করোনায় মানসিক চাপ বেড়ে যাওয়ায় কমছে ঘুম, বাড়ছে মানসিক স্বাস্থ্য ঝুঁকি। আর ভালো থাকা নিশ্চিত করতে চাই পরিমিত ঘুম তথা মানসিক স্থিতিশীলতা।
এমন অনেকে আছে যাদের মহামারীতেও ঘুমের কোন তারতম্য হয়নি। আবার এমনও অনেক মানুষ রয়েছে যাদের মাঝে ঘুম কমে যাওয়ার সমস্যা পরিলক্ষিত হচ্ছে। দিনে রাতে ঘুমের তারতম্য এখন বেশ সাধারণ একটি বিষয় যা অধিকাংশ মানুষের মাঝেই দেখা যাচ্ছে। মহামারী কালীন এই দুঃসময়ে ঘুমের সাথে জড়িয়ে যে সব সমস্যা হচ্ছে সেগুলিকেই করোনাসোমনিয়া নামে অভিহিত করা হচ্ছে। সবার ক্ষেত্রে এই সমস্যা নাও হতে পারে। তবে যাদের মাঝে মানসিক চাপ সহ বিভিন্ন মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা বৃদ্ধি পেয়েছে তাদের মাঝে এই করোনাসোমনিয়া বা ঘুমের তারতম্য, রাতে নিদ্রাহীনতা, দিনে অধিক ঘুম ইত্যাদি সমস্যা পরিলক্ষিত হচ্ছে। যাদের এর পূর্বে এমন সমস্যা কখনোই হয়নি।
গবেষণায় দেখা গেছে যে, যে দুটি বিষয় আমাদের ঘুমের উপর দুস্প্রভাব ফেলে। এগুলোর মধ্যে একটি হল আমাদের অতিরিক্ত মানসিক চাপ যা সরাসরি প্রভাব ফেলছে এবং অন্যটি হল দৈনন্দিন জীবনাচরণে পরিবর্তন যা পরোক্ষ প্রভাব ফেলছে আমাদের ঘুমের অভ্যাসের উপর। মহামারীকালীন দুঃসময়ে করোনা নিয়ে আমাদের দুশ্চিন্তা, উদ্বিগ্নতা, হতাশা এবং ভয় আমাদের মানসিক চাপ বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। সামাজিক দূরত্ব, অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং সম্পর্কের উপর মহামারীর প্রভাব এই চাপকে আরও বহুগুণ বাড়িয়েছে। তাছাড়া পরিবর্তিত এই সামাজিক অর্থনৈতিক অবস্থার সাথে মানিয়ে নিতে আমাদের সামাজিক জীবন যাপন এবং আচার আচরণেও এসেছে পরিবর্তন। এই পরিবর্তিত জীবন ব্যবস্থা আমাদের ঘুমের সময় এবং পরিমাণ দুটোর উপরেই প্রভাব বিস্তার করেছে। এতে অস্বাভাবিক ভাবে কারও কারও ক্ষেত্রে ঘুম কমে গিয়েছে। আবার কারও কারও ক্ষেত্রে ঘুম বেড়ে গিয়েছে। কেউ আবার দিনে খুব ঘুমাচ্ছে, কিন্তু রাতে ঘুম আসছেনা। আর এসব কারণে বৃদ্ধি পাচ্ছে শারীরিক ও মানসিক জটিলতা। তাই সুস্থতা নিশ্চিত করতে পরিমিত ঘুম এবং মানসিক চাপ হ্রাস পূর্বের সময়ের থেকে এখন খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হয়ে উঠেছে।
ঘুম শরীরের এমন একটি জৈবিক বিষয় যা আমাদের মন, আমাদের চিন্তা ভাবনা, সমস্যা মোকাবেলার মানসিক শক্তি এবং এমনকি আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে যা ভ্যাকসিনকে আরও কার্যকরী করে তুলতে সহায়তা করে। বিশেষত যারা করোনায় সম্মুখ যোদ্ধা হিসেবে ভূমিকা রাখছেন তাদের জন্য পর্যাপ্ত ঘুম তাদের কাজকে সুষ্ঠু ভাবে পরিচালনা এবং করোনা থেকে সুরক্ষিত থাকতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই সর্ব সাধারণের জন্যই পরিমিত ঘুম সুস্থ থাকার জন্য অন্যতম গুরুত্বের বিষয় হওয়া উচিৎ। করোনা থেকে সুরক্ষিত থাকার জন্য যেমন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, শরীর চর্চা, মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখা ইত্যাদির প্রতি গুরুত্বারোপ করতে হবে তেমনি সব কিছুর সাথে পরিমিত ঘুম ও নিশ্চিত করার প্রয়াস করতে হবে। করোনা আতঙ্ক কাটিয়ে মন ভালো রাখতে হবে এবং জটিলতা মুক্ত হয়ে নিশ্চিন্তে ঘুমোতে হবে।
অনুবাদ করেছেন: প্রত্যাশা বিশ্বাস প্রজ্ঞা
করোনায় স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে