করোনাভাইরাস সর্ম্পকে আমরা তো ইতিমধ্যেই অনেক কিছু জেনেছি এবং বাসায় থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেছি। করোনাভাইরাস নিয়ে কি ভাবছে আমাদের সন্তানেরা? তা জানার চেষ্টা করেছেন সাইকোলজিস্ট ফারাজানা ফাতেমা রুমি। চলুন জেনে নেওয়া যাক শিশুদের সেই ভাবনাগুলি:
আমি করোনাভাইরাস সম্পর্কে জেনেছিলাম আমার বন্ধুর কাছে। বাসায় এখন গেমস খেলতে বেশী ভাল লাগে। পড়াশুনা করতে বেশী খারাপ লাগে। প্রতিদিন হাত ধুই সাবান দিয়ে, পরিষ্কার থাকি। আমি সবাইকে বলব চিন্তা করোনা, হাত ধুবে, পরিষ্কার থাকবে। করোনাভাইরাস চলে গেলে আমি খুশী হব।
ফেব্রুয়ারীর ১ তারিখে আমার স্কুল থেকে এবং মার কাছ থেকে জেনেছি যে এটি একটি বিষাক্ত রোগ যা একজন থেকে আরেকজনের হয়। অন্য বাচ্চাদের থেকে, মানুষদের থেকে দূরে থাকতে হবে। ভাল লাগেনা বাসায় থাকতে, অনেক খারাপ লাগে, বাইরে যেতে পারিনা। মা আছে সাথে এটাই শুধু ভাল লাগে। আমি প্রতিদিন হাত ধুই, কনুই-এ হাঁচি দেই। আমি পরামর্শ দিব কেউ অসুস্থ্য হলে তাড়াতাড়ি হসপিটাল যাও, গরম ভাপ নাও। করোনা চলে গেলে আমি বাইরে যাব, দৌড়া দৌড়ি করব। আইসক্রীম খাবো, পার্কে যাব।
আমি মার্চের ৫ তারিখে সবচেয়ে প্রথম এ সম্পর্কে শুনেছিলাম যে এই ভাইরাসটি খুব ভয়ংকর। আমার মনে হয়েছিল, এই ভাইরাস থেকে কিভাবে নিজেকে রক্ষা করা যায়! আমি বাসায় পড়ালেখা করি, ছবি আঁকি, খেলি, মোবাইল দেখি। ছবি আঁকতে ভাল লাগে আর ছাঁদে ঘুড়ি উড়িয়ে সময় কাটাতে ভাল লাগে। বাসায় থাকতে ভাল লাগছে না। আর বাসায় পড়ালেখা করা থেকে স্কুলে পড়ালেখা ভাল হয়। আমি প্রতিদিন ভালভাবে ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধুই, মুখে হাত না লাগানোর চেষ্টা করি, বাসা থেকে বের হই না। বাসা থেকে বের হতে পারলে ভাল লাগত। স্কুলে যেতে পারলে ভাল লাগত। এবার ঈদে নতুন ড্রেশ কেনা হয়নি কারন আমরা বাসা থেকে বের হইনা। আমার পরামর্শ হল ভাল ভাবে হাত ধোয়া, মুখে যথাসম্ভব হাত না দেয়া, আতংকিত না হওয়া। করোনাভাইরাস চলে গেলে আমি বাইরে যাব।
পত্রিকা পড়ার সময় দেখলাম নতুন একটি ভাইরাস। উহান, চীনে দেখা গেছে। উহানের Wet Market প্যাঙ্গোলিন ও বাদুর থেকে সরাসরি আসে। প্রথমে ভেবেছিলাম খুব সামান্য একটি ভাইরাস হবে। তারপর যখন বিবিসি থেকে শুনলাম এতজন আক্রান্ত হচ্ছে ও মারা যাচ্ছে, তখন বুঝলাম কত ভয়ংকর! বাসায় আমি গান করি, নাচ করি, বন্ধুদের সাথে কথা বলি। বই পড়ি এবং পড়াশোনা করি। আমি একটা গল্প লিখছি। আমার বইটি প্রকাশ করার ইচ্ছা আছে পরের বই মেলায়। ছোট ভাইয়ের সঙ্গে খেলি, ভাইকে গান করাই, রান্না করি এগুলো ভাল লাগছে। বাসায় অনেকদিন ধরে আটকে আছি। বাইরে যেতে পারিনা। স্কুলে যাচ্ছিনা, বন্ধুদের এবং শিক্ষকদের কথা খুব মনে পরে। ভাল করে হাত ধুই ২০ সেকেন্ডের জন্য। নিজেকে পরিষ্কার রাখি। হাঁচি বা কাশি দিলে টিস্যু বা কনুই ব্যবহার করি। social distance মেনে চলি। আতংকিত না হয়ে সচেতন হওয়া দরকার। যত আতংকিত তত বিপদ। তাই নিজেকে যতটা পারা যায় সুস্থ্য রাখা দরকার।
করোনাভাইরাস সম্পর্কে আমি প্রায় ফেব্রুয়ারীর শেষ থেকে জানতে শুরু করি। আমার মাথায় চিন্তা এসেছিল, যদি আমি আক্রান্ত হই অথবা আমার পরিবারের লোক আক্রান্ত হয় তাহলে কি হবে! কিন্তু আমার কিছু কিছু জিনিস ভাল লাগে যেমন, প্রতিদিন সকালে দেরিতে ওঠা। করোনাভাইরাসে আমি নিজেকে সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখি। কিছুক্ষণ পর পর সাবান দিয়ে ২০ সেকেন্ড ধরে ভাল মত হাত ধুই। বাইরে গেলে মুখে মাস্ক ও হাতে গ্লাভস পরি। আর গরিব মানুষকে জীবাণুনাশক এবং খাদ্য সামগ্রী দিতে পারলে ভাল লাগত। করোনাভাইরাস চলে গেলে আমি বন্ধুদের সাথে দেখা করব, ঢাকার বাইরে যাব।
জানুয়ারী মাসে শুধু জেনেছি যে এটা খুব ভয়ংকর ভাইরাস। তখন আমর খুব ভয় হত! বাসায় আমি খুব আনন্দে সময় কাটাই যেমন: খেলাধুলা, গল্প করা, গান, নাচ করা। যদি আমি বেড়াতে যেতে পারতাম, বন্ধুদের সাথে খেলতে যেতে পারতাম তাহলে খুব ভাল লাগত। বাসায় ২০ সেকেন্ড হাত ধুই, ৩০ মিনিট পর পর হাত ধুই। করোনাভাইরাস চলে গেলে প্রথমে বাইরে যাবো, বন্ধুদের সাথে খেলতে যাব।
২০২০ সালের জানুয়ারী মাসে প্রথম জেনেছিলাম। মনে হয়েছিল এটা ভয়ংকর রোগ! বাসায় খারাপ ভাবে সময় কাটাচ্ছি। ঘরে থাকতে একদম ভাল লাগেনা। আবৃত্তি করতে ভাল লাগে, খেলতে ভাল লাগে। বন্ধুদের সাথে সময় কাটাতে পারলে ভাল হত। হাঁচি দিলে টিস্যু বাস্কেটে ফেলি। করোনাভাইরাস চলে গেলে অনেক মজা করব, বন্ধুদের সাথে খেলব।
২০২০ সালের ফেব্রুয়ারীতে আমি প্রথম এটি সম্পর্কে ইউটিউবারের কাছ থেকে শুনেছিলাম, যার নাম “ডেভি 504″। তখন আমি ভেবেছিলাম যে এটি একটি সাধারণ ব্যাকটিরিয়া বা জ্বর। আমি এটিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখিনি। আমার মা যখন আমাকে মার্চ মাসে বলেছিলেন, একজন ব্যক্তি হঠাৎ করোনাভাইরাসের জন্য মারা গিয়েছেন; আমি ভয় পেয়েছিলাম! আমার স্কুলটি কয়েক মাস বন্ধ রয়েছে। আমি কখনও কখনও ফুটবল খেলি এবং ইন্টারনেট থেকে ফুটবলের কিছু দক্ষতা শিখি। সম্প্রতি একটি গান তৈরি করেছি এবং এটি ইউটিউবে আপলোড করেছি। আমি বেশিরভাগ সময় সঙ্গীত, ফুটবল অনুশীলন এবং ইউটিউবে ব্যয় করি। বাড়িতে ভাল বোধ করি। আরও স্থিরভাবে বাড়িতে পড়াশোনা করতে পারি। ঘন ঘন আমার হাত ধুই, অ্যালকোহল ওয়াইপ ব্যবহার করি। তবে আমি চাই যে আমি যদি পিপিই বা কোনও ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সরঞ্জাম কিনে তা পরতে পারি। আমার বয়সি ছেলেদের বলতে চাই আতঙ্কিত হবে না, বাড়িতে থাক, এবং সুরক্ষিত থাক। এই ভাইরাসটি চলে গেলে, আমি প্রথমে আমার প্রতিটি ইচ্ছা পূরণ করব।
কে এম তাসফিয়া, শ্রেণিঃ ৭ম; গোড়ান, ঢাকা
করোনা সম্পর্কে আমি স্কুল থেকে শুনি এবং স্কুল ছুটি হয়ে যায়। তখন আমি কিছু বুঝি নাই, ভয়ও পাই নাই। বাসায় আমি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি, পড়ালেখা করি, ছবি আঁকি, ইন্টারনেট গেম খেলি, মায়ের সাথে রান্না করি। স্কুল বন্ধ, বাসায় থাকতে একদম ভালো লাগেনা। বাসায় থাকতে খারপ লাগে কারন ঘরে আমার বয়সি কেউ নাই। করোনার সচেতনতায় আমি কোন বান্ধবী, আত্মীয়, প্রতিবেশীর বাসায় যাই না, কাউকে বাসায় আসতে দেই না। করোনায় আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন হতে হবে।
করোনাভাইরাস সম্পর্কে আমি প্রথম ফেব্রুয়ারী মাসে শুনেছি। চীনের উহানের মাছের বাজার থেকে এটি ছড়িয়েছে। যখন আমি শুনি তখন মনে হয় এটি শুধু চীনেই হয়েছে, পরে আস্তে আস্তে ভাল হয়ে যাবে। বাসায় এখন আমি ঘুম থেকে উঠে নাস্তা খাই, টিভিতে ক্লাস করি, ক্লাসের হোম ওয়ার্কগুলো করি, নামাজ ও কোরআন পড়ি, মোবাইল ও টিভি, ল্যাপ্টপ দেখি। বাসায় থেকে নামাজ সবগুলো আদায় করি। বাসায় কোন ধুলাবালি নাই। বাসায় থেকে আব্বু আম্মু আর ছোট ভাইয়ার সাথে অনেক সময় কাটাতে পারি। বাসায় থেকে খারাপ ও লাগে, খুব বোর লাগে। স্কুলে যেতে পারি না, বন্ধুদের সাথে খেলতে পারি না! করোনাভাইরাস সচেতনতায় আমি হাত ধুই, ছাঁদে গেলে মাস্ক পরে যাই, আমার ঘর পরিষ্কার রাখি। করোনাভাইরাস চলে গেলে আমি প্রথমেই আমার বন্ধুদের সাথে ফুটবল খেলব।
করোনাভাইরাস সম্পর্কে আমি ডিসেম্বর ২০১৯ -এ জেনেছিলাম। শুনেছিলাম এটি একটি প্যান্ডেমিক ও ক্ষতিকর ভাইরাস। আমি আমার ছোট ভাইয়ের সাথে খেলা করে সময় কাটাই। আমার বাসায় থাকতে একদমই ভাল লাগে না। আমি পরিষ্কার আছি এবং করোনাভাইরাস প্রতিরোধ করতে হাত ধুচ্ছি। আমার উপদেশ হল পরিষ্কার থাকা এবং হাত ধোয়া।
করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রথম আমি মার্চ মাসের ফার্স্ট উইকে জেনেছিলাম। এটা খুবই ভয়ংকর ভাইরাস! বাসায় যে এভাবে থাকতে হবে এটি বুঝি নাই। ভেবেছিলাম এ ভাইরাস তেমন কিছুই না। ভাবতে পারিনি আমাদের দেশে এমন পরিস্থিতি হবে! বাসায় আমি সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পড়ি, গেমস খেলি, রিলেটিভস দের সাথে ভিডিও কলে কথা বলি। ক্রাফটিং করি, ড্রয়িং করি। সংসদ টিভিতে অনলাইন ক্লাস করি। বাসায় থাকতে ভাল লাগেনা। শুধু বাইরে যেতে ইচ্ছা করে! কিছুই ভাল লাগেনা! বাসায় থাকতে খুবই খারাপ লাগে। একটা মুহুর্ত ও ভাল লাগেনা! হাত ধুই, পরিস্কার পরিচ্ছন থাকি, কোথাও যদি যেতে চাই তাহলে মাস্ক পরে যাই। খুব ভাল লাগত যদি যারা একদম দুঃস্থ, খেতে পারছে না তাদের কে সাহায্য করতে পারতাম। পরামর্শ দিব আতংকিত হলে চলবে না, সচেতন হতে হবে। ২০ সেকেন্ড হাত ধুবে, খাওয়ার আগে এবং পরে হাত ধুবে। আল্লাহ্র কাছে প্রার্থনা করতে পরামর্শ দিব। মুখে, চোখে, নাকে হাত না দিতে বলব। বাসায় থাকতে বলব। করোনাভাইরাস চলে গেলে আমি নানু বাসায় যাব।
করোনাভাইরাস নিয়ে আমি প্রথম শুনেছিলাম যে চীনের উহানে ২০১৯ -এর ডিসেম্বরে ভাইরাসটি ধরা পরেছে। মনে হয়েছিল চাইনিজরা যেসব উদ্ভট খাবার খায় ওখান থেকেই এ ভাইরাসের উৎপত্তি। এ ভাইরাসে আক্রান্ত হলে মানুষ মারা যায়! আমি ভীষণ ভয় পেয়েছিলাম! মনে হয়েছিল বাংলাদেশে হলে তো আমরা সবাই মারা যাব! এর কোন সঠিক চিকিৎসা এখনো নেই, তবে সচেতনতার মাধ্যমে প্রতিরোধ করা যায়। অর্থাৎ ভালভাবে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, মাস্ক পরা, বেশি মানুষ যেখানে আছে সেখানে না যাওয়া ইত্যাদি। এইগুলো জানার পরে ভয় কিছু কমেছিল। এরমধ্যে আমি স্টোরি টেলিং এর দুইটা লাইভে পার্টিসিপেট করেছি। এটা আমার জন্য নতুন একটা অভিজ্ঞতা ছিল! সবাই অনেক প্রশংসা করেছিল। বাসার সবাই মিলে নামাজ পরি। সবাইকে কাজে হেল্প করি বিশেষ করে আমি ঘর গুছাই আর খাবার পরিবেশন করি। সবচেয়ে যেটা ভালো লাগছে তা হচ্ছে বাবা-মাকে অনেক সময় কাছে পাচ্ছি। লুডু খেলাটা খুব এনজয় করি এখন। নানু আর বাবা-মায়ের কাছ থেকে তাদের ছোটবেলার গল্প শুনি। টিভিতে খবর দেখলে ভয় লাগে, মনে হয় আর কখনো কি সবকিছু ঠিক হবে! আমরা সবাই সুস্থ্য থাকবো তো! সাইন্টিস্ট রা কোন একটা ভ্যাকসিন তাড়াতাড়ি আবিষ্কার কেন যে করছে না! অন্য বার রোজা ও ঈদে ঘুরতে, বেড়াতে যাওয়ার অনেক প্ল্যান থাকে। কিন্তু এবারে সেসব কিছুই নেই তাই মনটা খারাপ লাগে। ভাইরাসের জন্য আমরা এবার কোন শপিং করিনি। আর সবচেয়ে বেশি মিস করি আগের স্বাভাবিক জীবনকে। নিজেদেরকে স্বার্থপর মনে হচ্ছে কখনো কখনো। কারন সবার বিপদে সব সময় সবাই যাচ্ছে না। আমার দাদা ভাই খুব অসুস্থ্য কিন্তু আমরা তাকে দেখতে যেতে পারছিনা। তাই আমার মন ভীষণ খারাপ! করোনাভাইরাস সচেতনতায় আমরা সবাই এখন হোম কোয়ারেন্টাইন এ আছি। যেহেতু এখন পর্যন্ত প্রতিরোধ একমাত্র উপায় তাই আমি প্রতিদিন নিজের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখি। হয়ত এই করোনার মধ্যে আল্লাহ্ ভাল কিছু দিয়েছেন। করোনাভাইরাস চলে গেলে আমি নরমাল জীবন যাপন শুরু করব। আগের মত স্কুল আর কোচিং এ যাব, কারাতে প্র্যাকটিস-এ যাব। নতুন কোথাও ঘুরতে যাব। বন্ধুদের কে অনেক মিস করি এটা ওদেরকে একটা টাইট হাগ দিয়ে বলবো। অবশ্যই এমন কোন সংগঠনের সঙ্গে জড়িত হতে চাই যারা এই ধরনের বিপদে বিভিন্ন সেবামূলক কাজ করে। ভবিষ্যতে এ বিপদ গুলো কিভাবে এড়ানো যায় সেগুলো নিয়ে কাজ করতে চাই। সবাইকে নিয়ে সুস্থ্যভাবে বেঁচে থাকতে চাই।
করোনাভাইরাস সম্পর্কে আমি প্রথম ২০২০ সালের জানুয়ারী মাসে জেনেছি। শুনেছিলাম যে চীনের উহানে করোনা ভাইরাস নামে একটা ভাইরাস ধরা পরেছে। আমি বাসায় গল্পের বই পড়ি, অনেক কিছু চর্চা করি। আমার খারাপ লাগছে যে আমি আমার বন্ধুদের সাথে দেখা করতে পারি না। করোনাভাইরাস সচেতনতায় আমি প্রতিদিন হাত ধুই, ঘর পরিষ্কার করি। যারা নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে পারে না তাদেরকে সাহায্য করতে পারলে ভাল লাগত। এই সময় আমার বয়সী বাচ্চাদের জন্য পরামর্শ হল তারা যাতে বেশী দুশ্চিন্তা না করে, নতুন কিছু করার চেষ্ট করে। করোনাভাইরাস চলে গেলে আমি স্বাভাবিক জীবলে ফেরত যাব।
করোনাভাইরাস সম্পর্কে ৩ ফেব্রুয়ারীতে জেনেছিলাম। শুনেছি এটি ছোঁয়াচে ভাইরাস। তখন আমি ভেবেছিলাম এটি কোনো সাংঘাতিক ভাইরাস হবে না। বাসায় আমি সাধারণত নিয়মিত লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছি। আর মায়ের সঙ্গে বসে গল্প করি। পাশাপাশি ব্যায়াম করি, গেমস খেলি, টিভি দেখি। বাসায় আমার মায়ের সাথে গল্প করতে বেশি ভালো লাগে। সারাদিন এভাবে বাসায় থাকতে আমার খারাপ লাগে। বাসা থেকে বাইরে বের হতে পারিনা। করোনাভাইরাস সচেতনতায় আমি নিয়মিত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকি। করোনাভাইরাস যখন চলে যাবে তখন আমি সবার প্রথমে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে দোয়া চাইবো। তারপর মায়ের সাথে সুস্থ্য ঢাকা শহরটি দেখতে যাবো।
করোনাভাইরাস সম্পর্কে আমি প্রথম জেনেছি ২০২০ এর জানুয়ারীর প্রথম দিকে। শুনেছিলাম এই ভাইরাসটিতে চায়নাতে খুবই বাজে অবস্থা হয়েছে, মানুষ মারা যাচ্ছে! এটি বাংলাদেশে একবার ছড়ালে বাংলাদেশের অবস্থা খুবই খারাপ হবে যেহেতু বাংলাদেশ একটি ঘনবসতি দেশ! বাসায় এখন অনলাইন ক্লাস, বিভিন্ন বই পড়ে, সিরিজ দেখে, মুভি দেখে, মাঝে মাঝে রান্নার চেষ্টা করে সময় কাটাই। সত্যি কথা বলতে কোয়ারেন্টাইনের প্রথম ২ সপ্তাহ খুবই ভালো লেগেছিল। অনেকদিন পর এমন সময় কাটাতে পেরে ভালোই লেগেছিল। বাসায় সারাদিন থাকতে এখন একটু খারাপই লাগে! কোচিং, কলেজ আর ফ্রেন্ড দের মিস করি। বাহিরে বের হওয়া মিস করি।করোনাভাইরাস সচেতনতায় আমি নিজের জন্যে যা করি তা হলো পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকি, বাসা থেকে বের হচ্ছিনা, মা বাবা বাহিরে থেকে আসলে টাচ্ এভোয়েড করি। আর যারা এ ভাইরাস নিয়ে এখনো অসচেতন, হাসি তামাশা করছে তাদের ভাইরাসটির ভয়াবহতা সম্পর্কে ভালোভাবে জানাতে পারলে ভালো লাগতো। যে মানুষগুলো খাবার পাচ্ছেনা, প্রতিদিন তাদের জন্য নিজে কিছু করতে পারলে ভালো লাগতো। আমি পরামর্শ দেবো এ ভাইরাস নিয়ে আতংকিত হতে হবেনা এমন না। অবশ্যই এটি একটা আতংক হওয়ার মতোই বিষয়! এখন আমাদের উচিৎ পরিষ্কার থাকা আর সোশ্যাল ডিসট্যান্স মেইনটেন করা। ভাইরাসটি চলে গেছে কোন মেডিসিনটির জন্য সেটা সম্পর্কে জেনে দেখবো। এরপর ১৫/২০ দিন আমি নিজে বাসায় থেকে দেখবো আসলেই আমরা পুরোপুরি ঝুঁকিমুক্ত কিনা। এরপর প্রথমেই বাহিরে গিয়ে আমার ফ্রেন্ডদের সাথে দেখা করবো, একসাথে খেতে যাবো।
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে চিকিৎসকের সরাসরি পরামর্শ পেতে দেখুন: মনের খবর ব্লগ
করোনায় মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক টেলিসেবা পেতে দেখুন: সার্বক্ষণিক যোগাযোগ
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
করোনায় সচেতনতা বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও বার্তা দেখুন: সুস্থ থাকুন সর্তক থাকুন