শিশুর মানসিক সুস্বাস্থ্যের জন্য পিতামাতার উচিত তাদের সন্তানের সঙ্গে কথাবার্তা বলা। এছাড়া নানা উপায়ে শিশুর সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগের মাধ্যমে ভাব বিনিময় করে শিশুর মানসিক বিকাশে সহায়তা করা যায়। এ লেখায় রয়েছে তেমন কিছু উপায়। এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে হাফিংটন পোস্ট।
১. শিশুকে অবমূল্যায়ন নয়
শিশুর মানসিক সুস্বাস্থ্যের জন্য পিতা-মাতার উচিত তার সঙ্গে অবমূল্যায়ন না করেই কথা বলা। মনে রাখতে হবে, তার মতামত গুরুত্ব দেওয়া উচিত। এক্ষেত্রে একটা চার বছর বয়সের শিশুর সঙ্গে বিষণ্ণতা কিংবা মানসিক কোনো রোগ বিষয়ে আলোচনা করা বাস্তবসম্মত নয়। কিন্তু তার বদলে দুঃখ, উদ্বেগ, আনন্দ ও রাগের মতো বিষয়গুলো আলোচনার মাধ্যমে তুলে ধরা যেতে পারে। এতে মূলত শিশুকে তাদের আবেগ ও তা নিয়ন্ত্রণের উপায় শিক্ষা দেওয়া যাবে।
২. নিজেকে অবমূল্যায়ন নয়
শিশুর সঙ্গে আলোচনায় নিজেকে অবমূল্যায়ন করা উচিত নয়। এক্ষেত্রে শিশুর যেমন গুরুত্ব রয়েছে তেমন নিজের গুরুত্বও তুলে ধরতে হবে। সঠিক শব্দের ব্যবহারে শিশুর মানসিক অবস্থা বুঝতে হবে এবং নিজের মতামত জানাতে হবে। এতে কোনো বিষয় অস্বস্তিকর মনে হলেও তা এড়িয়ে যাওয়া যাবে না।
৩. তিনটি ছোট শব্দ
‘তুমি কেমন আছ?’ এমন একটি প্রশ্ন শিশুর সঙ্গে আলোচনায় যথেষ্ট গুরুত্ব বহন করে। তবে এ প্রশ্নটি আপনি সব সময় করতে পারবেন না। এক্ষেত্রে আপনার তাকে বুঝিয়ে দিতে হবে যে, আপনি তাকে কথাবার্তায় উৎসাহিত করছেন। এতে সে যেন তার আবেগগুলো পরিষ্কারভাবে তুলে ধরে সেজন্য উৎসাহিত করতে হবে। বাড়িতে কিংবা বাইরে যে কোনো স্থানেই হোক না কেন, শিশু যেন পর্যাপ্ত সময় পায় এ কথাগুলো বলতে সেজন্য খেয়াল রাখতে হবে।
কথাবার্তা শুরু করতে হবে তার অনুভূতি দপ্রকাশ করার সুযোগ দিয়ে। এছাড়া অনুমান করার খেলা হতে পারে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায়। যেমন তার কোনো একটি আবেগগত বিষয় অনুমান করে নিয়ে খেলার ছলে তার সত্যতা যাচাই করা। এছাড়া বই পড়ার সময়
৪. একবারেই সব সমস্যার সমাধান নয়
ছোটবেলায় এমন কোনো পরিস্থিতি মনে করতে পারেন কি, যেখানে আপনি কিছুই বলচে চাইছেন না কিন্তু আপনাকে কোনো একটা বিষয়ে কথা বলানোর জন্য জোর করা হচ্ছে? এমন পরিস্থিতিতে আপনার শিশুকে না ফেলাই ভালো। তাই শিশু যখন কোনো বিষয়ে কথা বলতে চাইবে না, তখন তাকে সে বিষয়ে জোর করার দরকার নেই। প্রয়োজনে পরবর্তীতে তাকে আবার সে বিষয়ে কথা বলতে উৎসাহিত করা যেতে পারে।
৫. বাস্তবতা বুঝতে দিন
পৃথিবী যে একেবারে সুখের স্থান কিংবা সম্পূর্ণ দুঃখের স্থান, এমনটা মনে করার কোনো কারণ নেই। শিশুও যেন এ বিষয়ে ভুল ধারণা না রাখে সেজন্য সতর্ক থাকা প্রয়োজন। শিশুকে বুঝতে দিন দুঃখ-কষ্ট যেমন আছে তেমন সুখ-আনন্দও আছে। এ কারণে তাকে বোঝান যে, কখনও দুঃখ পাওয়া, উদ্বিগ্ন হওয়া কিংবা মানসিক চাপে থাকতে হতে পারে সবাইকেই।
৬. অপরাধবোধ দূরে রাখুন
শিশুর কোনো কারণে পিতা-মাতার অপরাধবোধ কিংবা অশান্তি করা প্রয়োজন নেই। এটি শিশুর জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। শিশু যদি কোনো কারণে অপরাধবোধে ভোগে তাহলে তাও দূরে সরানোর জন্য উৎসাহিত করতে হবে।
৭. মুখোশ বাদ দিন
শিশুকে বাস্তবতা লুকিয়ে রেখে নিজেকে একজন সুপারম্যান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই। বাস্তবতা শিশুর বোঝার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাকে আপনার দৈনন্দিন কার্যকলাপ, কাজের চাপ, আবেগ-অনুভূতি ইত্যাদি বুঝিয়ে বলুন।
৮. সবকিছু একা নয়
শিশুর সঙ্গে যোগাযোগে যদি আপনার সমস্যা হয় তাহলে তা অন্য কারো সহায়তায় করতে পারেন। এক্ষেত্রে আত্মীয়-স্বজন, শিক্ষক, শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান কিংবা প্রফেশনালদের সহায়তা পাওয়া যাবে।
স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে