পিতামাতার সাথে সন্তানের সম্পর্ক পৃথিবীর সব থেকে মধুর,ভালবাসাপূর্ণ এবং সুন্দর সম্পর্ক। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই কিছু মানুষের জন্য এই সম্পর্ক বিভিন্ন ঘাত প্রতিঘাতের সম্মুখীন হয় এবং শৈশব থেকেই তাদের মাঝে একটি বিরূপ মনোভব গড়ে ওঠে।
শিশুর মনে ঠিক কি কি কারণে আঘাত লাগতে পারে তার সুনির্দিষ্ট কারণ উল্লেখ করা না গেলেও অভিভাবকদের প্রতি তাদের ক্ষোভ পুষে রাখার কারণ হতে পারে-
- শারীরিক ও মানসিক অবহেলা
- শারীরিক, মানসিক বা যৌন নির্যাতন
- নির্যাতন থেকে শিশুকে রক্ষায় পিতামাতার ব্যর্থতা
- শিশুর প্রতি মনযোগের অভাব
- পিতামাতারর অত্যধিক রক্ষণশীল আচরণ
- পিতামাতার সন্দেহ প্রবণ আচরণ
- তাদের সমর্থনের অভাব
যেসব শিশু এসব সমস্যার সম্মুখীন হয় তাদের উপর এর অত্যন্ত বিরূপ প্রভাব পড়ে। যেগুলির মধ্যে অন্যতম হল-
- অতীত ভুলতে না পারা
- সম্পর্কের প্রতি অনাস্থা
- নিজের সন্তানের সাথে একই আচরণ করা
- আত্মহত্যা প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়া
এসব মানসিক সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় কি?
নিম্নে বর্ণিত কৌশলগুলো অবলম্বন করলে এই সমস্যাগুলির হাত থেকে অনেকাংশেই মুক্তি পাওয়া যেতে পারে। মনে রাখতে হবে, প্রতিটি সম্পর্কই ভিন্ন ভিন্ন এবং আমাদের সেই ভিন্নতা অনুসারেই নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে।
১. নিজের রাগ-ক্রোধ প্রকাশ করা: মনের মাঝে ক্ষোভ পুষে না রেখে সেগুলোকে মুক্ত করে দিন। অতীতের অপ্রীতিকর ঘটনাবলি মনে পুষে রাখলে তা অনেকাংশেই অন্যের প্রতি ক্ষোভের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। তাই সবার উচিত সেগুলিকে মেনে নিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়া। নিজের স্বার্থেই মনকে ক্ষোভমুক্ত করতে হবে।
২. কষ্টগুলো প্রকাশ করা: শৈশবের কোন ঘটনা যদি আপনাকে খুব বেশি কষ্ট দিয়ে থাকে সেটি নিয়ে পিতামাতার সাথে খোলামেলা আলোচনা করুন। এতে অনেক ভুল বোঝাবুঝির অবসান হবে। আপনার পিতামাতাও এক সময় শিশু আর অসহায় ছিলেন। তারা যদি নিজেদের ভুল গুলো স্বীকার করতে না চান তাহলে সেসব নিয়ে মাথা ঘামানো বন্ধ করে দিন।
৩. নিজেদের মাঝে সূক্ষ্ম দূরত্ব বজায় রাখুন: নিজের ও আপনার পিতামাতার মাঝে সূক্ষ্ম দূরত্ব বজায় রেখে চলুন। শৈশবে অনেক বিষয়ই আপনাকে বিনাবাক্যে মেনে নিতে হলেও, প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর আপনি আপনার অপছন্দের বিষয়কে “না” বলতে পারেন, এড়িয়ে যেতে পারেন। এটি করতে গিয়ে প্রথমে কিছুটা অস্বস্তি হতে পারে। আপনার পিতামাতা আপনাকে ভুল ও বুঝতে পারেন। কিন্তু আপনাকে বোঝাতে হবে যে, আপনারও আত্মসম্মান এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা আছে। নিজের যোগ্যতারর উপর বিশ্বাস রেখে বিরূপ অবস্থার মোকাবিলা করতে হবে।
৪. নিজেকে ভালবাসুন এবং নিজের যোগ্যতার উপর বিশ্বাস রাখুন: আপনার শান্তির জায়গাটি আপনাকেই খুঁজে নিতে হবে। নিজের উপর বিশ্বাস রাখুন এবং নিজের সিদ্ধান্তগুলোকে সম্মান করুন। পিতামাতার সাথে সম্পর্ককে অন্য মাত্রায় নিয়ে যান এবং পরস্পরের প্রতি আস্থা,ভালবাসা এবং ভরসার জায়গা তৈরি করুন। সবকিছু করার পরও যদি সামনে অগ্রসর হতে বাধা প্রাপ্ত হন, তবে মনে রাখবেন,ফলাফল যা ই হোক, আপনি চেষ্টা করেছিলেন।
অনুবাদ করেছেন: প্রত্যাশা বিশ্বাস প্রজ্ঞা
সূত্র: https://www.psychologytoday.com/intl/blog/living-emotional-intensity/201907/4-ways-release-anger-towards-your-parents
স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে