আমরা প্রায়ই বলি বা শুনি যে, আমি খুব স্ট্রেস এ আছি। স্ট্রেস কিভাবে আমাদের ভালো থাকতে বাধা দেয় তা নিয়ে এবার খুবই সাধারণ কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করার চেষ্টা করব।
স্ট্রেস ও মানসিক রোগঃ স্ট্রেস দ্বারা প্রভাবিত হয় না এমন মানসিক রোগ আছে বলা খুব কঠিনই। ১৯৭৭ সালে George Engel প্রস্তাবিত Biopsychosocial Model বহুল প্রচলিত এবং গৃহীত মতবাদ এখনকার সময়ে। এই মডেল অনুযায়ী আমাদের বংশগতির সাথে সাথে পরিবেশ ও ব্যক্তি মানসিক রোগ হওয়ার পেছনে ভূমিকা রাখে। সুতরাং বংশগতি ও স্ট্রেস মিলেই মানসিক রোগের সূচনা করে। স্ট্রেস কোনো ব্যক্তিকে রোগের দিতে ঠেলে দেয়, কাওকে আবার রোগের উদ্দীপক হিসাবে কাজ করে, আবার কারো কারো রোগটাকে দীর্ঘায়িত করে। রোগীর নিজের স্ট্রেস এর সাথে কাজ করে পরিবার ও পারিপার্শ্বিকতার স্ট্রেস, যা কিনা রোগের লক্ষণ, চিকিৎসা, ভোগান্তি অনেক ভাবে প্রভাবিত করে। প্রত্যেক বড় ও ছোট মানসিক রোগের সাথে স্ট্রেস অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত। আলাদা আলাদা করে বলা সম্ভব তাতে অনেক সময় ও জায়গা দরকার। তার চেয়ে সবচেয়ে বড় যে তথ্যটি দিতে চাই, সেটা হল স্ট্রেস মানসিক রোগের ঘটানো, দীর্ঘায়িত করা, চিকিৎসা, উন্নতি, উপকার, পুনরায় হওয়া সহ প্রত্যেক জায়গায় জড়িত।
স্ট্রেস ও শারীরিক রোগঃ আগের আলোচনা থেকে আমরা জানতে পেরেছি স্ট্রেস কিভাবে আমাদের শরীরের হরমোন সহ গুরুত্বপূর্ণ বিপাক ক্রিয়া ব্যাঘাত ঘটায় ও আমাদেরকে রোগের মুখে ফেলে। আমাদের অনেক শারীরিক রোগ আছে যেগুলো একবার হলে আর ভালো হয় না সেগুলোর উপসর্গ ও চিকিৎসা আমাদের স্ট্রেস তৈরি করে এবং সেটা অনেক সময়ই নতুন করে মানসিক রোগ তৈরি করে। দীর্ঘ সময় স্ট্রেসে থাকলে আমাদের শরীরে বেশ গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন হতে থাকে। শারীরিক বিভিন্ন উপসর্গের সাথে সাথে মানসিক রোগ দেখা দিতে পারে।
আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবন স্ট্রেস এর মুখে কত দক্ষ ভাবে মোকাবেলা করতে পারব এবং শিখব, সেটা আমাদের জীবনে সুখের পরিমাণ অনেকাংশে ঠিক করে দিবে।
চলবে…
প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব। মনের খবরের সম্পাদকীয় নীতি বা মতের সঙ্গে লেখকের মতামতের অমিল থাকতেই পারে। তাই মনের খবরে প্রকাশিত কলামের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় নেবে না কর্তৃপক্ষ।