জীবনের পথে এগিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে পরিশ্রম করতে আমরা এটা ভুলে যাই যে, শারীরিক স্বাস্থ্যের সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখাটাও সমানভাবে জরুরী। আর এই মানসিক স্বাস্থ্য আমাদের আবেগ, মানসিক ও সামাজিক অবস্থার সঙ্গে সম্পর্কিত। যেকোনো একটি বই পাঠকের সুস্থতার ওপর প্রভাব ফেলে। সারাদিনের ব্যস্ততার পর মানসিক চাপ কমাতে ও মন প্রফুল্ল রাখতে বই পড়ার অধিক ফলপ্রদ আর কিছুই থাকতে পারে না।
শারীরিক অন্যান্য সমস্যার মতো মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত হলে সঠিক কাউন্সিলিং এবং চিকিৎসায় আরোগ্য লাভ করা যায়। তবে এর বিকল্প হিসেবে কাজ করতে পারে বই পড়া। সবচেয়ে ভালো প্রয়াস হতে পারে কোন সাহিত্যের বই খুঁজে বের করে পড়া। সঠিক ধরণের সাহিত্যের বই মানসিক চাপ কমিয়ে পুনর্জীবিত করে তুলতে সক্ষম। একটি নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে ভাবতে, মনকে সতেজ করে তুলতে সাহায্য করতে পারে কোন সাহিত্যের বই।
সাহিত্যিকদের ভাষ্যমতে, একটি বই মূলত নীতিতে অটল থাকার বার্তা দেয়, এর ফলে নানা ধরণের মানসিক পীড়া থেকে মুক্তি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মনও পরিশুদ্ধ হয়। বই পড়ার মধ্য দিয়ে জীবনের সকল উত্থান-পতনের মধ্যেও ভারসাম্য বজায় রাখা সম্ভব। লেখকদের দাবি গল্প, উপন্যাস, সাহিত্য সব হতাশা বা বিষাদ থেকে পালাতে সাহায্য করে।
ইংরেজিতে যাকে বলে এস্কেপিজম বা পলায়নবাদ। বই বা কোনো উপন্যাস পড়ার মধ্য দিয়ে এর সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকার কারণে কোনো দৃশ্যপট নিজেই তৈরি করা যায়। বিষয়টি অন্য যেকোনো শিল্পের চেয়ে তীব্রতর এবং শক্তিশালী।
বই তার কাঠামোগত বিশ্লেষণের সাহায্যে অগোছালো মনে শৃঙ্খলা আনতে পারে। বইয়ের কোন অতিপ্রাকৃত গল্পের সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করতে পারলে, মনে থাকা নানা বিষয়ের সমাধানের চেষ্টা করা যায়। একটি শক্তিশালী সাহিত্য বাস্তব জীবনে রাখতে পারে একটি গুরুত্বপূর্ণ ইতিবাচক ভূমিকা। প্রিয় উপন্যাসগুলো বার বার পড়লে বিশেষ ধরণের বিবলিওথেরাপি বা পুস্তকীয় চিকিৎসা সরবরাহ হয়। চিকিৎসাটির পরিপ্রেক্ষিতে বলতে গেলে ‘টেস অব হ্যা ডার্বারভিল’ বইটির কথা চলে আসে। এর লেখকের মতে, বইটির মাধ্যমে মনের স্তরগুলোতে বিচরণের সুযোগ হবে।
ফলে সচেতন হওয়ার পাশাপাশি সৃষ্ট সমস্যা সমাধানের জন্য মনোবল জোগাতে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে বই পড়া। বই পড়া মানসিক উপকার তো করেই সাথে লেখালেখির ক্ষেত্রেও এর প্রভাব বেশ লক্ষণীয়। লেখালেখি মানসিক ট্রমা বা আবেগ বের করতে দুর্দান্তভাবে কাজে আসে। মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়নে বই পাঠকের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলতে সহায়ক। তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্য সঙ্কট মোকাবেলায়ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে সাহিত্য।
লিখেছেনঃ কামরুল ইসলাম ইমন
স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে