পুরুষদের তুলনায় নারীরা গুরুতর ‘ডিপ্রেসিভ ডিসঅর্ডারে’ বেশি ভোগেন। ১৫ শতাংশ বিবাহিত তরুণী, ১১ শতাংশ অবিবাহিত তরুণী এবং ৫ শতাংশ অবিবাহিত তরুণ গুরুতর ডিপ্রেসিভ ডিসঅর্ডারে ভোগেন বলে জরিপে জানা গেছে।
সম্প্রতি রাজধানীর ইন্টার কন্টিনেন্টাল হোটেলে বাংলাদেশ কিশোর-কিশোরী স্বাস্থ্য ও কল্যাণ জরিপ ২০১৯-২০ এ তথ্য তুলে ধরা হয়। তাছাড়া ৭৩ শতাংশ অবিবাহিত কিশোরী এবং ৬৬ শতাংশ অবিবাহিত কিশোর বয়ঃসন্ধিকালীন পরিবর্তন সম্পর্কে জানতে আগ্রহী। এই তথ্যের জন্য কিশোরীরা বইয়ের ওপর নির্ভর করলেও কিশোরদের তথ্যসংগ্রহের মূল মাধ্যম হলো ইন্টারনেট।
দেশব্যাপী এই জরিপ পরিচালনা করে ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব পপুলেশন রিসার্চ এন্ড ট্রেনিং (নিপোর্ট)। এতে টেকনিক্যাল সহায়তা প্রদান করে আইসিডিডিআরবি’র রিসার্চ ফর ডিসিশন মেকার্স (আরডিএম) প্রকল্প এবং ইউনিভার্সিটি অফ নর্থ ক্যারোলিনার ডাটা ফর ইমপ্যাক্ট (ডিফরআই)। জরিপে অর্থায়ন করেছে ইউএসএআইডি, যুক্তরাজ্যের দাতা সংস্থা এফসিডিও এবং বাংলাদেশ সরকার।
বাংলাদেশের কিশোর-কিশোরীদের স্বাস্থ্য ও কল্যাণ পরিস্থিতি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে আনা ছিল এই জরিপের মূল উদ্দেশ্য। জরিপের মূল প্রতিবেদনে কিশোর-কিশোরীর গণমাধ্যম ব্যবহার, বিয়ে, ঋতুকালীন স্বাস্থ্যবিধি, জেন্ডার-সম্পর্কিত সামাজিক আচরণ, সহিংসতা, মানসিক স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও খাদ্যবৈচিত্র, এবং পরিবার ও বন্ধুদের সাথে সংযোগ বিষয়ক ১২টি অধ্যায়ে জরিপের ফলাফল তুলে ধরা হয়েছে।
জরিপের তথ্যে আরও বলা হয়, বাংলাদেশে প্রতি পাঁচটি পরিবারের একটিতে কমপক্ষে একজন কিশোর/কিশোরী (১৫-১৯ বছর বয়সী) আছে। কিশোর-কিশোরীর মধ্যে ৯৭ শতাংশ জীবনের কোনও না কোনও সময় প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় (স্কুল, কলেজ বা মাদ্রাসা) অংশগ্রহণ করেছে। দেশের ৯০ শতাংশ কিশোর-কিশোরী মোবাইল ফোন ব্যবহারের সুবিধা পাচ্ছে। বিবাহিত কিশোরীদের প্রায় অর্ধেক ও অবিবাহিত কিশোরীর প্রায় এক-চতুর্থাংশের নিজস্ব মোবাইল ফোন আছে। কিশোরদের ৫০ শতাংশ এবং বিবাহিত এবং অবিবাহিত কিশোরীদের ২০ শতাংশ সপ্তাহে কমপক্ষে একবার ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকে।
জরিপে দেখা যায় যে, কিশোরীদের অধিকাংশই ঋতুস্রাব শুরু হওয়ার আগে এই পরিবর্তন সম্পর্কে অবহিত ছিল না। বিবাহিত ও অবিবাহিত কিশোরীদের প্রায় সকলেই (৯৮ শতাংশ) ঋতুকালীন সময়ে একবার ব্যবহারযোগ্য প্যাড বা সাবান-পানি দিয়ে ধুয়ে অনেকবার ব্যবহার করা যায় এমন উপাদান ব্যবহার করে। তবে, ঋতুকালীন স্বাস্থ্যকর আচরণের প্রবণতা এখনও বেশ কম, বিবাহিত কিশোরীদের মধ্যে ১৯ শতাংশ এবং অবিবাহিত কিশোরীদের মধ্যে ১২ শতাংশ মাত্র। উল্লেখ্য, প্রতি চারজনের একজন কিশোরী (বিবাহিত এবং অবিবাহিত) ঋতুকালীন সময়ে কমপক্ষে একদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়া বন্ধ রাখে।
অনুষ্ঠানে মার্কিন দাতা সংস্থা ইউএসএআইডি’র পপুলেশন, হেলথ, নিউট্রিশন অ্যান্ড এডুকেশন অফিসের পরিচালক জার্সেস সিধওয়া তার বক্তব্যে বলেন, জরিপের ফলাফলে দেখা যাচ্ছে যে কিশোর-কিশোরীরা তাদের বয়ঃসন্ধিকালীন পরিবর্তন ও স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে আরও তথ্য চায়। এখন আমাদের ভাবতে হবে এই কিশোর-কিশোরীদের আমরা কতটা কার্যকর ভাবে এইসব তথ্য দিতে পারি। আর এ জন্য প্রয়োজন বিভিন্ন সেক্টরের একীভূত পদক্ষেপ।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, বাংলাদেশ সরকার এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কিশোর-কিশোরীদের স্বাস্থ্যকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে আসছে। এর অংশ হিসেবে মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে ন্যাশনাল স্ট্র্যাটেজি ফর এডোলেসেন্ট হেলথ ২০১৭-৩০ তৈরি ও বাস্তবায়ন করছে।
স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে