বাকপটু শিশু পড়াশোনায় ভালো

0
46
বাকপটু শিশু পড়াশোনায় ভালো
বাকপটু শিশু পড়াশোনায় ভালো

বন্ধুদের সঙ্গে গল্প করা মানেই সময় নষ্ট, আর বইপত্রে যত সময় দেবে ততই জীবনে উন্নতি- এমন ধারণা মনে-প্রাণে বিশ্বাস করা বাবা-মায়ের সংখ্যাই বেশি। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন ‍উল্টো কথা। বরং কথা বলা, গল্প করাই বাচ্চারাই পড়াশোনায় ভালো করে, পরীক্ষায় ভালো ফল বয়ে আনে।
যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অফ ইয়র্ক’য়ের গবেষকরা মাথায় প্রশ্ন জাগে, কেনো ধনী এবং সুশিক্ষিত পরিবারের ছেলেমেয়েরাই শিক্ষাক্ষেত্রে ভালো করে? আর সেখান থেকেই শুরু হয় গবেষণা।
তারা জানতে পারেন, আর্থসামাজিক দিক থেকে উচ্চ অবস্থানে থাকা পরিবারের ছেলেমেয়েরা ভাষাগত কৌশলে পটু হয়ে বেড়ে ওঠে শিক্ষা জীবনের শুরু থেকেই। এতে তাদের কথা বলার জড়তা কাটে এবং শিক্ষাজীবনের পরবর্তী ধাপগুলো তারা পার হতে পারে উজ্জ্বল সাফল্য নিয়ে।
ইউনিভার্সিটি অফ ইয়র্ক’য়ের অধ্যাপক এবং এই গবেষণার প্রধান সোফি ভন স্টাম বলেন, “আমাদের গবেষণায় দেখা গেছে পাঁচ বছর বয়সের আগে সন্তানকে ঘরে যে হাতেখড়ি শিক্ষা দেওয়া হয় তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ভিত্তি তৈরি করে। শিক্ষাজীবনে ভালো ফল করার সম্ভাবনার বীজ বপন হয় এই সময়ে।”
মোট ৭০০ ব্রিটিশ শিশুকে নিয়ে এই গবেষণা করা হয়। চার বছর বয়সে তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভালো ফল করার যোগ্যতা যাচাই করেন গবেষকরা। পরবর্তী সময়ে ১৬ বছর বয়স পর্যন্ত স্কুলে তাদের ফলাফল পর্যবেক্ষণ করে যান।
গবেষকদের হিসাব অনুযায়ী, স্কুলের ভালো ফলাফল বয়ে আনার পেছনে পারিবারিক অবস্থানের কৃতিত্বের প্রায় ৫০ শতাংশের ব্যাখ্যা মেলে এই শিশুদের ভাষাগত দক্ষতা থেকে। তবে শিক্ষাজীবন যতই অগ্রসর হয় এই প্রভাব ততই ক্রমে হারিয়ে যেতে থাকে।
স্টাম বলেন, “শিক্ষিত পরিবারে বেড়ে ওঠা শিশুরা স্কুলে ভর্তি হওয়ার আগে থেকেই ভাষাগত যোগ্যতা অনেকটাই রপ্ত করে ফেলে পারিবারিক শিক্ষার কল্যাণে। ফলে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সঙ্গে তাল মেলাতে তারা অনেকটা সুবিধা পায় অন্যান্য শিশুদের তুলনায়।”
তিনি আরও বলেন, “সব শিশুর হাতেখড়ি সমান হয়না ঠিক। তবে হাতেখড়ি শিক্ষা যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় এই গবেষণা। তাই সব ধরনের পরিবারের উচিত হবে শিশুকে শুধু বইয়ের মাঝে আটকে না রেখে তার ভাষাগত দক্ষতা বাড়ানোর চেষ্টা করা, তাকে কথা বলায় উৎসাহীত করা। এজন্য সন্তানকে গল্প পড়ে শোনাতে পারেন, বা তাকেই গল্প পড়তে বলতে পারেন। তার সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলাপ করতে পারেন।

কথা বলার পারদর্শীতা প্রয়োজন হয়না এমন বিষয়গুলোও বিবেচনায় আনেন গবেষকরা। তবে শিক্ষাজীবনে সাফল্য বয়ে আনার পেছনে তাদের প্রভাব পাওয়া গেছে সামান্যই।
আবার আর্থসামাজিক দিক থেকে সফল পরিবারের সন্তানরা এদিক থেকেও এগিয়ে থাকে। ধাঁধাঁ সমাধান, চিত্রাঙ্কন, অন্যের অনুকরণ ইত্যাদি কাজেও এসব পরিবারের সন্তানরা এগিয়ে থাকে স্কুলে ভর্তি হওয়া আগে থেকেই। কারণ ঘরেই তারা এই ব্যাপারগুলো রপ্ত করার সুযোগ পায়।

Previous articleকরোনা ও মানসিক উদ্বেগ
Next articleমিশিগানে মানসিক হাসপাতালেও করোনাভাইরাস

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here