করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকতে নিশ্চয়ই সবাই নিজ নিজ জায়গা থেকে বিভিন্ন সতর্কতা অবলম্বন করছেন। যেমন- হাত ধোয়া, ঘর পরিষ্কার রাখা, জীবাণুনাশক ব্যবহার, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ইত্যাদি।
বিভিন্ন স্থানে এই ভাইরাস কতসময় বেঁচে থাকতে পারে এনিয়ে বিশেষজ্ঞরাও নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন।
হাত পরিষ্কার রাখার ব্যাপারটা আয়ত্তে আসলেও, পা ও পাদুকার পরিচ্ছন্নতা নিয়ে আলোচনা তুলনামূলক কম। কাজের প্রয়োজনে যতটুকুই বাইরে যেতে হচ্ছে, ততটুকুও বিপজ্জনক। কারণ সম্ভবত সরাসরি আক্রান্ত করতে না পারলেও আপনার জুতার মাধ্যমে তা ঘরে প্রবেশ করা অসম্ভব নয়।
এক্ষেত্রে কী ধরনের সতর্কতা অবলম্বন করা যেতে পারে সেব্যাপারে জানানো হল স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনের আলোকে।
যুক্তরাষ্ট্রের ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথ’য়ের করা সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, কার্ডবোর্ড-জাতীয় সমতলে ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত সক্রিয় থাকতে পারে করোনাভাইরাস। ধাতব সমতল ও প্লাস্টিকের ওপর তা বেঁচে থাকতে পারে সর্বোচ্চ তিন দিন পর্যন্ত।
একাধিক গবেষণার দাবি, জুতায় করোনাভাইরাস সক্রিয় থাকে সর্বোচ্চ পাঁচদিন পর্যন্ত। জুতা তৈরি হয় সাধারণত চামড়া, রাবার কিংবা প্লাস্টিক দিয়ে, যা হতে পারে করোনাভাইরাসের বাহক।
যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ম্যারি ই. শ্মিড বলেন, “জুতা তৈরিতে ব্যবহৃত কাঁচামাল নিয়ে করা একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে কক্ষ তাপমাত্রায় এগুলোতে করোনাভাইরাস বেঁচে থাকতে পারে পাঁচ দিন বা তারও বেশি সময়।”
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার আরেক চিকিৎসক জর্জিন নানোস বলেন, “করোনাভাইরাস ছড়াতে জুতা বেশ সম্ভবনাময় বাহক। বিশেষ করে তা পরে যদি জনবহুল স্থান যেমন- বাজার, হাসপাতাল ইত্যাদি স্থানে যাওয়া হয়।”
তিনি আরও বলেন, “করোনাভাইরাস জুতার মাধ্যমে আপনাকেই এর বাহকে পরিণত করতে পারে যদি তা কোনো সংক্রমিত অংশ স্পর্শ করে। আবার আক্রান্ত ব্যক্তি হাঁচি-কাশির ‘ড্রপলেট’ জুতায় পড়লে স্বভাবতই তা আপনি যেসব স্থানে যাবেন সেখানেও ছড়িয়ে পড়বে।”
“জুতা প্রতিদিন অসংখ্য ধুলাবালি, ময়লা, জীবাণু, ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়ার সংস্পর্শে আসে। তাদের বংশবিস্তারের জন্যও এটি আদর্শ স্থান। এমনকি ভাইরাস, ব্যাক্টেরিয়া জুতার তলাতেও বংশবিস্তার করতে সক্ষম।”
করণীয়
করোনাভাইরাসের এই বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে নিজেকে এবং পরিবারকে সুরক্ষিত রাখতে বাইরের জুতা কখনই ঘরের ভেতরে নেওয়া যাবে না। বাইরে যাওয়ার জন্য এমন জুতা ব্যবহার করতে হবে যা সাবান দিয়ে ধোয়া যায় এবং নিয়মিত তা ধুতে হবে।
যেসব জুতা ধোয়া যায়না, সেগুলো ব্যবহারের পর জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে।
ঘরের মূল দরজার সবসময় পরিষ্কার ও নিরাপদ পাদুকা রাখতে হবে। এবং বাইরে থেকে এসেই জুতা পরিবর্তন করে ফেলতে হবে।