মহামারীর দুঃসময়ে সঙ্গীর প্রতি সহনশীল দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করবে

মহামারীর দুঃসময়ে সঙ্গীর প্রতি সহনশীল দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করবে

কোভিড-১৯ মহামারী আমাদের সবার স্বাভাবিক জীবনই বদলে দিয়েছে। এই অস্বাভাবিক অবস্থার প্রভাব আমাদের শরীর ও মনের উপর অত্যন্ত বিরূপ। আর এই বিরূপ অবস্থার প্রভাব পড়ছে আমাদের ব্যক্তিগত ও সামাজিক সম্পর্কের ওপর। সম্পর্ককে সুদৃঢ় রাখতে এখন আমাদের আগের থেকে আরও বেশী সহনশীল হতে হবে। তাহলেই সম্পর্ক থাকবে মজবুত এবং সফল।

যখন কেউ অতিরিক্ত মানসিক চাপ, যেমন, কোভিড-১৯ মহামারীর এই দুঃসহ সময়ের মধ্যে থাকে, তখন অনেকের মনে হতেই পারে এ সময়ে ব্যক্তিগত সম্পর্ক গুলোর প্রতি অধিক যত্নশীল হওয়ার প্রয়োজন নেই।

কিন্তু নতুন নতুন গবেষণায় উঠে এসেছে যে, অতিরিক্ত মানসিক চাপ সম্পর্ককে সংকীর্ণ করে দেয়। এই সংকীর্ণতা দূর করতে হলে সম্পর্ক নিয়ে আরও মনযোগী এবং কাছের মানুষদের সাথে আরও সহনশীল আচরণ করতে হবে। অর্থাৎ, নিজের মানসিক স্থিতির সাথে সাথে অন্যদের মানসিক স্থিতিকেও গুরুত্ব দিতে হবে এবং তাদের সুখ, দুঃখ, ভালোলাগা, মন্দ লাগাকে উপেক্ষা করা চলবেনা।

সম্পর্কের অন্য পাশে থাকা মানুষ গুলো যখন ভাল থাকে, আমাদের মনও প্রফুল্ল থাকে। এতে মানসিক ভাবে আমরা চাপ মুক্ত থাকার অনুপ্রেরণা পাই। তাই অন্যদের প্রতি সহনশীল হয়ে যখন তাদের ভালোলাগা, মন্দলাগার গুরুত্ব দিয়ে তাদের ভাল রাখার প্রচেষ্টা করা হয়, আমাদের মানসিক চাপও কিছুটা কমে। এতে করে সম্পর্কের উপর প্রতিবেশ পরিস্থিতির বিরূপ প্রভাবও হ্রাস পায়। এই দৃষ্টিভঙ্গি আমাদের সবাইকে কোভিড ১৯ মহামারীর এই দুঃসময় মোকাবেলায় সহায়তা করবে।

অনেকের মাঝে এমন ধারণা থাকে যে সে মনে করে তাকে ভালো রাখার দায়িত্ব তার সঙ্গীর বা অপর জন তার দায়িত্ব পালন করলেই সে তার কর্তব্য পালন করবে। কিন্তু এটা ভুলে গেলে চলবেনা যে আদান-প্রদান মেপে কোন সম্পর্কই হয়না। আর করোনা মহামারীর এই দুঃসময়ে আমাদের সবাইকেই সবার পাশে দাঁড়াতে হবে। মানসিক ভাবে কাছের মানুষদের সুস্থ রাখতে তাদের সাহস যোগাতে হবে এবং সম্পর্ককে সুন্দর করতে হবে। একে অপরকে শারীরিক ও মানসিক সহায়তা প্রদান করলে দুঃসময়েও আমাদের প্রতিটা দিন সুন্দরভাবে অতিবাহিত হবে এবং আমাদের সম্পর্কের দৃঢ়তার কাছে কোভিড-১৯এর মত মহামারী পরাজিত হবে।

মানসিক চাপ যখন চরমে পৌঁছায় এবং প্রতিটা দিন সে মানসিক অশান্তি নিয়েই অতিবাহিত করা প্রায় বাধ্যতামূলক হয়ে যায়, তখন কাছের মানুষগুলোর মনের ইচ্ছা অনিচ্ছা বুঝবার আগ্রহ বা প্রয়োজনকে মানসিক চাপ বাড়িয়ে দেওয়ার আরেকটি কারণ বলে মনে হয়। এতে মানসিক অশান্তি আরও বেড়ে যায়!

তাই মহামারীর মত দুঃসময়ে সম্পর্ক বজায় রাখা বা সম্পর্কের উন্নতি করা বেশ কঠিন বা অসম্ভব মনে হতে পারে। কিন্তু এটা একদম ভুল ধারণা। একজন ব্যক্তির শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা অনেকটাই তার কাছের মানুষদের মানসিক ও শারীরিক সহায়তার উপর নির্ভরশীল। একে অপরের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার প্রতি খেয়াল রাখলে দুঃসময়েও মানসিক প্রশান্তি অনুভব করা যায়। মনের বল অক্ষুণ্ণ থাকে। তাই সম্পর্ক সুন্দর রাখার প্রতি সচেষ্ট হলে এবং কাছের মানুষদের প্রতি সহনশীল হলে  নিজের এবং অন্যদের সবারই মানসিক চাপ কমিয়ে সুন্দর অনুভূতির বিকাশ ঘটানো যায়।

সূত্র: https://www.psychologytoday.com/us/blog/fulfillment-any-age/202006/try-some-tenderness-make-your-relationship-stronger

অনুবাদ করেছেন: প্রত্যাশা বিশ্বাস প্রজ্ঞা

স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে

Previous articleকর্পোরেট সাইকোলজি নিয়ে মনের খবর টিভিতে নতুন আয়োজন মঙ্গলবার রাতে
Next article“মনোকথা” বইমেলায় অধ্যাপক ডা. মো. নিজাম উদ্দিন এর লেখা বই

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here