িয়ে তুলছে।
সন্তানরা যদি বাবা মায়ের থেকে অধিক সময় আলাদা থাকে বা একা থাকে, তবে তাদের মধ্যে মদ খাওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে। তারা বাবা মায়ের মদের বোতল থেকে মদ খাওয়া শিখতে পারে বা অন্য কোন ভাবেও শিখতে পারে। কিন্তু, আমরা প্রায়ই শুনি বেশিরভাগ মানুষই মাদকের স্বাদ গ্রহণ করা শিখে বন্ধুদের কাছে থেকে।
গবেষণায় আরো দেখা গিয়েছে যে, যারা পনের বছর বয়সের আগে ধূমপান শুরু করে তাদের মধ্যে ২৮ বছর বয়সের পরে অধিক মাদকাসক্ত হওয়ার প্রবণতা বেশি।
১৯-২১ বছর বয়সের মধ্যে যারা গাঁজা সেবন করে, তাদের মধ্যে ৭০ শতাংশ মানুষ ৩০ বছর বয়সের মধ্যেই অনেক শুকিয়ে যায় বলেও দেখা গেছে। আর যারা ১৫ বছর বয়সের আগে ধূমপান শুরু করে, তাদের ২০ এর পরে মাদকাসক্ত হবার প্রবণতা ৬৮ শতাংশ। কিন্তু যারা ১৫-১৭ বছর বয়সে ধূমপান করে তাদের, মাদকাসক্ত হবার প্রবণতা ৪৪ শতাংশ।
যারা ভাং খায়, তাদের পড়াশোনায় অনীহা, মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি এবং অন্যান্য মাদক গ্রহণের প্রবণতা বৃদ্ধি পায়।
৯-৩০ বছর বয়সের মধ্যে যারা গাঁজা সেবন করে, তাদের পরবর্তীতে দীর্ঘস্থায়ী স্বাস্থ্যগত ও সামাজিক সমস্যাও হতে পারে। এমনকি ব্রেইনের জটিলতাসহ সিজোফ্রেনিয়া হতে পারে।
এজন্য বাবা মায়ের উচিৎ, সন্তানদের প্রতি কঠোর শাস্তি ও ভালোবাসা দেওয়ার বিষয়ে সতর্ক হওয়া। বাবা-মা সব সময় তাদের সঙ্গেই আছে, এ বিষয়ে সন্তানদের আস্বস্ত করা। এতে করে অন্তত মাদকের প্রতি প্রবণতা কিছুটা নিয়ন্ত্রনে আসতে পারে।
তথ্যসূত্র: সাইকোলজি টুডে।
অনুবাদক: সুস্মিতা বিশ্বাস।