বাংলাদেশে এসিড সহিংসতা কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। তবে বেড়েছে নারী ও শিশুর প্রতি অন্যান্য সহিংসতা। তাই এসিড সহিংসতার মতো নৃশংসতম এই সহিংসতা যে সকল পদ্ধতি অনুসরণ করে ক্রমান্বয়ে কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে তেমনি একই পদ্ধতি অনুসরণ করে নারী ও শিশুর প্রতি অন্যান্য জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতাও কমানো সম্ভব হবে।
গতকাল (২২ জুলাই) রাজধানীর সিরডাপ অডিটোরিয়ামে লিঙ্গ ভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধে ইতিবাচক চর্চা এবং সম্ভাব্য কৌশল সমুহ সম্পর্কে গবেষণার অভিজ্ঞতা বিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। এসিড সারভাইভারস ফাউন্ডেশন গত অক্টোবর ২০১৮ থেকে জুলাই, ২০১৯ পর্যন্ত মানবাধিকার প্রোগ্রাম, ইউএনডিপি এর সহায়তায় এই গবেষণা করে। গবেষণার প্রধান উদ্দেশ্য- ‘বাংলাদেশে এসিড সহিংসতা হ্রাসের পিছনে কি কি মূল বিষয় কাজ করেছে এবং এর বর্তমান অবস্থা অনুধাবন করা; এসিড সারভাইভারস ফাউন্ডেশন এর বায়ো-সাইকো-সোস্যাল এপ্রোচ এর কার্যকারীতা পরীক্ষা করে দেখা এবং এই এপ্রোচ কিভাবে নারীর প্রতি অন্যান্য ধরনের জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধে কাজে লাগানো যায় তা দেখা । একই সঙ্গে আরো দেখা হয়েছে, বাংলাদেশে নারীর প্রতি সহিংসতার পরিস্থিতি উন্নয়নে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা/এপ্রোচসমুহ সুপারিশ আকারে প্রস্তাব করা।
গবেষকদল বাংলাদেশে এসিড ও অন্যান্য সহিংসতার বর্তমান প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ করেছেন। তারা গত ১০ বছরের এসিডসহ অন্যান্য সহিংসতার যেমন ধর্ষণ, যৌন নির্যাতন, বাল্য বিবাহ ও অন্যান্য দগ্ধ সহিংসতার ট্রেন্ড বিশ্লেষণ করে দেখেছেন যে এসিড সহিংসতা হ্রাস পেলেও নারী ও শিশুর প্রতি অন্যান্য জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এবং গবেষণালব্ধ ফলাফল থেকে মেধা যায় যে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এসিডসহ অন্যান্য সহিংসতার মূল কারণগুলো হচ্ছে শারিরীক, মানসিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক যা সমাজে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য ও শিশু অধিকার সংসদীয় ককাস কো-চেয়ার আরোমা দত্ত । বিশেষ অতিথি ছিলেন মো. মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আইনুল কবীর এবং ইউএনডিপি’র মানবাধিকার বিষয়ক প্রোগ্রামের চীফ টেকনিক্যাল এডভাইসর শর্মিলা রসুল। সভায় গবেষণা উপস্থাপনা করেন যৌথভাবে ফাউন্ডেশনের প্রধান গবেষক ফজিলা বানু লিলি, নির্বাহী পরিচালক সেলিনা আহমেদ।
সভায় জানানো হয়,-এসিড সহিংসতা নির্মূল করার লক্ষে ১৯৯৯ সালে ১২ মে এসিড সারভাইভারস ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠিত হয়। জন্মলগ্ন থেকেই এসিড সহিংসতা প্রতিরোধ এবং এসিড আক্রান্তদের চিকিৎসাসেবা প্রদান, আইনী সেবা ও পুনর্বাসন এবং মর্যাদাপূর্ণ জীবন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৯৯৯ সাল থেকে এএসএফ সমগ্র বাংলাদেশের সরকার এবং বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার সমন্বয়ে একযোগে কাজ করে আসছে।