Close Menu
    What's Hot

    শিশুদের কেন এবং কিভাবে পরার্থপরতার প্রেরণা দেয়া যায়

    অভিভাবকত্ব শুধুমাত্র লালন-পালনের নাম নয়, এটি একটি সুসংগঠিত প্রক্রিয়া

    সিদ্ধান্তহীনতা কাটিয়ে উঠতে মানসিক শক্তি বৃদ্ধির কৌশল

    সাইকিয়াট্রি বিভাগের মে মাসের বৈকালিক আউটডোর সূচি

    কেউ আমার সঙ্গে ১০ মিনিট থাকলেই বিরক্ত হয়ে যায়

    Facebook X (Twitter) Instagram
    Tuesday, July 1
    Facebook X (Twitter) Instagram
    মনের খবরমনের খবর
    ENGLISH
    • মূল পাতা
    • কার্যক্রম
      1. জাতীয়
      2. আন্তর্জাতিক
      Featured
      কার্যক্রম June 30, 2025

      অভিভাবকত্ব শুধুমাত্র লালন-পালনের নাম নয়, এটি একটি সুসংগঠিত প্রক্রিয়া

      Recent

      অভিভাবকত্ব শুধুমাত্র লালন-পালনের নাম নয়, এটি একটি সুসংগঠিত প্রক্রিয়া

      সাইকিয়াট্রি বিভাগের মে মাসের বৈকালিক আউটডোর সূচি

      সুস্থ ঘুমই সুস্থ জীবনের ভিত্তি

    • প্রতিদিনের চিঠি
    • মানসিক স্বাস্থ্য
      1. মাদকাসক্তি
      2. মানসিক স্বাস্থ্য সেবা তথ্য
      3. যৌন স্বাস্থ্য
      4. শিশু কিশোর
      Featured
      ফিচার October 7, 2024

      যৌনতা নিয়ে ভুল ধারণা

      Recent

      যৌনতা নিয়ে ভুল ধারণা

      শিশুর আবেগ নিয়ন্ত্রণ কীভাবে শেখাবেন

      কর্মব্যস্ততা প্রভাব ফেলে যৌনজীবনে

    • ফিচার
    • প্রশ্ন-উত্তর
      1. বিশেষজ্ঞ পরামর্শ
      2. মাদকাসক্তি
      3. মানসিক স্বাস্থ্য
      4. যৌন স্বাস্থ্য
      Featured
      প্রশ্ন-উত্তর May 3, 2025

      কেউ আমার সঙ্গে ১০ মিনিট থাকলেই বিরক্ত হয়ে যায়

      Recent

      কেউ আমার সঙ্গে ১০ মিনিট থাকলেই বিরক্ত হয়ে যায়

      বর্তমানে খুব ভয়াবহ সমস্যায় ভুগছি, কী করবো বুঝতে পারছিনা

      রাতে ঘুমাতে পারি না, সবসময় এক ধরনের অস্থিরতা অনুভব করি

    • জীবনাচরণ
      1. অন্যান্য
      2. অপরাধ আচরণ
      3. কুসংস্কার
      4. মতামত
      5. মন ও ক্রীড়া
      6. মন প্রতিদিন
      7. মনোসামাজিক বিশ্লেষণ
      8. সাক্ষাৎকার
      Featured
      দিনের চিঠি April 28, 2025

      রায়হান মানুষের থেকে দূরে সরে যাচ্ছে, অকারণে আতঙ্কিত বোধ করছে

      Recent

      রায়হান মানুষের থেকে দূরে সরে যাচ্ছে, অকারণে আতঙ্কিত বোধ করছে

      জীবনের ফাঁদে যেন আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে গেছি, কায়দা করেও আর যেন বাঁচতে পারছি না!

      মা আর নিজেকে চেনেন না — ঘুম নেই, স্মৃতি নেই, পরিচ্ছন্নতাও নেই!

    • মনস্তত্ত্ব.
      1. তারকার মন
      2. ব্যাক্তিত্ব
      3. মনস্তত্ত্ব
      Featured
      ফিচার December 5, 2023

      শিশুদের ওসিডি অভিভাবকেরই দায় বেশি

      Recent

      শিশুদের ওসিডি অভিভাবকেরই দায় বেশি

      মানুষ বদলালেই কেবল পৃথিবী বদলাবে

      প্রসঙ্গ : সাইক্লোথাইমিক ব্যক্তিত্ব

    • করোনায় মনের সুরক্ষা
      1. টিপস্
      2. বিশেষজ্ঞের মতামত
      3. বিশ্ব পরিস্থিতি
      4. সার্বক্ষনিক যোগাযোগ
      Featured
      টিপস্ September 28, 2024

      MK4C-তে কীভাবে টেলিসাইকিয়াট্রি চিকিৎসা নেবেন?

      Recent

      MK4C-তে কীভাবে টেলিসাইকিয়াট্রি চিকিৎসা নেবেন?

      প্রবাসীদের জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় MK4C-তে মানসিক স্বাস্থ্য সেবা নেওয়ার পরামর্শ

      পরিবার যেভাবে শিশুকে গড়ে তুলবে

    মনের খবরমনের খবর
    You are at:Home » রবি ঠাকুরের ‘ছুটি’ : ফটিকের ‘কন্ডাক্ট ডিসঅর্ডার’
    ফিচার

    রবি ঠাকুরের ‘ছুটি’ : ফটিকের ‘কন্ডাক্ট ডিসঅর্ডার’

    আহমেদ হেলালBy আহমেদ হেলালApril 8, 2015No Comments7 Mins Read1 Views
    Facebook Twitter Pinterest Telegram LinkedIn Tumblr Email Reddit
    Share
    Facebook Twitter LinkedIn Pinterest WhatsApp Email

    চপলতা শিশুদের বৈশিষ্ট্য। শিশুসুলভ চপলতাকে ছাপিয়ে রবীন্দ্রনাথের ‘ছুটি’ গল্পের ফটিক আশেপাশের মানুষকে ত্যক্ত করে বেড়ায়। গল্পের শুরুতেই দেখা যায়, নদীর ধারে একটি শালকাঠের গুঁড়িকে গড়িয়ে গড়িয়ে স্থানান্তর করার জন্য সে সঙ্গী-সাথী নিয়ে উদ্যোগী হয়। উদ্দেশ্য কাঠের গুঁড়ির মালিককে বিস্মিত করা, বিরক্ত করা এবং অসুবিধার মধ্যে ফেলা। এই কাজের বাধা হয়ে যখন তার ছোট ভাই মাখনলাল গুঁড়ির উপর উঠে বসে, তখন সাব্যস্ত হয় ভাইসহই গুঁড়িটিকে সরানো হবে, পরিণতিতে ছোট ভাই পড়ে যেয়ে কিছুটা ব্যথা পায়। এই অতিচপলতার আড়ালে সে তার সমবয়সীদের সদা সন্ত্রস্ত করে রাখে, তাদের উপর এক ধরনের কর্তৃত্ব ফলায়। সে তার ছোট ভাই্ এর উপর আস্ফালন করে হুমকী দেয় “দেখ্, মার খাবি। এইবেলা ওঠ্।”

    অচেনা পথিক যখন পথনির্দেশ জানতে চায়, তখন সে পথিককে রীতিমত উপেক্ষা করে এবং পথের নির্দেশ না দেয়ার চেষ্টায় রত থাকে, অথচ সেই আরাধ্য পথটি কিন্তু ফটিকেরই বাড়ির পথ। গাছের গুঁড়ি সরিয়ে সে অপরের সম্পদের ক্ষতিসাধন করতে চায়, পথের নির্দেশ না দিয়ে সে অপরের প্রতি নিষ্ঠুরতা দেখাতে চায়।

    বাসায় ফিরে তার মা যখন তাকে ডেকে পাঠায় তখন প্রথমে সে উপেক্ষা করে মায়ের সামনে যেতে চায়না। তাকে ধরে জোর করে মায়ের সামনে উপস্থিত করানো হয়। ছোট ভাই মাখনলাল নালিশ করায় তার উপর চড়াও হয় এবং একপর্যায়ে সে মাকেও ধাক্কা দিয়ে আঘাত করতে চায়। ‘‘মা চীৎকার করিয়া কহিলেন, ‘অ্যাঁ, তুই আমার গায়ে হাত তুলিস’!” ‘ফটিক’ এর এই ধরনের আচরণ আমাদের ধারণা দেয় যে, তার মধ্যে আচরণজনিত সমস্যা বা কন্ডাক্ট ডিসঅর্ডার এর কিছু লক্ষণ আছে। কন্ডাক্ট ডিসঅর্ডার আছে এমন শিশুরা প্রায়ই অন্যকে আঘাত করে, মা-বাবার অবাধ্য হয় এবং পরিণতির কথা চিন্তা না করে আক্রমনের সময় যেকোনো বস্তু দিয়ে অপরকে আঘাত করতে পারে। ‘ছুটি’ গল্পের একাধিক স্থানে আমরা তেরো বছর বয়সী ফটিকের এহেন আচরণ দেখে থাকি।

    কন্ডাক্ট ডিসঅর্ডারের ক্ষেত্রে শিশুদের পুণরাবৃত্তিমূলক এবং প্রায় স্থায়ী কিছু অবাধ্য আচরণ দেখা যায় যা সামাজিক রীতি নীতির পরিপন্থী এবং লক্ষণগুলোর মধ্যে বিশেষ কয়েকটি কমপক্ষে ৬ মাস ধরে শিশুর মধ্যে বর্তমান থাকবে। ফটিকের ক্ষেত্রেও এর ব্যত্যয় হয়নি। মামা বিশ্বম্ভরবাবুর কাছে ফটিক সম্পর্কে বলতে যেয়ে ‘অবাধ্য উচ্ছৃঙ্খলতা’, ‘পাঠে ‘অমনোযোগ’ এই দুই ধরনের শব্দাবলী ব্যবহার করেন ফটিকের মা। তিনি আরো বলেন, “ফটিক আমার হাড় জ্বালাতন করিয়াছে।’’ ফটিকের আচরণে সন্ত্রস্ত মা চাচ্ছিলেন, ছেলে কোলকাতায় মামার বাড়িতে পাঠিয়ে দিতে। রবীন্দ্রনাথের ভাষায়, কারণ তাঁহার মনে সর্বদাই আশঙ্কা ছিল, কোন্দিন সে মাখনকে জলেই ফেলিয়া দেয়, কি মাথাই ফাটায়, কি কী একটা দুর্ঘটনা ঘটায়।  এই ধরনের একটি ভয়ার্ত পরিবেশ তৈরি করে রাখাই কন্ডাক্ট ডিসঅর্ডার আছে এমন শিশুদের বৈশিষ্ট্য।

    হলফ করে বলার জো নেই, ছুটি গল্পের ‘ফটিক’ এর মধ্যে কন্ডাক্ট ডিসঅর্ডার ছিল কি ছিল না। ফটিক তো কোনো রক্ত মাংসের মানুষ নয়, লেখকের কল্পনায় তৈরি একটি চরিত্রমাত্র। কিন্তু এই চরিত্রটি রূপায়ন করতে যেয়ে রবীন্দ্রনাথ যে অনুসঙ্গগুলো উল্লেখ করেছেন তার মধ্যে কন্ডাক্ট ডিসঅর্ডারের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ বিদ্যমান। কন্ডাক্ট ডিসঅর্ডারের প্রধান লক্ষণগুলো হচ্ছে, অপরের প্রতি আক্রমনাত্মক আচরণ, মা-বাবা ও শিক্ষকের প্রতি অবাধ্যতা, হুমকী দেয়া, অসততা, মিথ্যা কথা বলা, চুরি করা, অপরের সম্পদের ক্ষতি সাধন করা কখনো নিছক মজা করার জন্যই, সামাজিক নিয়মরীতির বিরুদ্ধাচরণ করা ইত্যাদি। ফটিক নিজের ভাই ও মায়ের প্রতি আক্রমনাত্মক, মাকে আঘাত করতে উদ্যত হয়, ভাইকে হুমকী দেয়, তার কর্তৃত্বপরায়ণতার জন্য বন্ধুরা ভয়ে থাকে, তার বশ্যতা মেনে নেয়, কখনো মিথ্যা বলে, অপরের ক্ষতিসাধন করার জন্য গাছের গুঁড়ি সরিয়ে রাখে, পথিককে নিজ বাড়ির  রাস্তাও বলে না, পড়ালেখায় অমনোযোগী থাকে, শিক্ষকের কাছে নিয়ত শাস্তি পায়, কখনো বাড়ি থেকে পালায়।

    পাশাপাশি একটি তেরো চৌদ্দ বছরের কিশোরের স্বাভাবিক বেড়ে ওঠা, তার বয়োসন্ধিকালের সংকট এবং বৈশিষ্ট্যগুলোও ফটিকের মধ্যে রয়েছে। এই বয়সে সে না বড়, না ছোট।  রবীন্দ্রনাথের ভাষায়, ‘তেরো-চৌদ্দ বৎসরের ছেলের মতো পৃথিবীতে এমন বালাই আর নাই। শোভাও নাই, কোনো কাজেও লাগে না। স্নেহও উদ্রেক করে না, তাহার সঙ্গসুখও বিশেষ প্রার্থনীয় নহে। তাহার মুখে আধে-আধো কথাও ন্যাকামি, পাকা কথাও জ্যাঠামি এবং কথামাত্রই প্রগলভতা।’

    ফটিকের সমূদয় আচরণের সাথে বয়োসন্ধির সংকটও মামার বাড়িতে তাকে খানিকটা একপেশে করে রাখে, পরিবারে তার অন্তর্ভূক্তি সাবলীল হয়না, ‘এইজন্য আপনার অস্তিত্ব সম্বন্ধে সর্বদা লজ্জিত ও ক্ষমাপ্রার্থী হইয়া থাকে’।  এটি বয়োসন্ধির সংকটের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য। এই বয়োসন্ধিকালের সংকটে অভিভাবকের যে ধরনের ভারসাম্যমূলক আচরণ করলে একটি শিশু সঠিকভাবে বিকশিত হতে পারে ফটিক সে ধরনের আচরণ থেকে বঞ্চিত। স্নেহের  বদলে  সে পায় নিগ্রহ এবং নিজেকে মনে করে অপাঙক্তেয়। ‘চারিদিকের স্নেহশূন্য বিরাগ তাহাকে পদে পদে কাঁটার মতো বিঁধে’, ফলে তার মানসিক বিকাশ বারবার হোঁচট খায়। উপরন্তু এই বয়সে বিপরীত লিঙ্গের প্রতি যখন বিশেষ কৌতুহল থাকে, সেই সময়ে তাদের কাছ থেকে উপেক্ষা ফটিককে আরো বেশি করে মর্মবেদনা দেয়। উৎসাহের বদলে তার প্রতি তীর্যক মন্তব্যে সে আরো ব্যথিত হয়। বয়োসন্ধির এই টানাপোড়েনের বিষয়টি সে কারো সাথে ভাগ করে নিতে পারেনা, নিজেকে প্রকাশ করে হালকা হবার মত জায়গাটুকুও তার নেই। গ্রামের ছেলে ফটিক কোলকাতার ইট পাথরের দেয়াল ঘেরা ঘরে হাসফাঁস করে আবেগ প্রকাশের জন্য, কাউকে পায়না।

    একদিকে বয়োসন্ধির সংকট আবার আরেকদিকে কন্ডাক্ট ডিসঅর্ডার, তার লেখাপড়াকে বাধাগ্রস্থ করে। স্কুলে সে পড়া বুঝতে পারেনা, পাঠে অমনোযোগী থাকে, স্কুলের বই হারিয়ে ফেলে এবং শিক্ষকের কাছে নানা কারণে শাস্তির মুখোমুখি হয়। তার সমস্যা এতই প্রকট হয়ে উঠলো যে, নিজের মামাতো ভাইয়েরা তাকে নিজের ভাই হিসেবে পরিচয় দিতে ল্জ্জাবোধ করতো। কন্ডাক্ট ডিসঅর্ডারের ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, আচরণজনিত ত্রুটি এবং সামাজিক রীতিবিরুদ্ধ কাজ করার কারণে পরিবারের সদস্য বিশেষত বাবা-মা তাদের সন্তানটিকে নিয়ে বিব্রত থাকেন, লজ্জ্বিত হন। রবীন্দ্রনাথের ফটিক চরিত্রের বিশেষত্ব এই যে, একদিকে সে বয়োসন্ধিকালের স্বাভাবিক বিকাশের ধারায় অবস্থান করে  সমাজ ও পরিবার থেকে সুষম আচরণ পায়না, আরেকদিকে তার মধ্যে কিছু নিয়ম ভাঙার আচরণ অবাধ্যতা দেখা যায়। ফটিকের যদি অকালে পিতৃবিয়োগ না ঘটতো, তাকে যদি কোলকাতায় আসতে না হতো, যদি মামীর স্নেহ পরশ পেত, যদি তার স্কুলটি হতো শিশুবান্ধব; তবে ছুটি গল্পের শেষটা হয়তো অন্যরকম হতো। এত্তগুলো ‘যদি’র আবর্তে ঘুরপাক খেতে খেতে ফটিক এমনভাবে পাঠকের সামনে উপস্থিত হয়েছে যে, তার সকল অবাধ্য আচরণকে উপেক্ষা করে পাঠক কেবল তার প্রতি স্নেহধারাই বর্ষণ করতে পারে।

    জ্বর হওয়ার পর সে পালালো বাড়ি থেকে। এই পালানোর দুই ধরনের ব্যাখা হতে পারে। নিগৃহীত, উপেক্ষিত হতে হতে ফটিকের মধ্যে একসময় জন্ম নেয় অভিমান আর হীনমন্যতা, অসুস্থ হয়ে সে অন্যের বিরক্তি আর উপেক্ষার শিকার হতে চাইলো না। আবার কন্ডাক্ট ডিসঅর্ডারের একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ হচ্ছে, বাড়ি থেকে পালানো। সেই আচরণজনিত সমস্যার কারণেও সে পালাতে পারে বাড়ি থেকে। পুলিশ যখন তাকে ফিরিয়ে আনে তখন তার অঘোর জ্বর। প্রলাপের মধ্যেও তার সব কষ্টের স্মৃতি। সে বলতে থাকে, “মা, আমাকে মারিস নে মা। সত্যি বলছি, আমি কোনো দোষ করিনি।” অর্থাৎ পরিবার এবং চারপাশ ফটিকের প্রতি মোটেই সদয় ও সঠিক আচরণ করেনি, প্রলাপের মধ্যেও তার শংকা! তার আচরণকে সংযত করতে পারে এমন স্নেহ আর নিয়মের মধ্যে না বেধে কেবল শাস্তির মধ্যদিয়ে তাকে সংশোধনের চেষ্টা করা হয়েছিল।

    কোলকাতায় আসবার সময় জাহাজের খালাসিরা যেভাবে নদীর পানির গভীরতা মাপার চেষ্টা করতো সেভাবে ফটিকও তার প্রলাপে “এক বাঁও মেলে না। দো বাঁও মেলে — এ — এ না”  বলে  যাচ্ছে। জীবনের গভীরতা মাপার এই চিত্রকল্প রবীন্দ্রনাথ যতটা সহজভাবে আমাদেরকে জানিয়েছেন, তাতে পাঠক কিন্তু শেষমেশ একটা অপরাধবোধেই ভোগে এবং নিজের কাছে স্বীকার করতে বাধ্য হয় যে ফটিকের প্রতি সুবিচার হয়নি। একটি বয়োসন্ধিকালের কিশোরের আত্মিক সংকট, পিতৃহীন অবস্থায় প্রতিকূল পরিস্থিতিতে তার বেড়ে উঠার ধারা, আচরণের অসংগতিগুলো ‘ছুটি’ গল্পে  এমনভাবে চিত্রিত হয়েছে যে, মানসিক স্বাস্থ্যসেবায় কর্মরত সকলের জন্য গল্পটি হতে পারে অবশ্যপাঠ্য।

    আমাদের চারিদিকে অসংখ্য ফটিক এখনো জীবন নদীর গভীরতা মাপতে মাপতে ক্লান্ত, দ্বিধাগ্রস্থ। তাদের কেউ নিমজ্জিত বয়োসন্ধির সংকটে আবার কেউ আক্রান্ত কন্ডাক্ট ডিসঅর্ডারে। দায়িত্বটুকু অভিভাবকদের। বয়োসন্ধির সংকটকে এড়িয়ে যাবার সুযোগ নেই। এই সময়ে বাবা-মায়ের আচরণ হতে হবে ভারসাম্যমূলক, গুণগত সময় দিতে হবে সন্তানকে, সবার আগে নিজের সন্তানকে বুঝতে হবে, বিদ্রূপের বদলে গঠনমূলক সমালোচনা তাকে মানসিকভাবে দৃঢ় করে তুলতে পারে, সিদ্ধান্ত গ্রহণে তার অংশগ্রহণ তাকে করতে পারে আত্মবিশ্বাসী। আর সন্তানের মধ্যে যদি কন্ডাক্ট ডিসঅর্ডারের লক্ষণ দেখা যায়, তবে কেবল কড়া শাসন তাকে পরিবর্তিত করতে পারবে না, দরকার স্নেহ আর নিয়মের সম্মিলনে বিশেষ সেবা, আর প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ বা ওষুধ সেবন। রবীন্দ্রনাথ তাঁর ফটিককে অনেক আগেই ছুটি দিয়ে ফেলেছেন। আমরা এত আগে আগে ছুটির ঘণ্টা বাজাতে চাইনা। আমাদের চারদিকের ফটিকেরা বেড়ে উঠুক সফল মানুষ হিসেবে, স্নেহের স্পর্শে তাদের জীবন পরিণত হোক ভালোবাসা আর মানবিকতায় সমৃদ্ধ মনিময় ইন্দ্রপুরীতে।

    আহমেদ হেলাল
    মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ,
    জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, ঢাক


    প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব। মনেরখবর-এর সম্পাদকীয় নীতি/মতের সঙ্গে লেখকের মতামতের অমিল থাকতেই পারে। তাই এখানে প্রকাশিত লেখার জন্য মনেরখবর কর্তৃপক্ষ লেখকের কলামের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে আইনগত বা অন্য কোনও ধরনের কোনও দায় নেবে না।

    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Reddit WhatsApp Telegram Email
    Previous Articleশিশুর বিকাশ : পর্ব-১
    Next Article ক্ষতিকর মাদক ‘ইয়াবা’: আগ্রাসন মোকাবেলায় প্রয়োজন সামগ্রিক প্রতিরোধ
    আহমেদ হেলাল

    Related Posts

    শিশুদের কেন এবং কিভাবে পরার্থপরতার প্রেরণা দেয়া যায়

    July 1, 2025

    সিদ্ধান্তহীনতা কাটিয়ে উঠতে মানসিক শক্তি বৃদ্ধির কৌশল

    May 4, 2025

    পরার্থপরতায় সমাজের উন্নতি

    April 30, 2025
    Leave A Reply Cancel Reply

    Top Posts

    অভিভাবকত্ব শুধুমাত্র লালন-পালনের নাম নয়, এটি একটি সুসংগঠিত প্রক্রিয়া

    June 30, 2025221 Views

    অতিরিক্তি হস্তমৈথুন থেকে মুক্তির উপায়

    July 25, 202121 Views

    সিদ্ধান্তহীনতা কাটিয়ে উঠতে মানসিক শক্তি বৃদ্ধির কৌশল

    May 4, 202518 Views

    অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ থেকে মুক্তির উপায়

    August 22, 202112 Views
    Don't Miss
    ফিচার July 1, 2025

    শিশুদের কেন এবং কিভাবে পরার্থপরতার প্রেরণা দেয়া যায়

    ডা. মাহবুবা রহমান এমবিবিএস, এমডি (চাইল্ড এন্ড অ্যাডোলেসেন্ট সাইকিয়াটি) রেজিস্ট্রার, মনোরোগবিদ্যা বিভাগ, মেডিক্যাল কলেজ ফর…

    অভিভাবকত্ব শুধুমাত্র লালন-পালনের নাম নয়, এটি একটি সুসংগঠিত প্রক্রিয়া

    সিদ্ধান্তহীনতা কাটিয়ে উঠতে মানসিক শক্তি বৃদ্ধির কৌশল

    সাইকিয়াট্রি বিভাগের মে মাসের বৈকালিক আউটডোর সূচি

    Stay In Touch
    • Facebook
    • Twitter
    • Pinterest
    • Instagram
    • YouTube
    • Vimeo
    আমাদের সম্পর্কে
    আমাদের সম্পর্কে

    প্রকাশক ও সম্পাদক:
    অধ্যাপক ডা. সালাহ্উদ্দিন কাউসার বিপ্লব
    মোবাইল : (+88) 018-65466594, (+88) 014-07497696
    ইমেইল : info@monerkhabor.com

    লিংক
    • মাসিক ম্যাগাজিন প্রাপ্তিস্থান
    • কনফারেন্স-সেমিনার-ওয়ার্কশপ
    • প্রেজেন্টেশন
    • জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট
    রিসোর্স
    • পরিচালনা পর্ষদ
    • মানসিক বিষয়ে সংগঠন
    • বিশেষজ্ঞ লোকবল
    • নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
    সোশ্যাল মিডিয়া
    • Facebook
    • YouTube
    • LinkedIn
    • WhatsApp
    © 2025 মনেরখবর সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
    • আমাদের সম্পর্কে
    • যোগাযোগ
    • গোপনীয়তা নীতি

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.