সামাজিক মাধ্যমের নানা ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে প্রাত্যহিক জীবনে। এমনকি শিশুদের খাদ্যাভ্যাসেও সামাজিক মাধ্যমের বিরূপ প্রভাব পড়ছে। অস্বাস্থ্যকর খাবারের আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপন দেখে শিশুরা ঝুঁকছে ফাস্টফুডের নেশায়।
অফকমের নতুন একটি জরিপ অনুযায়ী যুক্তরাজ্যে ৮-১১ বছর বয়সী শিশুদের ৯৩ শতাংশ ইন্টারনেট ব্যবহার করে। তাদের মধ্যে ৭৭ শতাংশ ইউটিউব দেখে এবং ১৮ শতাংশের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট আছে। ১২-১৫ বছর বয়সীদের ৯৯ শতাংশ ইন্টারনেট ব্যবহার করে, ৮৯ শতাংশ ইউটিউব ব্যবহার করে এবং ৬৯ শতাংশের সোশ্যাল মিডিয়ায় অ্যাকাউন্ট আছে। তারা ইউটিউব ব্লগারদের ভিডিওগুলো উপভোগ করে।
ইউনিভার্সিটি অব লিভারপুলের ‘অ্যাপিটাইট অ্যান্ড ওবেসিটি রিসার্চ’ বিভাগের পিএইচডি স্টুডেন্ট অ্যানা কোয়াটেস তার গবেষণায় শিশুদের খাদ্যাভ্যাসে সোশ্যাল মিডিয়ার বিরূপ প্রভাবের বিষয়টি তুলে এনেছেন। সেখানে দেখা গেছে ব্লগারদের অনেক ভিডিওতেও স্ন্যাকস এর প্রতি আকৃষ্ট করা হয়েছে শিশুদের।
১৭৬ জন শিশুর উপর করা এই গবেষণায় বয়স সীমা ছিল ৯ থেকে ১১ বছর। তাদেরকে তিনটি গ্রুপে ভাগ করে দেয়া হয়। জনপ্রিয় কিছু ব্লগারের ইনস্টাগ্রাম পেজ কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হয় তাদের জন্য। একটি গ্রুপকে দেখানো হয় অস্বাস্থ্যকর খাবারসহ ব্লগারের ছবি দেখানো হয়, আরেকটি গ্রুপকে স্বাস্থ্যকর খাবারসহ ব্লগারের ছবি দেখানো হয় এবং তৃতীয় গ্রুপকে কোনো খাবারের আইটেম ছাড়া ব্লগারের ছবি দেখানো হয়। এরপর অংশগ্রহণকারীদের স্ন্যাকস খাওয়ার পরিমাণ লক্ষ্য করা হয়। দেখা গেছে যারা অস্বাস্থ্যকর খাবারের ছবি দেখেছে, তারা অন্যদের তুলনায় ৩২ শতাংশ বেশি অস্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস গ্রহণ করেছে।
গবেষকের মতে সোশ্যাল মিডিয়ায় অস্বাস্থ্যকর খাবারের ছবি দেখে সেগুলো খাওয়ার পরিমাণ বাড়ে। ফলে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার পরিমাণ কমে যায়।
এতে তাদের স্বাস্থ্যের ক্ষতি হচ্ছে। শিশুরা সেলেব্রিটিদের চাইতে ব্লগারদেরকে বেশি বিশ্বাস করে। তাই তারা যেগুলো সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করে, সেগুলোর প্রভাব শিশুদের মনের উপর পড়ে। একারণে বিষয়টি অভিভাবকদের খেয়াল রাখা উচিত এবং নিয়মনীতির আওতায় নিয়ে আসা উচিত।