বর্ণাঢ্য আয়োজনে উদযাপিত হলো এনআইএমএইচ ডে ২০২৫

0
10
বর্ণাঢ্য আয়োজনে উদযাপিত হলো এনআইএমএইচ ডে ২০২৫

জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে (NIMH) নানা আয়োজনে উদযাপিত হলো দুই দিনব্যাপী ‘এনআইএমএইচ ডে ২০২৫’। ২০ ও ২১ এপ্রিল (রবিবার ও সোমবার) অনুষ্ঠিত এই আয়োজন ছিল এক প্রাণবন্ত ও বর্ণাঢ্য মিলনমেলা, যেখানে বৈজ্ঞানিক আলোচনার পাশাপাশি কুইজ, বিতর্ক, র‍্যালি, স্মৃতিচারণ ও পুরস্কার বিতরণে মুখর ছিল জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণ। এই আয়োজনের মাধ্যামে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে সমাজে সচেতনতা বৃদ্ধি, পেশাজীবী ও শিক্ষার্থীদের মাঝে জ্ঞানের বিনিময় এবং মানসিক স্বাস্থ্যসেবার গুণগত মান উন্নয়নের লক্ষ্যে অভিজ্ঞতা ভাগাভাগির সুযোগ করে দেন আয়োজকরা। দুই দিনের এই আয়োজন অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে উৎসাহ, আন্তরিকতা ও সহযোগিতার মনোভাব সৃষ্টি করেছে।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ডা. হেদায়েতুল ইসলাম এবং অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. মাহবুবুর রহমান। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন দেশের খ্যাতনামা অন্যান্য মনোরোগ বিশেষজ্ঞগণ। অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন ডা. মুনতাসির মারুফ, ডা. জিনাত ডি লায়লা ও ডা. আরিফ। অনুষ্ঠানের বিশেষ অংশ হিসেবে ডা. তৈয়বুর রহমান রয়েল জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের যাত্রা শুরুর সময় থেকে বর্তমান পর্যন্ত অর্জন, পরিবর্তন ও অগ্রগতির ওপর একটি তথ্যসমৃদ্ধ প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন।

বর্ণাঢ্য আয়োজনে উদযাপিত হলো এনআইএমএইচ ডে ২০২৫

পুরোনো দিনের স্মৃতিচারণ করে অধ্যাপক ডা. হেদায়েতুল ইসলাম বলেন, ”সাইকিয়াট্রিস্টরা অনেক মেধাবী। যেকোনো কিছুকেই সাফল্যমণ্ডিত করার শক্তি আপনাদের আছে’’। তিনি বর্তমান শিক্ষার্থীদেরকে আগামী দিনের জন্য শুভকামনা জানিয়ে আরও বলেন,’’ছাত্রজীবনের অধ্যায় কঠিন, পরীক্ষায় পাশ করে আরো কঠিন এবং পরবর্তীতে চাকরি পাওয়া এবং সম্মান অর্জন করা ভীষণ কঠিন তাই সকলের জন্য শুভকামনা’’। আগামী দিনের জন্য ভালো কিছুর স্বপ্নকে বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার তরুণ সাইকিয়াট্রিস্ট এবং শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ”সাইকিয়াট্রিস্টদের জন্য নীতিগত জায়গাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই একজন সাইকিয়াট্রিস্ট হিসেবে একজন ভালো মানুষ হয়ে ওঠা বেশি গুরুত্বপূর্ণ এবং NIMH-এর ট্রেনিং, রিসার্চসহ সার্ভিসের যেই যেই জায়গায় কোয়ালিটি ডেভেলপমেন্টের জায়গা রয়েছে সেখানে সকলকে মিলে কাজ করার পরামর্শ দেন। এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে মানসিক স্বাস্থ্যের বার্তা সকলের মাঝে পৌঁছে দেওয়া যায় উল্লেখ করে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সাইকিয়াট্রিস্টস (বিএপি) –এর সদস্য সচিব অধ্যাপক ডা. মো. নিজাম উদ্দিন বলেন, ”আমি মনে করি, যারা মানসিক স্বাস্থ্যের সাথে জড়িত আছে তাদের কাছে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট হলো একটি তীর্থস্থান।’’

বর্ণাঢ্য আয়োজনে উদযাপিত হলো এনআইএমএইচ ডে ২০২৫

জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের আউটডোরে প্রতিদিন প্রায় ৪০০-৫০০ জন রোগী সেবা নিতে আসে, জনবল কম থাকার কারণে গুণগত মান বজায় রেখে রোগীদের সেবা দিতে চিকিৎসকদের প্রতিবন্ধকতার কথা উল্লেখ করে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ”পুরাতন মেডিকেল কলেজগুলোর মধ্যে শুধুমাত্র সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজেই এমডি সাইকিয়াট্রি কোর্স আছে। আমরা মনে করি যে, বড় বড় মেডিকেল কলেজে যদি আমরা এমডি সাইকিয়াট্রি কোর্স চালু করতে পারি এবং এতে সফলতা পাই তাহলে আমরা বেশি সংখ্যক সাইকিয়াট্রিস্ট তৈরি করতে পারবো।’’ অনুষ্ঠানের শেষাংশে অধ্যাপক ডা. হেদায়েতুল ইসলাম, অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার ও অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ এনায়েত করিম কে বিশেষ সম্মাননা স্মারক এবং প্রয়াত অধ্যাপক ডা. এ এইচ এম ফিরোজ কে মরনত্তর সম্মাননা প্রদান করা হয়।

‘এনআইএমএইচ ডে ২০২৫’ উপলক্ষে আয়োজিত এই দুই দিনের অনুষ্ঠান ছিল মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির এক অনন্য প্রয়াস। বৈজ্ঞানিক আলোচনা, স্মৃতিচারণ, পুরস্কার বিতরণসহ নানা আয়োজনে এই মিলনমেলা শুধু পেশাজীবী ও শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করেনি, বরং ভবিষ্যতের জন্য এক আশাব্যঞ্জক দৃষ্টিভঙ্গিও তৈরি করেছে। এই আয়োজন নিঃসন্দেহে মানসিক স্বাস্থ্য কার্যক্রমকে আরও সমৃদ্ধ ও গতিশীল করে তুলবে বলেই আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

বর্ণাঢ্য আয়োজনে উদযাপিত হলো এনআইএমএইচ ডে ২০২৫

 

আরও পড়ুন- 

Previous articleবর্তমানে খুব ভয়াবহ সমস্যায় ভুগছি, কী করবো বুঝতে পারছিনা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here