ভাইরাসের মহামারি এবং এর সম্ভাব্য সামাজিক ও অর্থনৈতিক বিপর্যয় সম্পর্কে গত বছরই ব্রিটিশ মন্ত্রীদের সতর্ক করা হয়। ২০১৯ সালের জাতীয় নিরাপত্তা ঝুঁকি পর্যালোচনা বিষয়ক এক ব্রিফিংয়ে এই সতর্কতা দেওয়া হয়। ব্রিটিশ সরকারের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা প্যাট্রিক ভ্যালান্স এবং নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ঊর্ধ্বতন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এই সতর্কতা দেন। মহামারি মোকাবিলায় যথেষ্ট পরিমাণ ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই), প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম এবং ভাইরাস নজরদারির ব্যবস্থা প্রণয়নের পরামর্শ দেওয়া হয়। ওই ব্রিফিংয়ের একটি নথি হাতে পেয়ে এসব তথ্য প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান।
করোনাভাইরাসের মহামারিতে যুক্তরাজ্যে মৃতের সংখ্যা ২০ হাজার ছাড়িয়েছে। আক্রান্ত হয়েছে এক লাখ ৪৯ হাজারেরও বেশি মানুষ। চীন থেকে ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাসের মহামারি ব্রিটিশ স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর মারাত্মক চাপ তৈরি করেছে।
গার্ডিয়ানের হাতে পাওয়া নথিতে দেখা গেছে, মহামারি শুরুর আগেই বিদেশে অবস্থানরত ব্রিটিশ নাগরিকদের যুক্তরাজ্যে ফিরিয়ে আনাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ছয়শো পাতার ওই নথিতে দেখা গেছে এতে কেবল একটি ভাইরাসের মহামারির বিষয়টিই পর্যালোচনা করা হয়নি বরং সুনির্দিষ্টভাবে করোনাভাইরাসের বিস্তারের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। তবে এর সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে খুব বেশি কিছু বলা হয়নি। ওই নথিতে বলা হয়েছে, ‘একটি নোবেল ভাইরাসের মহামারি একই সঙ্গে প্রচণ্ড সংক্রামক এবং মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে।’
ওই সতর্কতা পাওয়ার পর সুনির্দিষ্ট কোন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল তা জানাতে অস্বীকার করেছে ব্রিটিশ সরকার। সরকারের এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘এটা একটা অভূতপূর্ব বৈশ্বিক মহামারি আর আমরা এটি মোকাবিলায় সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ নিয়েছি, সবসময়ই বৈজ্ঞানিক পরামর্শ অনুসরণ করা হয়েছে।’
তবে ওই নথির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র গার্ডিয়ানকে জানিয়েছে, মহামারির হুমকির বিষয়ে যথাযথভাবে মনোনিবেশ করেনি যুক্তরাজ্য। ওই সূত্রটির দাবি, ‘সত্যিকার হতাশার বিষয় হলো পরিকল্পনা ছিলো। কিন্ত গত কয়েক বছরে জরুরি পরিকল্পনার ক্ষেত্রে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে ব্রেক্সিট ও বন্যার ওপর। মহামারি মোকাবিলা নিয়েও জাতীয় পরিকল্পনা ছিলো যা বাস্তবায়ন উচিত ছিলো। কিন্তু এটার নিয়ন্ত্রণে কে নেবে? স্থানীয় পর্যায়ে এই পরিকল্পন বাস্তবায়নের দায়িত্ব কার কাছে থাকবে? সত্যিটা হলো, কেউ এটা করেছে তা আমি নিশ্চিত নই।’
Home করোনায় মনের সুরক্ষা বিশ্ব পরিস্থিতি গত বছরই ব্রিটিশ মন্ত্রীরা মহামারির বিষয়ে সতর্কতা পেয়েছিলেন!