পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার বা দুর্ঘটনা পরবর্তী মানসিক বৈকল্য, অবসেসিভ-কমপালসিভ ডিসঅর্ডার এবং অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডার’র মতো মানসিক রোগসমূহ রক্তের প্রদাহজনিত রোগের সাথে সম্পর্কযুক্ত বলে সম্প্রতি এক গবেষণায় জানা গেছে।
প্রধান গবেষক কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটির মেগান ই. রিনা জানান, এই গবেষণার প্রধান বিষয়টিই হলো কিভাবে আবেগ শরীরবৃত্তিয় কার্যকলাপকে প্রভাবিত করে সেটি নির্ণয় করা। কেউ যখন নেতিবাচক আবেগ যেমন দুঃখ, রাগ, উদ্বেগ ইত্যাদির মুখোমুখি হয় তখন এসব তার শরীরের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে।
বহুদিন ধরেই দীর্ঘস্থায়ী রোগ কিভাবে উদ্বেগ সৃষ্টির মাধ্যমে মানসিক ভারসাম্যতা তৈরি করে তা নিয়ে বিস্তর গবেষণা চালানো হয়েছে। কিন্তু এর ফলে রক্তের প্রদাহজনিত সংক্রামক রোগে কোনো প্রকার প্রভাব বিস্তার করে কি না তা নিয়ে তেমন একটা আলোকপাত করা হয়নি।
রিনা জানান, গবেষণায় ক্যান্সার, এইডস কিংবা কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি ও বিস্তৃত উদ্বেগজনিত মানসিক সমস্যা পরিলক্ষিত হয়েছে।
গবেষকরা ৪১ জন মানসিক রোগী যাদের রক্তে দীর্ঘমেয়াদী কোনো সংক্রামকের জীবাণু রয়েছে তাদের ওপর এ গবেষণা চালান। এসব ব্যক্তিদের মধ্যে পিএসটিডি বা ওসিডি কিংবা অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডার পরলিক্ষিত হয়েছে এবং তাদের রক্ত সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি দিনকে দিন আরো বাড়ছে। অপরদিকে যেসব ব্যক্তিদের মধ্যে এ ধরণের মানসিক সমস্যা নেই তাদের রক্ত তুলনামূলকভাবে কম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
পিএসওয়াই পোস্টকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে রিনা বলেন, উদ্বেগ- নির্দিষ্ট করে বলতে গেলে ভয়, দুশ্চিন্তা, হাইপারভিজিলেন্স ইত্যাদি একজন ব্যক্তির মানসিক ক্ষতির পাশাপাশি শারীরিক ক্ষতি সাধন করছে। শরীরবৃত্তীয় প্রভাবের পরিপ্রেক্ষিতে সিসটেমেটিক ইনফ্লেমেশন বা পদ্ধতিগত প্রদাহ বিষয়টি সম্পূর্ণ উহ্য থাকে। অর্থাৎ এটি ভিতরে ভিতরে একজন মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে কিন্তু ওই ব্যক্তি কিছুই বুঝতে পারছেন না।
এই বিশেষজ্ঞের মত হলো, রক্তের প্রদাহজনিত নানান দীর্ঘমেয়াদি রোগের কারণ উদ্বেগ কি না তা এখনো পরিষ্কারভাবে নির্ণয় করা না গেলেও শুধু মনের স্বাস্থ্য নয় বরং শারীরিক সুস্থতার জন্য এটির (উদ্বেগ) জন্য অবশ্যই চিকিৎসা নেয়া উচিত।
অনুবাদ করেছেন: তৌহিদ সোহান
সূত্র : পিএসওয়াই পোস্ট
ওয়েব লিংক : https://www.psypost.org/2018/12/anxiety-disorders-ptsd-and-ocd-linked-to-inflammatory-dysregulation-study-finds-52766