বিশ্বজুড়ে প্রতিদিনই নানা কারণে বাড়ছে গৃহহীন মানুষের সংখ্যা। শারীরিক সমস্যা সহ বিভিন্ন গুরুতর মানসিক রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন এইসব গৃহহীন মানুষেরা। তবে এইসব মানুষের মানসিক স্বাস্থ্য সেবা প্রদানে উদাসীন প্রায় সকল দেশ। সম্প্রতি এবিষয়ে নিজের ফেসবুক আইডি থেকে সিজোফ্রেনিয়া আক্রান্ত দু’জন মানুষের নিজের তোলা দুটি ছবি সহ একটি পোস্ট দেন দেশের খ্যাতনামা মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ও সৌখিন আলোক চিত্রশিল্পী চট্রগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এর সাইকিয়াট্রি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মহিউদ্দিন শিকদার।
তাঁর এই পোস্ট মনোরোগ চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট সহ সচেতন মহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। সকলেই অবহেলিত এই বিষয়ে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নীতি নির্ধারকদের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
মনের খবর পাঠকদের জন্য অধ্যাপক ডা. মহিউদ্দিন শিকদার এর ফেসবুক পোস্টটি হুবুহু তুলে ধরা হল-
“বিশ্বজুড়ে গৃহহীন মানুষের সংখ্যা ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ছে। প্রকারভেদে গৃহহীনতা তিন ধরণের, যেমন, “Primary homelessness” বা রাস্তা-ঘাটে যারা থাকেন, “Secondary homelessness” পান্থশালা, শরণার্থী শিবির, নিয়াপত্তা হেফাজত, বৃদ্ধাশ্রম কিংবা বস্তিতে যারা থাকেন এবং “Tertiary homelessness” অর্থের বিনিময়ে যারা মেস, হোটেল, মোটেল, কিংবা গেস্টহাউস-এ থাকেন কিন্তু ব্যাক্তিগত কোন প্রক্ষালন নেই। Primary homeless মানুষদের মাঝে একটি বৃহৎ অংশই গুরুতর মানসিক রোগে আক্রান্ত। রাস্তাঘাটে এঁদের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য, অপমান, হেয়, নির্যাতন ও ধর্ষণ করা হয়। এমনকি এঁরা হত্যাকান্ড-এর শিকারও হন। উন্নত দেশগুলোর মত এদেশেও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় আছে। পার্থক্য হল আমাদের দেশে আমরা এঁদের কল্যাণে পাঁচ টাকাও ব্যয় করি না। এশীয় আধিকাংশ দেশের চিত্র আমাদের চেয়ে ঢের ভাল। কত দিকেই তো রাষ্ট্রের কত অর্থের অপচয় হয়, রাষ্ট্র কি এতই হত-দরিদ্র যে এঁদের জন্য ন্যূনতম একটি আশ্রয়স্থল নির্মাণ করতে পারে না। পারে না স্বাস্থ্য বাজেটে এঁদের জন্য সামান্য বরাদ্দ দিতে। এখানে দু’জন গুরুতর মানসিক রোগাক্রান্ত (Schizophrenia) মানুষের স্থির চিত্র দিলাম তুলনার জন্য। এ’গুলো আমার তোলা। একটা আমাদের দেশের অন্যটা এশীয় একটি দেশের। বোধকরি আমাদেরটা চিনতে কষ্ট হবে না।