নাগরিক কল্যাণকে অগ্রাধিকার দিয়ে বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে রাষ্ট্রের পুরো বাজেট সাজালো নিউজিল্যান্ড। এই বাজেটে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বা অন্যান্য অগ্রাধিকার বাদ দিয়ে নাগরিকদের কল্যাণে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এতে মানসিক স্বাস্থ্য সেবা, শিশু দারিদ্র, গৃহহীনতা এবং পারিবারিক সহিংসতা নিরসনে ব্যয় হবে শত শত কোটি ডলার।
গত মার্চে ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে ভয়াবহ হামলার পর প্রথমবারের মতো নতুন আর্থিক বাজেট ঘোষণা করলো নিউজিল্যান্ড। গত বৃহস্পতিবার (৩০ মে) এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্ন ও অর্থমন্ত্রী গ্রান্ট রবার্টসন নতুন এই বাজেট ঘোষণা করেন।
গত ১৫ মার্চ (শুক্রবার) ২৮ বছর বয়সী অস্ট্রেলীয় নাগরিক ব্রেন্টন ট্যারান্ট নামের সন্দেহভাজন হামলাকারীর লক্ষ্যবস্তু হয় নিউ জিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদ। শহরের হাগলি পার্কমুখী সড়ক ডিনস এভিনিউয়ের আল নূর মসজিদসহ লিনউডের আরেকটি মসজিদে তার তাণ্ডবের বলি হয় অর্ধশত মানুষ। এই ঘটনার মুসলমান সম্প্রদায়ের প্রতি সহমর্মিতার নানা নজির দেখিয়ে প্রশংসিত হয়েছেন নিউ জিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী আরডার্ন। এবারে বাজেট বরাদ্দের ক্ষেত্রেও সামাজিক কল্যাণকেই অগ্রাধিকার দিলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী জাসিন্দা আরডার্ন বলেন, ‘একটি মেসেজ আমি আবারও দিতে চাই- আমি সবসময়ই বলেছি অগ্রাধিকারের বিবেচনাই হলো রাজনীতি। আপনার সীমিত বাজেট আছে আর আপনাকে অর্থনেতিক ভারসাম্য, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, জনগণের দেখাশোনা আর আমাদের পরিবেশ সবকিছুতেই আপনাকে ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করতে হবে। আর এই বাজেট দেখিয়েছে যে এর মধ্য দিয়ে সবকিছুই করা যায়’।
অর্থমন্ত্রী রবার্টসন জানিয়েছেন, মানসিক স্বাস্থ্য খাতে প্রায় ২০০ কোটি ডলার বরাদ্দের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সরকার। এর মধ্যে ৪৫৫ মিলিয়ন ডলার থাকবে সেইসব স্বাস্থ্য কর্মী ও চিকিৎসকদের যারা বিভিন্ন ক্লিনিকে মাঝারি মানের মানসিক সমস্যার চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। আর প্রধানত ২৪ বছর বয়সের কম বয়সী নাগরিকদের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যই ব্যয় হবে এই অর্থ।
এছাড়া শিশু কল্যাণে ব্যয় হবে শত কোটি ডলার। পারিবারিক সহিংসতা বিরোধী লড়াইয়ের জন্য ব্যয় হবে ৩২০ মিলিয়ন ডলার।
নিউ জিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আর্ডার্নের মতে, ‘পরিবেশ ধ্বংস করে বা জনগণকে পেছনে ফেলে রেখে এসে শুধু অর্থনৈতিক উন্নতি করলে তা একটি জাতিকে আরো গরীবই করে তোলে।’