Close Menu
    What's Hot

    শিশুদের স্ক্যাবিস: ছোট্ট শরীরের বড় চুলকানি, প্রতিকার ও প্রতিরোধে চাই সচেতনতা

    মনে রাখার বিভিন্ন পদ্ধতি

    বাংলাদেশি মনোরোগ চিকিৎসকের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি

    শিশুদের কেন এবং কিভাবে পরার্থপরতার প্রেরণা দেয়া যায়

    অভিভাবকত্ব শুধুমাত্র লালন-পালনের নাম নয়, এটি একটি সুসংগঠিত প্রক্রিয়া

    Facebook X (Twitter) Instagram
    Sunday, July 6
    Facebook X (Twitter) Instagram
    মনের খবরমনের খবর
    ENGLISH
    • মূল পাতা
    • কার্যক্রম
      1. জাতীয়
      2. আন্তর্জাতিক
      Featured
      কার্যক্রম July 2, 2025

      বাংলাদেশি মনোরোগ চিকিৎসকের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি

      Recent

      বাংলাদেশি মনোরোগ চিকিৎসকের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি

      অভিভাবকত্ব শুধুমাত্র লালন-পালনের নাম নয়, এটি একটি সুসংগঠিত প্রক্রিয়া

      সাইকিয়াট্রি বিভাগের মে মাসের বৈকালিক আউটডোর সূচি

    • প্রতিদিনের চিঠি
    • মানসিক স্বাস্থ্য
      1. মাদকাসক্তি
      2. মানসিক স্বাস্থ্য সেবা তথ্য
      3. যৌন স্বাস্থ্য
      4. শিশু কিশোর
      Featured
      ফিচার October 7, 2024

      যৌনতা নিয়ে ভুল ধারণা

      Recent

      যৌনতা নিয়ে ভুল ধারণা

      শিশুর আবেগ নিয়ন্ত্রণ কীভাবে শেখাবেন

      কর্মব্যস্ততা প্রভাব ফেলে যৌনজীবনে

    • ফিচার
    • প্রশ্ন-উত্তর
      1. বিশেষজ্ঞ পরামর্শ
      2. মাদকাসক্তি
      3. মানসিক স্বাস্থ্য
      4. যৌন স্বাস্থ্য
      Featured
      প্রশ্ন-উত্তর May 3, 2025

      কেউ আমার সঙ্গে ১০ মিনিট থাকলেই বিরক্ত হয়ে যায়

      Recent

      কেউ আমার সঙ্গে ১০ মিনিট থাকলেই বিরক্ত হয়ে যায়

      বর্তমানে খুব ভয়াবহ সমস্যায় ভুগছি, কী করবো বুঝতে পারছিনা

      রাতে ঘুমাতে পারি না, সবসময় এক ধরনের অস্থিরতা অনুভব করি

    • জীবনাচরণ
      1. অন্যান্য
      2. অপরাধ আচরণ
      3. কুসংস্কার
      4. মতামত
      5. মন ও ক্রীড়া
      6. মন প্রতিদিন
      7. মনোসামাজিক বিশ্লেষণ
      8. সাক্ষাৎকার
      Featured
      দিনের চিঠি April 28, 2025

      রায়হান মানুষের থেকে দূরে সরে যাচ্ছে, অকারণে আতঙ্কিত বোধ করছে

      Recent

      রায়হান মানুষের থেকে দূরে সরে যাচ্ছে, অকারণে আতঙ্কিত বোধ করছে

      জীবনের ফাঁদে যেন আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে গেছি, কায়দা করেও আর যেন বাঁচতে পারছি না!

      মা আর নিজেকে চেনেন না — ঘুম নেই, স্মৃতি নেই, পরিচ্ছন্নতাও নেই!

    • মনস্তত্ত্ব.
      1. তারকার মন
      2. ব্যাক্তিত্ব
      3. মনস্তত্ত্ব
      Featured
      ফিচার December 5, 2023

      শিশুদের ওসিডি অভিভাবকেরই দায় বেশি

      Recent

      শিশুদের ওসিডি অভিভাবকেরই দায় বেশি

      মানুষ বদলালেই কেবল পৃথিবী বদলাবে

      প্রসঙ্গ : সাইক্লোথাইমিক ব্যক্তিত্ব

    • করোনায় মনের সুরক্ষা
      1. টিপস্
      2. বিশেষজ্ঞের মতামত
      3. বিশ্ব পরিস্থিতি
      4. সার্বক্ষনিক যোগাযোগ
      Featured
      টিপস্ September 28, 2024

      MK4C-তে কীভাবে টেলিসাইকিয়াট্রি চিকিৎসা নেবেন?

      Recent

      MK4C-তে কীভাবে টেলিসাইকিয়াট্রি চিকিৎসা নেবেন?

      প্রবাসীদের জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় MK4C-তে মানসিক স্বাস্থ্য সেবা নেওয়ার পরামর্শ

      পরিবার যেভাবে শিশুকে গড়ে তুলবে

    মনের খবরমনের খবর
    You are at:Home » চিন্তার বিভিন্ন রোগ ও চিকিৎসা
    জীবনাচরণ

    চিন্তার বিভিন্ন রোগ ও চিকিৎসা

    ডা. সৃজনী আহমেদBy ডা. সৃজনী আহমেদSeptember 7, 2021Updated:September 7, 2021No Comments10 Mins Read0 Views
    Facebook Twitter Pinterest Telegram LinkedIn Tumblr Email Reddit
    ডা. সৃজনী আহমেদ
    Share
    Facebook Twitter LinkedIn Pinterest WhatsApp Email

    প্রাণ থাকলেই প্রাণী হয়, কিন্তু মন না থাকলে মানুষ হয় না এই কথাটি জানেন না এরকম পাঠক পাওয়া যাবে না। আবার মনের অস্তিত্বই জানান দেয় আমাদের চিন্তার।

    জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখা-প্রশাখা যেমন দর্শন, মনোবিজ্ঞান, স্নায়ুবিদ্যা, সামাজিক বিজ্ঞান, ভাষাবিজ্ঞান চিন্তাকে নিজের মতো করে সংজ্ঞা এবং ব্যাখ্যা দেয়। চিন্তাকে সহজভাবে বুঝতে চাইলে এক কথায় বলা যায়, আমাদের মনে যত ধারণা আসতে থাকে সেগুলো একটা নির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে যখন একটা উপসংহারে পৌঁছায় বা পৌঁছাতে চায় সেটাকে চিন্তা বলা হয়।

    তবে মনোবিজ্ঞান এবং দর্শন অনুযায়ী শুধু ধারণাটা নয়, এই মানসিক কাজটাকেও চিন্তা বলা হয়। অর্থাৎ চিন্তা এবং চিন্তা করা সমার্থক কখনো কখনো। চিন্তাকে সংজ্ঞায়িত করা নিয়ে আর জটিলতায় যাচ্ছি না বরং এই আলোচনায় আসি যখন চিন্তা স্বাভাবিক মনোবৃত্তিয় বিষয় না হয়ে বরং অসুস্থতায় পরিণত হয়।

    মানসিক রোগগুলোর সবগুলোতেই চিন্তার কোনো না কোনো সমস্যা হয়। চিন্তার সংলগ্নতা নষ্ট হতে পারে, অতিরিক্ত চিন্তা আসতে পারে, চিন্তার বিষয়বস্তুতে উদ্বিগ্নতা-বিষণ্ণতা, নেতিবাচক বিষয়বস্তুর প্রাধান্য আসতে পারে।

    আর এই সমস্যা ফুটে ওঠে ব্যক্তির কথায়, লেখায়, আঁকা ছবিতে, আচরণে। যেসব মানসিক রোগের সঙ্গে চিন্তার বা অতিরিক্ত চিন্তার যুক্ততা রয়েছে সেগুলো হলো:

    অবসেসিভ কম্পালসিভ ডিজঅর্ডার

    এই রোগে চিন্তা সংলগ্নতা থাকে। অতিরিক্ত চিন্তা করার প্রবণতা থাকে। চিন্তাগুলো বারবার আসতে থাকে। ব্যক্তি খুব চেষ্টা করেন চিন্তা সরিয়ে কাজ করতে বা যথাযথ চিন্তা করতে কিন্তু পারেন না। চিন্তার বিষয়বস্তুগুলোও এখানে কষ্টদায়ক থাকে। যেমন– বারবার চিন্তা আসছে নিজেকে মেরে ফেলার অথবা কাছের কারো দুর্ঘটনা ঘটছে বা ঘটবে এমন ভাবনা অথবা ঘুরে ফিরে যৌন চিন্তা আসছে যেটা খুব কষ্টদায়ক।

    এই রোগে এক পর্যায়ে রোগীর ভেতরে চিন্তাগুলোকে বাধা দেয়ার ইচ্ছা থাকলেও আর ক্ষমতা থাকে না এবং অযথা মনে হয় না। এই রোগের চিকিৎসা খুব প্রয়োজন। কারণ দেখা যায় সুস্থ স্বাভাবিক একটা দিন পার করা রোগীর জন্য খুব কঠিন হয়ে যায়।

    চিন্তা যখন অনেক রকম

    নাইকো তার সীমানা

    সেই চিন্তার স্রোতে ভেসে

    কোনো কাজই হলো না

    বুঝতে পেরেও যায় না থামানো

    এই চিন্তার ঢেউ

    কষ্ট অনেক সহ্য করা

    বোঝে না আর কেউ

    বাইপোলার মুড ডিজঅর্ডার ম্যানিক অথবা হাইপোম্যানিক স্টেজ

    এই রোগটির ক্ষেত্রে অনেক চিন্তা আসে মাথায়, রোগীর ভাষ্যমতে চিন্তা যেন দৌঁড়াচ্ছে। অনেক সময় এই চিন্তাগুলোকে রোগী সৃষ্টিশীল ও যুগান্তকারী দাবি করেন। ছন্দবদ্ধ চিন্তাও আসতে থাকে যার ফলে কাব্যের ছন্দের মতো সংলাপ চালিয়ে যেতে পারেন। অনেক সময়ই এই রোগীদেরকে সৃষ্টিশীল হিসেবে মনে হতে পারে।

    অনেক ক্ষেত্রেই চিকিৎসার পর সৃষ্টিশীলতা হারিয়ে গেছে এই দাবিও করেন অনেকে। কিন্তু ভালোভাবে খেয়াল করলে দেখা যায়, চিন্তাগুলো অনেক বেশি এবং ব্যক্তির জীবনধারণ অনেকখানি ব্যাহত হচ্ছে।

    চিন্তা যখন উড়াল দেয়

    তার সাথে কথা অনর্গল

    নিজেকে লাগে অনেক বড়ো

    হয় শুধু গণ্ডগোল

    এই রোগে চিন্তার বিষয়বস্তুতে সমস্যা থাকে যেটা হচ্ছে নিজেকে বড়ো বা ক্ষমতাশালী বা অনেক ধনী কেউ বলে বিশ্বাস জন্মায়। যার ফলে সাধ্যের অতিরিক্ত খরচ, মারামারিতে জড়িয়ে পড়া এরকম সমস্যা হয়।

    সিজোফ্রেনিয়া

    এই রোগটিতে চিন্তার সংলগ্নতায় উল্লেখযোগ্য সমস্যা দেখা দেয়। আবার বিষয়বস্তুতেও সমস্যা থাকে। চিন্তা কম আসে এরকমটাও হয়। চিন্তার সংলগ্নতা না থাকায় রোগীর কথায়, লেখায় কোনো অর্থ থাকে না। অনেক ছাড়া ছাড়া শব্দ, ছবি, সংকেত পাওয়া যায় লিখতে দিলে। কথাও অন্য কেউ বুঝতে পারে না।

    চিন্তার বিষয়বস্তুতে অনেক ধরনের ভ্রান্ত বিশ্বাস থাকে। অনেক সময় এই ভ্রান্ত বিশ্বাসের প্রভাবে রোগী অনেক বিপজ্জনক কাজ করে বসে। যেমন- মারামারি, মামলা, নিজেকে আঘাত করা।

    এই রোগে চিন্তা করার ক্ষমতাও অনেক সময় হ্রাস পায়। চিন্তাগুলো অন্যের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত অথবা অন্যরা নিয়ে যাচ্ছে এরকম বিশ্বাস কাজ করে।

    ওলট পালট চিন্তাগুলো

    নাই কোনো মানে

    ভ্রমের ঘোরে চারিপাশ

    অন্যরকম জানে।

    এছাড়াও বিষণ্ণতায় দেখা যায় শুধু নেতিবাচক চিন্তা আসে। সোমাটিক সিম্পটম ডিজঅর্ডারে শুধু শারীরিক সমস্যার চিন্তা মাথায় আসতে থাকে। বড়োদের মতো শিশুদেরও চিন্তায় বা কল্পনার জগতে সমস্যাকে স্বাভাবিক না অস্বাভাবিক এই নিয়ে জটিলতা হতে পারে।

    ওপরের তিনটি রোগে প্রায়ই রোগীরা ওষুধ খেয়ে চিন্তার ক্ষমতা/ সৃষ্টিশীলতা চলে গেছে এই কারণে চিকিৎসা বন্ধ করে দেন। কিন্তু চিন্তা বা কল্পনার জটিলতা, আধিক্য, অসংলগ্নতা মানসিক রোগের লক্ষণ এবং সবসময় সৃষ্টিশীলতা না। তাই নিকটজনের চরম হতাশামূলক কবিতা অথবা অর্থহীন ছবির জন্য বুঝিয়ে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান, ভালো থাকতে সহায়তা করুন।

    এক. মেধাবী ছাত্রী সোহানার সামনে মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা। করোনা পরিস্থিতির কারণে তাদের ব্যাচের এইচএসসি পরীক্ষা না হয়ে সবাই অটো পাশ করেছে। তাই পরীক্ষার্থীর সংখ্যাও বেশি। এছাড়া কোনো কোচিং সেন্টারে সরাসরি ভর্তি কোচিং করারও সুযোগ হচ্ছে না, শুধুমাত্র কিছু অনলাইনে ক্লাস করা ছাড়া।

    সকল বাস্তবতা মেনে সে নির্দিষ্ট রুটিন করে তার প্রস্তুতি ভালোই নিচ্ছিল। কিন্তু কিছুদিন ধরে, সে ঠিক পড়ায় মনোযোগ দিতে পারছে না। মনে হচ্ছে সে সবই ভুলে গেছে, মেজাজ খিটমিটে হয়ে যাচ্ছে, হাত-পায়ের মাংসপেশিগুলো কেমন যেন শক্ত হয়ে যাচ্ছে, সময়মতো খাওয়াও হচ্ছে না, ঘুমও হচ্ছে না।

    পরীক্ষা নিয়ে কোনো দুশ্চিন্তা সে করবে না ভেবেছিল, কিন্তু এখন ঠিকই সেই দুশ্চিন্তা তাকে ঘিরে ধরছে। সারাক্ষণ শুধু মনে হচ্ছে, আমি পরীক্ষার হলে গিয়ে কিছুই পারব না, আমার মেডিক্যালে চান্স হবে না, আমি কাউকে মুখ দেখাতে পারব না, আমি তখন কী করব?

    দুই. নুরুল হক, দুই সন্তানের পিতা। একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করেন। করোনায় অনেকের চাকরি চলে গেলেও, তারটা যায়নি, কিন্তু বেতন কমে যায়। এতদিন ছেলে-মেয়েদের স্কুল বন্ধ থাকায় আর্থিক তেমন সমস্যা হয়নি। কিন্তু নতুন বছরে ওপরের ক্লাসে ভর্তি করাতে পূর্বের বছরের প্রায় পুরো বেতনই তাকে দিতে হচ্ছে।

    এছাড়া প্রাইভেট শিক্ষকদেরও এখন নিয়মিত রাখতে হচ্ছে। সংসারের অন্যান্য খরচও বাড়ছে। তিনি এখন আর্থিক সংকট টের পাচ্ছেন। কী করবেন ঠিক বুঝে উঠতে পারছেন না। কেমন যেন বিরক্ত বিরক্ত আর হতাশ লাগে, মেজাজটা খিটমিটে হয়ে যাচ্ছে।

    ছেলেমেয়েদের অযথাই বকা দিচ্ছেন, ঘুমের সমস্যা হচ্ছে, স্ত্রীর সঙ্গেও সম্পর্কটা ভালো যাচ্ছে না। চোখে-মুখে সারাক্ষণ দুশ্চিন্তার চাপ। তিনি বুঝছেন যে তিনি ভালো নেই, কিন্তু কারো সঙ্গে ব্যাপারটা ঠিক শেয়ারও করতে পারছেন না।

    ওপরের দুটো দৃশ্যই আমাদের সমাজের খুব পরিচিত পরিস্থিতি। আমরা সহজেই বুঝতে পারছি; প্রথম দৃশ্যের সোহানা এবং দ্বিতীয় দৃশ্যের নুরুল হক মানসিক চাপে আছেন, যাকে আমরা প্রচলিত ভাষায় বলি টেনশনে আছেন।

    দৈনন্দিন জীবনে আমাদের প্রত্যেকের মধ্যেই কোনো না কোনোভাবে টেনশন বা মানসিক চাপের জন্ম হয়। যেকোনো পরিস্থিতি বা অবস্থার কারণে আমাদের মধ্যে স্ট্রেস বা মানসিক চাপ হতে পারে।

    যখন আমরা বলি যে আমরা মানসিক চাপ বা টেনশনের মধ্যে রয়েছি, তখন সাধারণত আমরা এটাই বোঝানোর চেষ্টা করি যে পরিবেশ বা পরিস্থিতির চাহিদা অনুযায়ী আমরা কোনো না কোনো প্রতিবন্ধকতার মোকাবিলা করছি বা বিশেষ কোনো পরিস্থিতির কারণে আমাদের মধ্যে উত্তেজনা এবং অস্বস্তির বোধ জাগছে।

    আবেগীয় এবং শারীরিক দুই কারণেই আমরা এরকম পরিস্থিতিতে পড়তে পারি। আবেগীয় কারণ হচ্ছে, কোনো সম্পর্কের অবনতি বা বিচ্ছেদ, পরিবারের আপনজনের আকস্মিক মৃত্যু, পরীক্ষায় খারাপ করা বা কর্মক্ষেত্রে বিরূপ পরিস্থিতির শিকার হওয়া ইত্যাদি।

    আবার শারীরিক কারণের মধ্যে রয়েছে, প্রচণ্ড ক্ষুধা পাওয়া, ঘুম কমে যাওয়া বা ঘুমাতে না পারা, মাদক প্রত্যাহারের সময় এবং বিভিন্ন উদ্বিগ্নতার রোগের লক্ষণ হিসেবেও আমাদের মধ্যে মানসিক চাপ বা টেনশন হতে পারে।

    ডাক্তার উইলিয়াম আর লোভাল্লো তাঁর Stress and Health বইতে স্ট্রেস সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেছেন এটা এমন একটা অবস্থা বা বিষয় যার দুটো উপাদান রয়েছেÑএকটা হলো বাহ্যিক উপাদান, যা আমাদের দৈহিক পরিবর্তনের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। যেমনÑঅস্থিরতা, বুক ধড়ফড়, খিটমিটে মেজাজ, মাংসপেশি শক্ত হওয়া, হাত-পা কাঁপা, শরীরে অতিরিক্ত ঘাম হওয়া ইত্যাদি।

    আরেকটা হলো মানসিক বা মনস্তাত্ত্বিক উপাদান, যার সঙ্গে মানবজীবনের বিভিন্ন পরিস্থিতিতে একজন ব্যক্তিমানুষ কীভাবে তার করণীয় কাজ বা আচরণ করবে তা যুক্ত থাকে; যেমন অজানা এক ভয় কাজ করা, স্বাভাবিক কাজকর্ম কমে যাওয়া, হতাশ হতাশ লাগা ইত্যাদি।

    সব স্ট্রেসই যে খারাপ তা নয়, কিছু কিছু স্ট্রেস আমাদের বেঁচে থাকার জন্য উপকারী। আমাদের যখন অল্প বা মাঝারি মানের কোনো চ্যালেঞ্জিং কাজ থাকে, তখন আমরা মানসিক চাপ অনুভব করি। এর ফলে আমরা কাজটা সঠিকভাবে সম্পাদন করার জন্য আমাদের মেধা, বুদ্ধি আর পরিশ্রম দিয়ে সেই চ্যালেঞ্জিং কাজকে সম্পাদন করি।

    এতে আমরা পুলকিত হই এবং ভবিষ্যতে আরো কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার আত্মবিশ্বাস অর্জন করি। কিন্তু যারা ছোটোবেলা থেকে চাপ মোকাবিলা করতে শিখেনি অথবা হঠাৎ বড়ো কোনো চাপ চলে আসে অথবা দীর্ঘমেয়াদি কোনো চাপ হলে তা আমাদের মারাত্মক অস্থিরতা তৈরি করে।

    দুশ্চিন্তার চিকিৎসা কী?

    দুশ্চিন্তার চিকিৎসা কী বা মানসিক চাপ কীভাবে মোকাবেলা করা উচিত তা নিয়ে অনেক গবেষণা হয়েছে এবং এখনো হচ্ছে। সোশ্যাল সাইকোলজির কোপিং স্ট্র্যাটেজিস (Coping Strategies) বা চাপ সামলানোর কৌশল এরমধ্যে অন্যতম। এই কৌশলে দুইভাবে যেকোনো চাপকে সামলানোর কথা বলা হচ্ছে।

    ১. সমাধানভিত্তিক কৌশলÑএতে বলা হচ্ছে, কোনো চাপে (যেমন সম্পর্কজনিত সমস্যা, পরিবারের কেউ অসুস্থ হলে, আর্থিক সংকট ইত্যাদি) পড়লে তার বাস্তবভিত্তিক সমাধান করা হচ্ছে সবচেয়ে ভালো উপায়।

    সমাধান করতে হলে বুদ্ধি খাটাতে হয়, যথাযথ প্রয়োজনীয় তথ্য জোগাড় করে, আরেকজনের সঙ্গে পরামর্শ করে, সমাধানের একটা পরিকল্পনা করতে হয় এবং সবশেষে চূড়ান্ত সমাধানে যেতে হয়। মাঝে মাঝে বাজে পরিস্থিতি হলে তাকে গোপন না করে বা জোর করে মেনে না নিয়ে সমস্যার সামনাসামনি হতে হয়, যাকে সাইকোলজিতে কনফ্রন্টেশন বলে।

    ২. আবেগীয় অনুভূতি কমানোর কৌশলÑযে সমস্যার সমাধান করা যায় না বা সমাধান নেই। যেমন আপনজনের মৃত্যু, পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়া ইত্যাদি মানসিক চাপের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় পদ্ধতি বা আবেগীয় অনুভূতি কমানোর কৌশল ভালো কাজে দেয়।

    এখানে বলা হচ্ছে, আমরা যখন কোনো বিষয়ে অতিরিক্ত চাপে থাকব যা সহ্য করতে কষ্ট হচ্ছে, তা গোপন না করে আরেকজনের কাছে তা প্রকাশ করতে হবে, এতে আমাদের কষ্টগুলো ভেন্টিলেট বা মনের মধ্য থেকে বের হয়ে হালকা হয়ে যাবে।

    আবার, একটা ঘটনার দুইটা দিক থাকে, একটা ভালো আরেকটা খারাপ। যখন আমরা চাপে পড়ি মাথার মধ্যে শুধু খারাপটা না রেখে ঐ ঘটনার ভালো দিক খুঁজে বের করতে হবে। এতে আমরা সহজেই চাপমুক্ত হতে পারি। যেমন কেউ কোনো পরীক্ষায় ফেল করলে তা তার জন্য অবশ্যই খারাপ, কিন্তু দ্বিতীয়বার পরীক্ষা দিয়ে আরো ভালো করে জানার সুযোগ হলো, চিন্তা করলে চাপটা অনেক কমে যায়।

    এছাড়া, সমস্যাটা নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করে এর বিভিন্ন দিক খুঁজে বের করা এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে সমস্যাটাকে অস্বীকার করা (অর্থাৎ এটা কোনো সমস্যাই না  এরকম ভাবা) আবেগীয় অনুভূতি কমানোর কৌশল হিসেবে ভালো কাজ করে।

    এর বাইরে, ডাক্তারের প্রেসক্রাইব অনুযায়ী কিছু অ্যাংজিওলাইটিক ড্রাগস, প্রাত্যহিক ব্যায়াম এবং শারীরিক ও শ্বাস-প্রশ্বাসের শিথিলায়নের মাধ্যমেও মানসিক চাপ কমানো যায়।

    প্রথম দৃশ্যের সোহানার দুশ্চিন্তার উৎস হচ্ছে তার সামনে মেডিক্যালের পরীক্ষা। পরীক্ষা তো আর বাদ দেয়া যাবে না এবং এটা কোনো সমস্যাও না যে তার সমাধান সে খুঁজবে। তাহলে সে কী করে তার দুশ্চিন্তা কমাবে?

    তাকে তার দুশ্চিন্তা নিয়ে, তার ভবিষ্যৎ ফলাফলের অজানা ভয় নিয়ে তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আলাপ করতে হবে। এতে তার কিছুটা ভেন্টিলেশন হবে এবং তার পরিবারের সদস্যদের, বিশেষ করে তার পিতামাতার দায়িত্ব হচ্ছে সোহানাকে আশ্বস্ত করা যে, তার ফলাফল যাই হোক, সেটা তারা স্বাভাবিকভাবেই মেনে নেবেন।

    প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সবার চান্স হবে না, এটাই স্বাভাবিক, আর মেডিক্যালে পড়াই মূল উদ্দেশ্য নয়, উদ্দেশ্য হচ্ছে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করা, সেটা যেকোনো ভালো বিশ্ববিদ্যালয়েও হতে পারে। পরিবারের এতটুকু আশ্বাসে সোহানার দুশ্চিন্তা অনেকটাই কমে যাওয়ার কথা।

    এর পাশাপাশি নিয়মিত হালকা ব্যায়াম করা, শ্বাস-প্রশ্বাসের শিথিলায়ন, মেডিটেশন, সময়মতো ঘুমানো এবং পুষ্টিকর খাওয়া গ্রহণ করার মাধ্যমে তার মানসিক চাপ এবং দুশ্চিন্তা অনেকাংশেই কমে যাবে। তারপরও যদি পুরোপুরি না কমে, তাহলে ডাক্তারের পরামর্শে কিছু অ্যাংজিওলাইটিক ড্রাগস সেবন করা যেতে পারে।

    দ্বিতীয় দৃশ্যের নুরুল হকের দুশ্চিন্তার মূল উৎস হচ্ছে আর্থিক সমস্যা। এর সমাধান খোঁজাই হলো প্রথম পদক্ষেপ। সেক্ষেত্রে বিষয়টা গোপন না করে তার স্ত্রী, তার কাছের কিছু বন্ধু এবং শুভানুধ্যায়ীর সঙ্গে আলাপ করে, এই পরিস্থিতিতে কী করা যায় তার পরামর্শ চাইতে পারেন।

    সেই পরামর্শমতো কিছু পদক্ষেপ যেমন, বেতন বৃদ্ধির জন্য অফিসে আলাপ করা, বিকল্প আয়ের চেষ্টা করা, সংসারের খরচ কমানো ইত্যাদি করা যেতে পারে। পাশাপাশি বর্তমান বাস্তব পরিস্থিতি মেনে নিয়ে তার সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর চেষ্টা করা।

    নিয়মিত ব্যায়াম করা, সময়মতো ঘুমানো, পরিবারের সঙ্গে ভালো সময় কাটানো ইত্যাদির মাধ্যমে তার টেনশন অনেকাংশেই লাঘব করা যায়। তারপরও যদি দুশ্চিন্তা দূর না হয়, তাহলে যেকোনো মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত।

    অনেক ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কোনো চ্যালেঞ্জ বা সমস্যা ছাড়াই অযথা ক্রমাগত দুশ্চিন্তা চলে আসে। সেক্ষেত্রে তার শারীরিক বা মানসিক কারণে হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। শারীরিক কারণের মধ্যে রয়েছে হরমোনজনিত সমস্যা, স্নায়ু সমস্যা ইত্যাদি। মানসিক কারণের মধ্যে উদ্বিগ্নতার কিছু রোগ, চিন্তাবাতিকগ্রস্ততা, মাদকাসক্তি, কিছু সাইকোটিক ডিজঅর্ডার ইত্যাদি। তাই এসবক্ষেত্রে যথাযথ চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।

    ডা. সৃজনী আহমেদ

    সহকারী অধ্যাপক, মনোরোগবিদ্যা বিভাগ

    ঢাকা কমিউনিটি মেডিক্যাল কলেজ।

    স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
    করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
    মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে

    ডিপ্রেশন দুশ্চিন্তা বিষণ্ণতা মনের খবর মনোরোগবিদ্যা স্ট্রেস
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Reddit WhatsApp Telegram Email
    Previous Articleলিঙ্গকে সুস্থ রাখবেন যেভাবে
    Next Article শিশুদের জন্য নিরাপদ ও অনাকাঙ্খিত স্পর্শ
    ডা. সৃজনী আহমেদ

    মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, সহকারী অধ্যাপক, ঢাকা কমিউনিটি হাসপাতাল, মগবাজার

    Related Posts

    শিশুদের স্ক্যাবিস: ছোট্ট শরীরের বড় চুলকানি, প্রতিকার ও প্রতিরোধে চাই সচেতনতা

    July 5, 2025

    মনে রাখার বিভিন্ন পদ্ধতি

    July 3, 2025

    বাংলাদেশি মনোরোগ চিকিৎসকের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি

    July 2, 2025
    Leave A Reply Cancel Reply

    Top Posts

    অভিভাবকত্ব শুধুমাত্র লালন-পালনের নাম নয়, এটি একটি সুসংগঠিত প্রক্রিয়া

    June 30, 2025270 Views

    বাংলাদেশি মনোরোগ চিকিৎসকের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি

    July 2, 2025194 Views

    অতিরিক্তি হস্তমৈথুন থেকে মুক্তির উপায়

    July 25, 202187 Views

    অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ থেকে মুক্তির উপায়

    August 22, 202146 Views
    Don't Miss
    প্রতিদিনের স্বাস্থ্য July 5, 2025

    শিশুদের স্ক্যাবিস: ছোট্ট শরীরের বড় চুলকানি, প্রতিকার ও প্রতিরোধে চাই সচেতনতা

    ডা. রিফাত আল মাজিদ জনস্বাস্থ্য গবেষক ও চিকিৎসক, কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগ,  রাজশাহী মেডিকেল কলেজ গ্রীষ্মের…

    মনে রাখার বিভিন্ন পদ্ধতি

    বাংলাদেশি মনোরোগ চিকিৎসকের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি

    শিশুদের কেন এবং কিভাবে পরার্থপরতার প্রেরণা দেয়া যায়

    Stay In Touch
    • Facebook
    • Twitter
    • Pinterest
    • Instagram
    • YouTube
    • Vimeo
    আমাদের সম্পর্কে
    আমাদের সম্পর্কে

    প্রকাশক ও সম্পাদক:
    অধ্যাপক ডা. সালাহ্উদ্দিন কাউসার বিপ্লব
    মোবাইল : (+88) 018-65466594, (+88) 014-07497696
    ইমেইল : info@monerkhabor.com

    লিংক
    • মাসিক ম্যাগাজিন প্রাপ্তিস্থান
    • কনফারেন্স-সেমিনার-ওয়ার্কশপ
    • প্রেজেন্টেশন
    • জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট
    রিসোর্স
    • পরিচালনা পর্ষদ
    • মানসিক বিষয়ে সংগঠন
    • বিশেষজ্ঞ লোকবল
    • নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
    সোশ্যাল মিডিয়া
    • Facebook
    • YouTube
    • LinkedIn
    • WhatsApp
    © 2025 মনেরখবর সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
    • আমাদের সম্পর্কে
    • যোগাযোগ
    • গোপনীয়তা নীতি

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.