আপনার সন্তানকে কতবার বলেছেন তারা খুব ভালো কাজ করেছে? কখনো তাকে বলেছেন কি তাকে নিয়ে আপনি গর্বিত? আপনি তাদের বাড়ির কাজে সাহায্য করেছেন? আপনি কি আপনার সন্তানের সাথে মানসিকভাবে সংযুক্ত? এমন অনেক প্রশ্ন আছে, যা আপনি কখনো আপনার সন্তানকে করেননি তাদের প্রশংসার জন্য।
২০১২ সালের জাতীয় পর্যায়ে করা একটি দেখা গেছে, বাবা-মায়েদের আচরণ ও কিশোরর কিশোরীদের আত্মহত্যার চিন্তা, এ দু’য়ের মধ্যে গভীর সম্পর্ক রয়েছে।
ইউসি অধ্যাপক কিথ কিং এবং রেবেকা ২০১২ সালের ‘মাদকের ব্যবহার এবং স্বাস্থ্য’ নিয়ে জাতীয় পর্যায়ের পরিসংখ্যানের ফলাফলের একটি ফলো-আপ বিশ্লেষণ পরিচালনা করেন। তাঁদের ফলাফলে দেখা গিয়েছে, যেসকল শিশুদের বয়স ১২-১৭ এর ভেতর তাদের মধ্যে আত্মহত্যা করার চিন্তা এবং প্রস্তুতি বেশী দেখা গিয়েছে। তারা বাবা মায়ের আচরণ দেখে তারা ভাবে বাবা মা তাদেরকে খেয়াল করছে না বা যত্ন নিচ্ছে না। কিং আরো বলেন, ‘শিশুদের জানা দরকার যে, কেউ তাদের পাশে আছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত বেশীরভাগই এটা জানে না। এটাই মূল সমস্যা’।
দেখা গিয়েছে, ১২ এবং ১৩ বছরের শিশুরা বাবা মায়ের আচরণ দ্বারা সবচেয়ে বেশী প্রভাবিত হচ্ছে। এই বয়সের শিশুদের তাদের বাবা মা খুব কম বা কখনোই ইতিবাচক কথা অথবা উৎসাহমূলক কথা বলেনি। এজন্যই তাদের মধ্যে আত্মহত্যা করার চিন্তা এসেছে অন্তত পাঁচ গুণ বেশী অথবা অন্তত সাত গুণ বেশী তারা আত্মহত্যা করা পরিকল্পনা করেছে।
গবেষকরা জানান, অনেক বাবা মা-ই তাঁকে জিজ্ঞেস করেন যে তারা কি করবে। তিনি তাদের শিশুদের আরো উৎসাহমূলিক কথা যেমন ‘আমি তোমাকে নিয়ে গর্বিত। তুমি চমৎকার কাজ করেছো’। তাঁরা সন্তানের সাথে আরো সংযুক্ত হতে বলেন এবং বিভিন্ন কাজে সাহায্য করার কথাও বলেন। গবেষক রেবেকা বলেন যে, এটা বাবা মা এবং পরিবারের সঙ্গে শিশুর সম্পর্ক ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিশ্চিত করে।
স্কুল-বয়সী টিনএজারদের আত্মহত্যা করার প্রবণতা অনেক বেশী, যখন তারা মানসিকভাবে তাদের বাবা মায়ের সাথে যুক্ত হতে পারে না। যদিও এই প্রবণতা ১২-১৩ বছর বয়সী শিশুদের তুলনায় অল্প।
মনে হতে পারে এই প্রবণতা ছোট বয়সের শিশুদের তুলনায় অনেক বেশি। কিন্তু চৌদ্দ ও এর বেশী বয়সের বাচ্চাদের বাবা মায়ের সাথে সংযুক্তি কম থাকার ফলে তারা তা সামলে নেয়ার নিজস্ব পদ্ধতি আয়ত্ত্ব করে ফেলে। যেমন মাদক গ্রহণ, যৌন আচরণের প্রতি তীব্র ঝোঁক ইত্যাদি। কিং বলেন, ‘এই আচরণ লিঙ্গ, জাতিভেদে সবার মধ্যেই দেখা যেতে পারে’।
তথ্যসূত্র: সাইপোষ্ট।
অনুবাদটি করেছেন সুপ্তি হাওলাদার।