জনৈক সাংবাদিক এবং লেখক বলেছেন, “যখন সত্যিকার অর্থেই আমরা নিজেকে জানতে এবং বুঝতে পারি, তখন আমরা আনন্দ এবং শান্তির সাথে নিজের জীবন যাপন করতে পারি, কিন্তু যখন এটা আমরা পারি না তখন কেবল অন্ধভাবে, জড়পদার্থের মতো জীবনকে অনুসরণ করে যাই”।
তবে অনেকক্ষেত্রেই নিজেকে আবিষ্কার করাটা মানুষের পক্ষে কঠিন হয়ে পড়ে, কারণ তখন এমন কিছু বিষয় সামনে চলে আসে, যেগুলো একজন মানুষ পছন্দ করতে পারেন না এবং কখনো সেই আবেগগুলো হয় কষ্টকর।
অনেক সময় এটা ভাবা হয় যে, ইতিবাচকভাবে ভাবতে পারা আসলে মানুষের ভগ্ন হৃদয়ের বহিঃপ্রকাশ, তবে দুর্ভাগ্যবশত কিংবা সৌভাগ্যবশত অস্বস্তি ব্যাপারটা নিজেকে আরো ভালোভাবে নিজেকে বুঝতে সাহায্য করে। নিজেকে বুঝতে পারার অর্থ হলো সম্পূর্ণভাবে নিজেকে লক্ষ করা। একইভাবে নিজেকে বোঝার অর্থ নিজের আবেগ সম্পর্কে অবগত হওয়া, নিজের চিন্তা, বিশ্বাস ও সম্পর্কগুলোকে লক্ষ করা। নিজেকে বুঝতে পারার অর্থ হলো প্রতিদিন নিজেকে পর্যবেক্ষণ করা।
এবার খুব সাধারণ কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ কিছু উপায় দেখা যাক, যার মাধ্যমে নিজেকে সচেতনভাবে বুঝতে পারার শুরুটা হতে পারে আজ থেকেই।
নিজেকে কিছু প্রশ্ন করা যাক
- এমন কি অপ্রকাশিত অনুভূতি আছে যা এখন প্রকাশ করা যাচ্ছে না?
- আমার স্বপ্নের পথে যাবার পরবর্তী পদক্ষেপ কি?
- যদি কাল আমি মারা যাই, তবে সেই ব্যক্তিটি কে হবে, যার সাথে আমার কথা অসমাপ্ত রয়ে যাবে?
- যদি আমি আমার যোগাযোগের একটি দিক উন্নত করতে চাই, তবে সেটা কী এবং কী কারণে পরিবর্তন করতে চাই?
- এই পরিবর্তন আমার নিজের এবং অন্যদের সাথে সম্পর্কের ক্ষেত্রে কীভাবে ভূমিকা রাখবে?
এখানে নিজেকে আরো কিছু প্রশ্ন করা যেতে পারে। যেমন-
কখন আমি একা বোধ করি? কাদের সাথে আমি বেশি সময় কাটাতে পছন্দ করি? কখন আমি ভালো বোধ করি? ইত্যাদি। নিজেকে আরেকটু বেশি চেনা যায় এমন প্রশ্ন করুন।
একটু হেঁটে নেওয়া যাক
অনুসন্ধানী চোখে হাঁটাহাঁটি করা হতে পারে নিজেকে অন্বেষণ করার শক্তিশালী একটি উপায়। এটি যেমন একদিক থেকে শরীরের জন্য উপকারী, তেমনি এর মাধ্যমে আমরা নিজেদেরও সময় দিতে পারি।
নীরবতায় ডুবে থাকা যাক কিছুক্ষণ
কিছুসময় একা থাকুন। এ সময় টিভি, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে নিজেকে পুরোপুরি বিরত রাখুন। এ সময় নিজেকে চাঙ্গা করার জন্য নিয়ে নিতে পারেন কোনো পানীয়, এসময়ের পুরোটুকু দিন শুধুমাত্র নিজেকে। নীরবতা নিজের সাথে বোঝাপড়া করতে সাহায্য করে।
উল্লিখিত বিষয়গুলো ছাড়াও আপনার মনে যে সমস্ত চিন্তা আসে, তা লক্ষ করতে পারেন। খেয়াল করলেই দেখা যাবে, আমাদের মন আসলে অনেক কিছু চিন্তা করে। নেতিবাচক বিষয়ের দিকে মন আকৃষ্ট হয় বেশি আবার কখনো বা দানা বাঁধে সন্দেহ।
নিজেকে জানতে এবং বুঝতে পারার বিষয়টি অনেক চ্যালেঞ্জিং হলেও এর সাহায্যে জীবনের পথে হাঁটতে পারাটা অনেক সহজ হয়ে যায়। এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু এমন একটি বিষয়, যেটি আমরা ভুলে যাই।
করোনায় স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে