বাংলাদেশে মঞ্চ ও পর্দায় কর্মরত চলচ্চিত্র নির্মাতা এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্টদের জন্য আত্মহত্যা প্রতিরোধে সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে এক বিশেষ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১:৩০টা পর্যন্ত এ কর্মশালাটি আয়োজন করা হয়।
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সৌজন্যে আয়োজিত এ কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. মাহবুবুর রহমান, অধ্যাপক ডা. মো. নিজাম উদ্দিন, অধ্যাপক ডা. সালাহ্উদ্দিন কাউসার বিপ্লব, ডা. মুনতাসীর মারুফ, ডা. মো. তৈয়বুর রহমান রয়েল , ডা. মো. রাহেনুল ইসলাম সহ অন্যান্য চিকিৎসক ও বিনোদন জগতের কলাকুশলীরা।
সামাজিক সীমাবদ্ধতা দূর করে আত্মহত্যা প্রতিরোধের আহ্বান জানিয়ে কর্মশালার উদ্বোধন করেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. মাহবুবুর রহমান। অনুষ্ঠানে ‘আত্মহত্যা: বাংলাদেশের দৃষ্টিভঙ্গি’ বিষয়ে উপস্থাপনা করেন ডা. মুনতাসীর মারুফ। তিনি আত্মহত্যা-সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরে বলেন, “ইচ্ছে করে নিজের ক্ষতি করাই হলো একটি গুরুতর সমস্যা। প্রতি বছর বাংলাদেশে প্রায় ১৩,০০০ মানুষ আত্মহত্যা করে, যা প্রতি লাখে ৭-৮ জন। বেশিরভাগ আত্মহত্যার কারণই কোনো না কোনো মানসিক রোগ।”
আত্মহত্যা প্রতিরোধের গুরুত্ব তুলে ধরে অধ্যাপক ডা. মো. নিজাম উদ্দিন বলেন, “আত্মহত্যা যে একটি অপরাধ, সেটি মানুষের মাঝে সঠিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে গণমাধ্যমকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে।”
অনুষ্ঠানে লেখক ও সাংবাদিক সাইফুল্লাহ রিয়াদ ‘আত্মহত্যা প্রতিরোধ: চলচ্চিত্র নির্মাতা এবং মঞ্চ ও পর্দায় কর্মরতদের জন্য একটি সম্পদ’ শীর্ষক উপস্থাপনা করেন।
কর্মশালার অংশ হিসেবে অংশগ্রহণকারীরা পাঁচটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে আলোচনা করেন এবং আত্মহত্যা প্রতিরোধে তাঁদের মতামত ও সুপারিশ তুলে ধরেন।
সকলকে একসঙ্গে আত্মহত্যা প্রতিরোধে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. মাহবুবুর রহমান সমাপনী বক্তব্যে চলচ্চিত্র নির্মাতা ও সংশ্লিষ্টদের উদ্দেশে বলেন, “চিত্রনাট্যের প্রয়োজনে আত্মহত্যার দৃশ্য এমনভাবে উপস্থাপন করতে হবে, যাতে কেউ এটিকে ইতিবাচক হিসেবে গ্রহণ না করে।”
এই কর্মশালার মাধ্যমে বাংলাদেশে মঞ্চ ও পর্দায় কর্মরত চলচ্চিত্র নির্মাতা এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্টদের মধ্যে আত্মহত্যা প্রতিরোধ ও মানসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা যায়।
আরও পড়ুন- ভোলার মনপুরা উপজেলায় বিএপি’র মানসিক স্বাস্থ্যসেবা ক্যাম্প আয়োজন